নজরবন্দি ব্যুরো: শীতকাল এলেই মনটা ঘুরু ঘুরু করে। এই সময় অনেকেই লম্বা ছুটি নিয়ে দূরে কোথাও ঘুরতে চলে যায়। কারও পছন্দ পাহাড়, কারও সমুদ্র আবার কেউ প্রকৃতির টানে জঙ্গলের ঠিকানায় যায়। কিন্তু আপনার হাতে বেশিদিন সময় নেই। এক দুদিনের জন্য কাছাকাছি কোথাও যেতে চাইছেন। তবে আপনার জন্য খোঁজ রইল এমনই এক জায়গার। যেখানে গেলে দেখতে পাবেন অনেক ঐতিহাসিক নিদর্শন।
আরও পড়ুন: বাংলার ২ জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র, বাজেটের মধ্যেই কাটিয়ে আসুন ছুটি
আজকের গন্তব্য মোগলমারি। পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এই জায়গাটি। বিশ্ববাসীর কাছে একটি পরিচিত নাম এটি। এই জায়গার ইতিহাস নিয়ে নানান জনের নানান মত রয়েছে। কেউ বলেন, রাজা বিক্রমাদিত্যের কন্যা সখীসেনার অধ্যয়নের জায়গা ছিল এটি। আবার কেউ বলেন, মোগলমারীর এই প্রত্নক্ষেত্র একটি পাঠশালা বলে মনে করা হয়। পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন স্থলের মধ্যে মোগলমারি অন্যতম। যা আজ সখীসেনার পাঠশালার সকল জনশ্রুতির দ্বিধা দ্বন্দ্বকে দূরে সরিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতে অবস্থিত অন্যান্য বৃহৎ ও প্রাচীন বৌদ্ধ স্থাপত্যগুলির মধ্যে এটি অন্যতম।
চিনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাং তার গ্রন্থ সি ইউ কি’ তে বঙ্গদেশের চার রাজ্যের বিশেষ বর্ণনা করেছিলেন, যেগুলির মধ্যে অন্যতম পুন্ড্রবর্ধন, সমতটী, কর্ণসুবর্ণ এবং তাম্রলিপ্ত। এই তাম্রলিপ্ত রাজ্যে ১০টি বৌদ্ধবিহার ও এক-হাজার বৌদ্ধ সন্নাসীর উপস্থিতির কথা উল্লেখ করেছিলেন। মোগলমারি ব্যতিত এখনও পর্যন্ত তাম্রলিপ্ত সন্নিহিত অঞ্চলে কোন বৌদ্ধবিহার-ই আবিষ্কৃত হয়নি। পর্যটকদের কাছে এই জায়গার আকর্ষণ বাড়াতে বৌদ্ধ বিহারের সংরক্ষণ ও সাজিয়ে তোলার কাজ হয়েছে। ইতিহাসের খোঁজে পর্যটনের নতুন দিশা হবে দাঁতনের এই মোগলমারি বৌদ্ধবিহার। শীতের ছুটিতে এই ঠিকানায় চলে আসতে পারেন।
দাঁতনের মোগলমারিতে ২০০৩-৪ সাল নাগাদ খননকার্য শুরু হয়। নকশাযুক্ত ইট, বৌদ্ধ ভিক্ষু বা সন্ন্যাসীদের বাসস্থানের কুঠুরি, ত্রিরথ কাঠামো যুক্ত নকশা পাওয়া গিয়েছিল। গবেষকদের প্রাথমিক অনুমান, স্থানটিতে মন্দির বা গর্ভগৃহ ছিল। কয়েক বছর পর ফের খননকার্য শুরু হলে পূর্ব ও পশ্চিম দিক থেকে নকশাযুক্ত ইট দ্বারা সুসজ্জিত দেওয়াল, স্টাকো পলেস্তারা যুক্ত দেওয়াল, বৌদ্ধ ভিক্ষুদের থাকার কুঠুরি, এমনকি খণ্ড বিখণ্ড বৌদ্ধ মূর্তি উদ্ধার হয়।
কলকাতার কাছেই ইতিহাসের খনি, একদিনের ছুটিতেই ঘুরে আসুন
