নজরবন্দি ব্যুরোঃ আমার মা আর কতদিন ফুটপাতে থাকবে? এই প্রশ্ন সামনে রেখে অবস্থানে বসেছেন হবু শিক্ষকদের ছেলে মেয়েরাও। মেধা তালিকাভুক্ত শিক্ষক পদপ্রার্থীরা দুর্নীতি, স্বজনপোষণ, মেধা তালিকার পেছনের ব্যক্তিকে নিয়োগ প্রদান, গেজেট অনুসারে মেধাতালিকা প্রকাশ না করা, সিট আপডেট না করে নিয়োগ করা, এমনকি পাশ করতে পারেনি অর্থাৎ মেরিট লিস্টে নাম নেই এমন ব্যক্তিকে নিয়োগ প্রদান করার মত গুরুতর অভিযোগের ভিত্তিতে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে কলকাতার মেও রোডের ধারে দীর্ঘ ২৯ দিন ব্যাপী অনশন ও অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি গ্রহণ করে।
আরও পড়ুনঃ সরকার কমালেও কমছে না মদের দাম, হতাশ বাংলার সুরাপ্রেমীরা
অভিযোগ, সেই অনশন কর্মসূচির ২৯ তম দিনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় কে সঙ্গে নিয়ে অনশন মঞ্চে উপস্থিত হয়ে মাইক্রোফোন হাতে সবাইকে নিয়োগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু তারপর দীর্ঘ দুই বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও সেই প্রতিশ্রুতির আজও বাস্তবায়ন হয়নি।
এদিকে চাকরিপ্রার্থীরা মহামান্য আদালতের অনুমতি নিয়ে ২০২১ সালের ৩১ শে জানুয়ারি থেকে ৪ ঠা আগস্ট পর্যন্ত টানা ১৮৭ দিন রিলে অনশন ও অবস্থান বিক্ষোভ দেখায় কলকাতার সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কের ৫ নম্বর গেটের পাশে। কিন্তু প্রবল বর্ষণের মধ্যে ৪ ঠা আগস্ট আদালতের অনুমতিতে চলা সেই আন্দোলনকে নির্মমভাবে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় বিধান নগর থানার পুলিশ।
পরবর্তীকালে এই বছর অর্থাৎ ২০২১ সালের ১০ ই আগস্ট বিকাশ ভবনে বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান শুভঙ্কর সরকার দীর্ঘ মিটিংয়ের পর সমস্ত সাংবাদিকদের সামনে বিকাশ ভবন থেকে শিক্ষা মন্ত্রী ও স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন যে ৪০ দিনের মধ্যে মেধা তালিকাভুক্ত নবম দশম ও একাদশ দ্বাদশ শ্রেণীর সমস্ত শিক্ষক পদপ্রার্থী কে নিয়োগ দেওয়া হবে।
SSC: আমার মা আর কতদিন ফুটপাতে থাকবে? মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন হবু শিক্ষক কন্যার!
কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি আজও বাস্তবায়িত হলো না। তাই নবম দশম ও একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক পদপ্রার্থীরা আবারও আদালতের অনুমতি নিয়ে কলকাতায় গান্ধী মূর্তির পাদদেশে অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। নবম থেকে দ্বাদশ স্তরের মেধা তালিকাভুক্ত শিক্ষক পদপ্রার্থীদের এই তৃতীয় দফার (প্রথম দফা প্রেসক্লাবের সামনে ২৯ দিন, দ্বিতীয় দফা সল্টলেকে ১৮৭ দিন) আন্দোলন ৩৪ দিনে পড়ল। স্কুল সার্ভিস কমিশনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করতে গিয়ে আজ প্রত্যুষা মৈত্র, লক্ষী পাল, তনয়া বিশ্বাস নিজেদের বাচ্চাদের নিয়ে এসে অসুস্থ হয়ে পড়লেন গান্ধী মূর্তির পাদদেশে।
কলকাতা পুলিশ তাদের এস.এস.কে.এম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। আন্দোলনকারী প্রত্যুষা মৈত্রের কোথায় তিন দফায় মোট ২৫০ দিন ধরে স্কুল সার্ভিস কমিশনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আমরা ক্লান্ত। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর কাছে একটাই অনুরোধ ‘আমাদেরকে প্রেসক্লাবের সামনে দেওয়া আপনার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করুন।’ শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু মহাশয়ের কাছে তাদের অনুরোধ গত ১০ আগস্ট বিকাশ ভবন থেকে আপনি নবম দশম ও একাদশ দ্বাদশ শ্রেণীর মেধা তালিকাভুক্ত সকল শিক্ষক পদপ্রার্থীদের ৪০ দিনের মধ্যে নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা বাস্তবায়িত করুন। চাকরিপ্রার্থী ইলিয়াস বিশ্বাস ও মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন যে, ‘তারা বার বার প্রতিশ্রুতি পাচ্ছেন, কিন্তু ফলশ্রুতি পাচ্ছেন না। তাই এবিষয়ে তারা খুব দ্রুত মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান।