নজরবন্দি ব্যুরো: একদিকে যখন দেশজুড়ে বচ্চন দের করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর শুনে চলছে হাঁ হুতাশ, হচ্ছে যজ্ঞ তখন অন্যদিকে বুক ভাসিয়ে কাঁদছেন সরকারি চরম অব্যাবস্থার কবলে পড়া সদ্য সন্তানহারা মা-বাবা। বেডের অভাব নেই, সরকারি ভাঁওতা’র কারনে মারা পড়ল শুভ্রজিৎ।
তিন-তিনটি হাসপাতাল ফিরিয়ে দিয়েছিল শ্বাসকষ্টে ছটফট করতে থাকা উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নেতাজী পল্লীর বাসিন্দা শুভ্রজিৎ চট্টোপাধ্যাকে। আর এই গড়িমসির জন্য মৃত্যু হয়েছে এই যুবকের। মৃত্যুর পরেই একাধিক হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন পরিবারের লোকজন। একমাত্র সন্তান যাতে চিকিৎসাটুকু পায়, সে জন্য শেষমেশ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে এসে আত্মহত্যা করার হুমকি দেন বাবা-মা। অনেক পরে ভর্তি হলেও, প্রাণে বাঁচেনি শুভ্রজিৎ।
সিতাই বিধানসভা কেন্দ্রে গেরুয়া শিবিরে বড় ধাক্কা; ১৬ টি পরিবার নাম লেখাল তৃণমূলে
কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি করতে হলে বাবা মা কে আত্মহত্যার হুমকি দিতে হবে কেন! রাজ্য সরকার তোঁ প্রতিদিন দামাদা বাজিয়ে চলে রাজ্যে পর্যাপ্ত বেড রয়েছে। যদি সোজাসাপ্টা হিসেবে দেখাহয় রাজ্য সরকারের আজকেও তথ্য বলছে রাজ্যে সেফ হোম রয়েছে ১০৬ টি। যার মধ্যে বেড রয়েছে ৬ হাজার ৯০৮ টি এবং সেখানে ভর্তি রয়েছেন মাত্র ২৪৭ জন! তাহলে কি এই তথ্য শুধুই জনগন কে ভাঁওতা দেওয়ার জন্যে? নাকি বেড আছে কিন্তু করোনা আক্রান্তদের সেখানে সুযোগ দেওয়া হয় চাকরি বাকরির মতই নেতাদের সুপারিশে? উঠছে একাধিক প্রশ্ন। বেডের অভাব নেই, সরকারি ভাঁওতা’র কারনে মারা পড়ল শুভ্রজিৎ?
এই সব প্রশ্ন যখন উঠছে তখন খুনের অভিযোগ দায়ের করলেন মৃতের মা শ্রাবণী চট্টোপাধ্যায়। আজ, রবিবার বেলঘড়িয়া থানায় লিখিত এফআইআর করে মা। তিনি দাবি করেন, ঠাণ্ডা মাথায় খুন করা হয়েছে তাঁর ১৮ বছরের ছেলেকে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বেলঘড়িয়া মিডল্যান্ড নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃতের পরিবারের তরফে। তাঁদের অভিযোগ, ইচ্ছে করে ভর্তি নেওয়া হয়নি তাঁদের ছেলেকে। চিকিৎসায় গাফিলতি করা হয়েছে।
কর্তব্য এড়িয়ে গেছে মিডল্যান্ড-সহ তিন তিনটি হাসপাতাল। তার উপরে মাত্র ৫ মিনিটে ছেলের লালারস সংগ্রহ করে জানান হয়েছে, ছেলে কোভিড পজিটিভ। এই ৫ মিনিটের মধ্যে কি করে এই পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পাওয়া সম্ভব? সেই সঙ্গে প্রশ্ন তুলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী যেখানে বারবার পুলিশের সাহায্য নিতে বলছেন, সেখানে প্রশাসন তাদের দায়িত্ব পালন করে নি। তাঁদের আরও অভিযোগ, স্বাস্থ্যভবনের হেল্পলাইনে বার দশেক ফোন করেও লাভ হয়নি। কলকাতা পুলিশের হেল্পলাইনে ফোন করেও কোনও উত্তর পাওয়া যায় নি।