নজরবন্দি ব্যুরোঃ নিরাপদ ও কার্যকর রাশিয়ার ভ্যাকসিন। বিশ্বকে সুখবর দিল দ্য ল্যান্সেট। কোভিডের টিকাতে বাজিমাত করল পুতিনের রাশিয়া। রাশিয়ার তৈরি টিকা স্পুটনিক ভি নিরাপদ ও কার্যকর। মেনে নিলেন ইওরোপ ও আমেরিকার বিজ্ঞানীরা। রাশিয়ার টিকার প্রথম দুই পর্যায়ের ট্রায়াল রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে বিখ্যাত ব্রিটিশ জার্নাল দ্য ল্যান্সেটে। পাশাপাশি এখবর জানিয়েছে লন্ডনের বিখ্যাত সংবাদ মাধ্যম মেল অনলাইন। উল্লেখ্য ব্রিটিশ জার্নাল দ্য ল্যান্সেট অক্সফোর্ডের টিকার প্রাথমিক ট্রায়ালের পরেও একই প্রতিক্রিয়া দিয়েছিল।
আরও পড়ুনঃ মদন মিত্রের স্টিং অপারেশন। দুই বিজেপি কর্মী সহ গ্রেফতার তিন জন।
নিরাপদ ও কার্যকর রাশিয়ার ভ্যাকসিন। রাশিয়ার ভ্যাকসিন আত্মপ্রকাশ করার পরে হু–এর ডিরেক্টর জেনারেল জানিয়েছিলেন, সব পর্বের পরীক্ষা শেষ না হলে কিছু বলা যাবে না। বিশের একাধিক প্রভাবশালী দেশ আপত্তি করেছিল। তবে শেষ পর্যন্ত ধোপে টিকল না কোন কিছুই। এখন আমেরিকা, ব্রিটেনের বিজ্ঞানীরাও মেনে নিচ্ছেন যে স্পুটনিক ভি–এর পরীক্ষার ফল ‘উৎসাহজনক’ ও তা টিকা হিসাবে ‘নিরাপদ’।
প্রসঙ্গত, পুরো বিশ্বকে চমকে দিয়ে গত ১১ই আগস্ট টিকা বাজারে নিয়ে আসে রাশিয়া। রাশিয়ায় শুরু হয়েছে সমস্ত রকমের প্রস্তুতি। কোভিড-১৯ কে রুখতে সক্ষম তাঁদের ভ্যাকসিন বলে দাবি জানিয়েছে রাশিয়া। গামালোয়া ন্যাশানাল রিসার্চ সেন্টার অফ এপিডেমোলজি এন্ড মাইক্রোবায়োলজি এই ভ্যাকসিন বাজারে আনছে। জানা যাচ্ছে, এই ভ্যাকসিনটি সংক্রমণ আটকাতে পুরোপুরি সক্ষম। কিন্তু কীভাবে কাজ করবে এই ভ্যাকসিন? সে সম্পর্কেও বিস্তারিত তথ্য দিয়েছে রাশিয়া।
রাশিয়া জানিয়েছে তাঁদের ভ্যাকসিনের প্রয়োগে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হয়। ইতিমধ্যে বুরডেকো হাসপাতালে টেস্টও করা হয়েছে। গামালোয়া ন্যাশানাল রিসার্চ সেন্টারের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, করোনা যুদ্ধে প্রথম সারিতে থেকে যারা লড়াই করছেন তাঁদের সর্বপ্রথম এই ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। মস্কোর গ্যামলিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর আলেকজান্ডার গিন্টসবার্গ জানিয়েছেন, এই ভ্যাকসিন কিছু নিষ্প্রাণ পার্টিকলস তৈরি করবে। যা শরীরের অ্যাডিনো ভাইরাসের উপস্থিতির কারনে তৈরি হবে। এবং সেখান থেকেই তৈরি হবে করোনা মোকাবিলার অ্যান্টিবডি।
গ্যামলিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট জানিয়েছে তাঁদের ভ্যাকসিন সম্পূর্ণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াহীন। গ্যামলিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে ভ্যাকসিন দেওয়ার পর ভ্যাকসিন ধারকের শরীরে জ্বর আসতে পারে। যেহেতু এটি শক্তিশালী অ্যান্টিবডি তৈরি করতে কাজ শুরু করবে সেকারনেই আসতে পারে জ্বর। সাধারণ প্যারাসিটামল খেলেই এই জ্বর চলে যাবে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। সাহসী সিদ্ধান্ত নিলেন ভ্লাদিমির পুতিন। নিজের কন্যাকে ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ দিয়ে তিনি বিশ্ব কে বার্তা দেন এই টিকা কতটা নিরাপদ। আর এখন ইউরোপ এবং ব্রিটেনের বিজ্ঞানীরাও শিলমোহর দিলেন এই ভ্যাকসিনের কার্যক্ষমতায়।
আলেকজান্ডার গিন্টসবার্গ জানিয়েছিলেন তিনি নিজে ও তাঁর সংস্থার গবেষকরা প্রথম এই ভ্যাকসিন নেবেন। কিন্তু পরে সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হয়। প্রথম টিকা নেন রাষ্টপতির কণ্যা। এবার দেশের জনগন কে ভ্যাকসিনেশনের কাজ শুরু করবে রাশিয়া সরকার। অক্টোবরের মধ্যেই প্রত্যেকে পেয়ে যাবেন করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন বলে জানিয়েছে রাশিয়া সরকার। এখন দেখার রাশিয়া কত তাড়াতাড়ি এই ভ্যাকসিন বিশ্ববাজারের জন্যে খুলে দেয়। টিকার বিষয়টিকে রাশিয়া মহাবিশ্বে প্রথম মহাকাশযান পাঠানোর সাথে তুলনা করেছে।