দেশের নিরাপদতম শহর কলকাতা, অপরাধের শীর্ষে রাজধানী

নিজস্ব প্রতিনিধি, নজরবন্দি.ইন

নজরবন্দি ব্যুরো: ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর রিপোর্টে ২০২১ সালে দেশে প্রধান শহরগুলির মধ্যে সব থেকে নিরাপদ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিল কলকাতা। ২০২২ সালের জন্যও সেই তকমা ধরে রাখল । যদিও মহিলাদের সঙ্গে হওয়া অপরাধমূলক ঘটনার নিরিখে দেশে পশ্চিমবঙ্গ চতুর্থ। উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও রাজস্থানের পরেই। সার্বিক অপরাধের পাশাপাশি মহিলাদের সঙ্গে অপরাধের প্রশ্নেও চলতি বছরে দেশে শীর্ষস্থানে দিল্লি। মহিলাদের উপরে সব থেকে কম অপরাধের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে কোয়েম্বাটুরে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২০ বা ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে ভারতীয় দণ্ডবিধি মাফিক অপরাধের সংখ্যা কমেছে কলকাতায়। ২০২১ সালে যেখানে ১৩,০৬৭টি অপরাধের অভিযোগ নথিবদ্ধ হয়েছিল, সেখানে এ বার সেই সংখ্যা ১১,০৩৮। দিল্লির ক্ষেত্রে এই সংখ্যা ২ লক্ষ ৯৮ হাজার ৯৮৮টি। মুম্বইয়ে ৬৯,২৮৯টি এবং বেঙ্গালুরুতে ২৮,৬৬৬টি অভিযোগ নথিভুক্ত হয়েছে। প্রতি লক্ষ জনসংখ্যায় অপরাধের গড় হার সব থেকে কম কলকাতাতেই (৭৮.২)। জনসংখ্যার নিরিখে ছোট শহর আমেদাবাদ, পুণে, কোয়েম্বাটুর , সুরাতও অপরাধের হারে এগিয়ে। যেমন,

আরও পড়ুন: Share Market: ভারতীয় শেয়ার বাজারে নয়া ইতিহাস, রেকর্ড গড়ল সেনসেক্স

 

দেশের নিরাপদতম শহর কলকাতা, অপরাধের শীর্ষে রাজধানী
দেশের নিরাপদতম শহর কলকাতা, অপরাধের শীর্ষে রাজধানী

রিপোর্ট অনুযায়ী, কলকাতার জনসংখ্যা ১৪.১১ কোটি। সেখানে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে ১১,০৩৮টি। অর্থাৎ, প্রতি এক লক্ষ জনসংখ্যায় কলকাতায় অপরাধ হয়েছে ৭৮.২টি। কোয়েম্বাটুরে সব থেকে কম ৪৫৪২টি অপরাধের ঘটনা নথিবদ্ধ হলেও, ওই শহরের জনসংখ্যা মাত্র সাড়ে ২১ লক্ষ। অর্থাৎ, প্রতি লক্ষ জনসংখ্যায় অপরাধ কলকাতার প্রায় তিন গুণ। তবে চার্জশিট পেশের হারে কলকাতার (৮৮.১) থেকে এগিয়ে কোচি (৯৫.৯) ও কোঝিকোড় (৮৯.৪)। এনসিআরবি-র রিপোর্টে অবশ্য স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে যে, শুধুমাত্র এই পরিসংখ্যান বা রিপোর্টের ভিত্তিতে রাজ্যের সঙ্গে রাজ্যের কিংবা শহরের সঙ্গে শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির তুলনা করা যুক্তিযুক্ত নয়। কারণ, এই রিপোর্ট তৈরি হয় মূলত থানায় দায়ের হওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে। পুলিশ যদি কোনও ক্ষেত্রে অভিযোগ নথিভুক্তই করতে না চায়, তবে অভিযোগের সংখ্যা হয়তো কম হবে, কিন্তু তা সেখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সঠিক প্রতিফলন হবে না। এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ব্যাখ্যা, কিছু-কিছু রাজ্যে পুলিশ অভিযোগই গ্রহণ করতে চায় না। আবার অনেক রাজ্যে অপরাধ নথিভুক্ত করার ক্ষেত্রে পুলিশ অনেক বেশি ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়ে থাকে। তাই অপরাধের সংখ্যা বেশি মানেই সেখানে অপরাধপ্রবণতা বেশি, এমনটি ভাবা ঠিক নয়।

দেশের নিরাপদতম শহর কলকাতা, অপরাধের শীর্ষে রাজধানী

এ বার দেশের ১৯টি প্রধান শহরে (যেগুলির জনসংখ্যা অন্তত ২০ লক্ষ) অপরাধের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করা হয়েছে। অপরাধে শীর্ষে রাজধানী দিল্লি। সব থেকে মলিন সেখানে মহিলাদের নিরাপত্তার ছবিও। শুধু দিল্লিতেই মহিলাদের উপরে অপরাধের সংখ্যা ১৪,১৫৮টি। যার মধ্যে ধর্ষণের ঘটনা ১২০৪। রিপোর্ট অনুযায়ী, সারা দেশেই মহিলাদের উপরে সার্বিক অপরাধের ঘটনা ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে প্রায় ৪ শতাংশ বেড়েছে। ২০২১ সালে দেশে মহিলাদের উপরে অত্যাচারের ৪,২৮,২৭৮টি ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছিল। তা বেড়ে হয়েছে ৪,৪৫,২৫৬টি। দেখা যাচ্ছে, মহিলাদের উপরে নির্যাতনের এক বড় অংশ গার্হস্থ্য হিংসা (৩১.৪%)।
দেশে ২০২২ সালে ধর্ষণের ঘটনাও ঘটেছে ২৮,৫৪৫টি। আগের বারের তুলনায় প্রায় আড়াই হাজার বেশি। সব থেকে বেশি ধর্ষণের ঘটনা (৫,৩৯৯) নথিভুক্ত হয়েছে রাজস্থানে। দ্বিতীয় উত্তরপ্রদেশ। উদ্বেগজনক ভাবে দেখা যাচ্ছে, সারা দেশে প্রতি ঘণ্টায় গড়ে ৫১টি করে অভিযোগ দায়ের হচ্ছে শুধুমাত্র মহিলাদের সঙ্গে হওয়া অপরাধের কারণে। ২০২২ সালে কলকাতায় ধর্ষণের ১১টি ঘটনা ঘটেছে বলে নথিতে প্রকাশ। ধর্ষণের হারও সব থেকে কম। দিল্লি (১২০৪), জয়পুর (৪৯৭), ইন্দোরের (১৭৪) মতো শহরে ধর্ষণ ও ধর্ষণের হার অনেক বেশি। ধর্ষণের হারে দিল্লিকেও ছাপিয়ে গিয়েছে ইন্দোর ও জয়পুর।

দেশের নিরাপদতম শহর কলকাতা, অপরাধের শীর্ষে রাজধানী

দেশের নিরাপদতম শহর কলকাতা, অপরাধের শীর্ষে রাজধানী

সদ্য প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশেষ এবং স্থানীয় আইনে অপরাধের সংখ্যাও কলকাতায় তুলনায় কম। ২০২২ সালে কলকাতায় খুন হয়েছেন ৩৪ জন। যা অন্য শহরের তুলনায় কম। দুর্ঘটনার জেরে মৃত্যু হয়েছে ২১৭ জনের। দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার ১.৫ শতাংশ, তা-ও অন্য শহরগুলির থেকে কম। ভ্রূণ বা শিশুহত্যার মতো অপরাধ কলকাতায় নথিভুক্ত হয়নি। দিল্লি, মুম্বইয়ে এমন ঘটনা যথাক্রমে ৩২টি এবং ১৮টি। তবে মেয়েদের উপরে হামলার ঘটনা চেন্নাই, আমেদাবাদের থেকে কলকাতায় বেশি। আবার দিল্লি, মুম্বইয়ের তুলনায় কম। অপহরণের মতো অপরাধও দিল্লি, মুম্বইয়ের তুলনায় কলকাতায় নগণ্য। তবে এই নথিতে প্রধান শহরগুলিতে গোষ্ঠী বা সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের নথিতে সর্বত্র শূন্য লেখা। অর্থাৎ, এমন সংঘর্ষ কোথাও ঘটেনি বা নথিবদ্ধ হয়নি বলেই দাবি করা হচ্ছে।

Related News

Health

এক চুমুকেই বাড়বে জেল্লা, জানুন কী সেই মিরাক্কেল ড্রিংক

এক চুমুকেই বাড়বে জেল্লা, জানুন কী সেই মিরাক্কেল ড্রিংক

সুন্দর ত্বকের অধিকারিণী হতে কেনা চায়। সকলেই চায় তাদের দাগহীন, চকচকে, ফর্সা ত্বক হোক। কিন্তু সুন্দর ত্বক পাওয়া অতটাই সহজ নয়।
বাংলা বুঝতে অসুবিধা? সাঁওতালি ভাষা শিখে নেব, কাদের আশ্বাস দিলেন মমতা?

বাংলা বুঝতে অসুবিধা? সাঁওতালি ভাষা শিখে নেব, ঝাড়গ্রামকে আশ্বাস দিলেন মমতা

জঙ্গলমহলবাসীর উদ্দেশে মমতার বক্তব্য, ”বাংলা বুঝতে আপনাদের অসুবিধা হচ্ছে? আমি ধীরে ধীরে সাঁওতালি ভাষাটা শিখে নেব। অলচিকিটা একটু শক্ত আছে। তবে আমি শিখে নেব।” 
রিলস বানানোর উপরেও নিষেধাজ্ঞা কেদারনাথ-বদ্রীনাথ মন্দিরে

রিলস বানানোর উপরেও নিষেধাজ্ঞা কেদারনাথ-বদ্রীনাথ মন্দিরে

প্রথম ৬ দিনেই দেশ-বিদেশ থেকে ৩ লক্ষ ৩৪ হাজার ৭৩২ জন দর্শন করেছেন। আরও ২ লক্ষ ৭০ হাজার পুণ্যার্থী নিজেদের নাম রেজিস্টার করেছেন দর্শনের জন্য।
দেবাংশুর সমর্থনে তমলুকে মেগা রোড-শো অভিষেকের, শুভেন্দু-গড়ে জনপ্লাবন তৃণমূলের

দেবাংশুর সমর্থনে তমলুকে মেগা রোড-শো অভিষেকের, শুভেন্দু-গড়ে জনপ্লাবন তৃণমূলের

তমলুকের রাজ ময়দান থেকে হসপিটাল মোড় পর্যন্ত চলল রোড-শো। দু'পাশে ছিল জনতার ঢল। এই তমলুক, বর্তমান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর গড় হিসাবে পরিচিত। ফলে, এই কেন্দ্রে জেতা কিছুটা হলেও চ্যালেঞ্জ তৃণমূলের। 
১০ বছরে তিনি কেন মিডিয়ার সামনে আসেননি? অবশেষে উত্তর দিলেন প্রধানমন্ত্রী

১০ বছরে তিনি কেন মিডিয়ার সামনে আসেননি? অবশেষে উত্তর দিলেন প্রধানমন্ত্রী

আগে জনগণের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র উপায় ছিল সংবাদমাধ্যম কিন্তু এখন সোশাল মিডিয়ার দৌলতে সেখানেই সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়। এখন একজন ব্যক্তিকে যদি কোনও কিছু নিয়ে উত্তর দিতে হয়, তিনি মিডিয়া ছাড়াই তার মতামত স্পষ্টভাবে জানাতে পারবেন’।
মুখ্যমন্ত্রীর নামে কুরুচিকর মন্তব্য, অভিজিতকে শো-কজ করল কমিশন

মুখ্যমন্ত্রীর নামে কুরুচিকর মন্তব্য, অভিজিতকে শো-কজ করল কমিশন

দিন কয়েক আগে নির্বাচনের প্রচারসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কুরুচিকর ভাষায় আক্রমণ করেন কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি তথা তমলুকের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

Lifestyle and More...