নজরবন্দি ব্যুরোঃ ভালবাসার প্রকাশ ‘আদুরে কামড়’ -এ বিপদ? ব্রেন স্ট্রোক হয়ে মৃত্যু হয় ১৭ বছরের তরুণের! ভালবাসা থকবে আর সেখানে আদরের ছোঁয়া থাকবেনা তা কখনও হয়? অনেক প্রেমিক-প্রেমিকারা আদর করে একে অপরের গলায় কামড় দিতে পছন্দ করেন। সেই চরম ঘনিষ্ঠ মুহূর্তে আদরে কামড় দিয়েছিলেন প্রেমিকা, কিন্তু সেই কামড়ে অকালে প্রাণ গেল তরতাজা প্রেমিকের! পাশ্চাত্যে এই ‘আদরের দাগ’ পরিচিত ‘হিকি’ নামে। হিকির উদ্দেশ্য নিছকই উত্তেজনা এবং ভালবাসা প্রকাশ করা। কিন্তু এক বার সেই ভালবাসার কামড়েই মৃত্যু হয়েছিল এক প্রেমিকের।
আরও পড়ুনঃ পার্কস্ট্রিট স্টেশনে আত্মহত্যার চেষ্টা, বন্ধ মেট্রো পরিষেবা
হয়েছে কি? ২০১৬ সালের অগস্ট মাসে মেক্সিকো সিটির বাসিন্দা জুলিও তাঁর ২৪ বছর বয়সি বান্ধবীর সঙ্গে একটি মনোরম এবং রোম্যান্টিক সন্ধ্যা কাটান আর সেখানেই ক্ষণিকের উত্তেজনায় প্রেমিকের গলায় দাঁত বসিয়েছিলেন বান্ধবী, আর তার জেরে মস্তিষ্কে জমাট বেঁধে রক্ত, এরপরই মৃত্যু হয় ওই প্রেমিকের। মৃত প্রেমিকের নাম জুলিও ম্যাকিয়াস গঞ্জালেজ। শুক্রবার রাতে আচমকা স্ট্রোকে মৃত্যু হয়েছে মেক্সিকো সিটির বাসিন্দা বছর সতেরোর খুলিও ম্যাকিয়াস গঞ্জালেজ।
রাতে বাড়ি ফিরে পরিবারের সঙ্গে খাবার টেবিলে নৈশভোজে বসে হঠাৎই খিঁচুনি শুরু হয় জুলিও-র। পরিবারের সদস্যরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই খুলিওর সারা শরীরে খিঁচুনি দেখা দেয়। জরুরি কল পেয়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা দ্রুত বাড়িতে এসে পৌঁছান। কিন্তু হাসপাতালে রওনা হওয়ার আগেই নিথর হয় তরুণের দেহ। তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
ময়নাতদন্তের পরে চিকিৎসকদের দাবি, প্রেমিকার দেওয়া ‘আদুরে কামড়ে’ জুলিওর গলায় রক্ত জমাট বেঁধে গিয়েছিল। সেই জমাট বাঁধা রক্ত তরল রক্তের সঙ্গে বাহিত হয়ে মস্তিষ্কে পৌঁছনোর পরই জুলিওর ব্রেন স্ট্রোক হয়।
জুলিওকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি। চিকিৎসা চলাকালীনই তাঁর মৃত্যু হয়। চিকিৎসকরা জানান, ব্রেন স্ট্রোক হয়ে মৃত্যু হয়েছে জুলিওর। তাঁরা এ-ও জানান, প্রেমিকার থেকে পাওয়া হিকির কারণেই জুলিওর ব্রেন স্ট্রোক হয়েছে।
জুলিওর পরিবারের সদস্যরা তাঁর প্রেমিকাকেই এই মৃত্যুর জন্য দায়ী করেন। প্রেমিকা ইচ্ছা করে জুলিওর গলায় জোর করে কামড়ে দিয়েছিলেন বলেও দাবি করা হয়। জুলিওর মৃত্যুর খবর পেয়ে তাঁর প্রেমিকা শহর ছেড়ে পালিয়ে যান। নিউ ইয়র্ক সিটির লেনক্স হিল হাসপাতালের চিকিত্সক রবার্ট গ্ল্যাটারের মতে, ‘ঠিক ভাবে কামড় দেওয়া না হলে একটি হিকিও এক জন মানুষের প্রাণ কেড়ে নিতে পারে।’
গ্ল্যাটার আরও জানান, দীর্ঘ সময়ের হিকির কারণে ক্যারোটিড ধমনীর উপর সরাসরি চাপ পড়তে পারে। এর ফলে রক্তনালির দেওয়াল ছিঁড়ে যেতে পারে এবং রক্ত জমাট বেঁধে যেতে পারে। এই জমাট বাঁধা রক্ত মস্তিষ্কে গিয়ে ব্রেন স্ট্রোকের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
ভালবাসার প্রকাশ ‘আদুরে কামড়’ -এ বিপদ? ব্রেন স্ট্রোক হয়ে মৃত্যু হয় ১৭ বছরের তরুণের!
তবে এই প্রথম নয়, ২০১০ সালেও নিউজিল্যান্ডের এক জন ৪৪ বছর বয়সি মহিলা হিকির কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। এই ঘটনায় রক্ত জমাট বেঁধে মহিলার হৃৎপিণ্ডে চলে গিয়েছিল। আর এর ফলে তাঁর পক্ষাঘাত হয়।