নজরবন্দি ব্যুরোঃ বুধবার দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক সেরে এসে সুকান্ত মজুমদার জানালেন, ১০০ দিনের কাজে আরও কড়া নজর রাখবে বঙ্গ বিজেপি। ইতিমধ্যেই শোনা গেছে, রাজ্যের বকেয়া মিটিয়ে দেবে কেন্দ্র। বকেয়া অর্থের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আবার কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন রাজ্যের মন্ত্রী। অবশেষে গিরিরাজ সিং পাওনা অর্থ মিটিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এদিন রাজ্যের মন্ত্রীকে ফোন করেন। বিষয়টি মন থেকে একেবারেই মানতে পারছে না বঙ্গ বিজেপির নেতারা। তাঁদের জনপ্রতিনিধিদের নজরদারি করার জন্য চোখ কান খোলা রাখতে বলেছে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে বড়ো ইস্যু ১০০ দিনের টাকা।
আরও পড়ুনঃ গুজরাতে নতুন রেকর্ড গড়তে চলেছে বিজেপি, পিছিয়ে যাবেন মোদিও!
রাজ্যে বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা ৭০ এবং ১৮ জন সাংসদ। তাঁদের নজর রাখারই কথা। সুতরাং রাজ্যের আর্থিক তছ্রুপ আটকাতে বিজেপির নজরদারি করাকে ইতিবাচক ভাবেই গ্রহন করা হচ্ছে। কিন্তু পাল্টা প্রশ্ন তুলছেন রাজনৈতিক মহল। শুধু কী এই রাজ্যে পঞ্চায়েতের অর্থ তছনছ হয়েছে? তামিলনাড়ু তে আর্থিক ক্ষয় ক্ষতির পরিমান ২৪৫ কোটি। অন্ধ্রপ্রদেশে প্রায় ২৩৯ কোটির হিসাব মেলেনি। একই ভাবে বিহার ও ঝাড়খণ্ড ১২.৩৪ কোটি ও ৫১.২৯ কোটি টাকা হিসাব বহির্ভূত। এইভাবে গোটা দেশে ৯৩৫ কোটির মতো আর্থিক তছ্রুপ হয়েছে। ফলে বিজেপির দিকেও অভিযোগের তীর রয়েছে। এর মাঝে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন,“এখন টাকা দেবে বলছে। তাঁর কথায়, “বছরের শেষে টাকা দিয়ে লাভটা কী? অর্থবছর শেষ হয়ে যাবে, তার মধ্যে টাকা খরচ করা যাবে না। তখন তাঁরা বলবেন, আমরা দিলাম, ওরা কাজ করল না”।
গত জুলাই মাস পর্যন্ত একশ দিনের কাজ প্রকল্পে বাংলার পাওনা ছিল ৭১৩০ কোটি টাকা। এর মধ্যে কেবল মজুরি বাবদ পাওনা রয়েছে ২৮০০ কোটি টাকা। দীর্ঘদিন ধরেই ১০০ দিনের কাজের পাওনা অর্থ আটকে রেখেছে কেন্দ্র। তৃণমূলের অভিযোগ, অনেকদিন ধরেই রাজ্যের পাওনা অর্থ আটকাতে একাধিকবার কেন্দ্রকে চিঠি দেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। দিল্লির দ্বারস্থ হন সুকান্ত মজুমদার। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল রাজ্যে এসে সমীক্ষা করে বেশ কিছু গরমিল পান তাঁর ভিত্তিতে । কেন্দ্রের তরফে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়, হিসাব না মেটালে দেওয়া হবে না টাকা। কিন্তু এবার তদন্তে তেমন কিছু না মেলায় এবার বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে কেন্দ্র। মুখ্যমন্ত্রীর হাজিরার পর জটিলতা কেটেছে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু হাল ছাড়ছে না বঙ্গ বিজেপি। সুকান্ত ও শুভেন্দু এবার দু’জনে একসঙ্গে গিরিরাজ সিংয়ের সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে বড়ো ইস্যু ১০০ দিনের টাকা, কেন নজরদারির হুঁশিয়ারি সুকান্তদের
এদিন সুকান্ত জানান, পঞ্চায়েতস্তরে ১০০দিনের কাজের টাকা নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে তা প্রমাণিত। অনেক পঞ্চায়েত প্রধান অর্থ ফেরতও দিয়েছেন। রাজ্যকে পাওনা অর্থ দিলে তাঁদের আপত্তি নেই। কিন্তু সেই টাকা যাতে হাত ঘুরে তৃণমূল নেতাদের হাতে না যায় সেই আবেদন করতেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কাছে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রর পাঠান অর্থ দিয়ে পঞ্চায়েত ভোটের খরচ তুলবে রাজ্যের শাসকদল। সেই বিষয়ে সতর্ক করতেই গিরিরাজ সিংয়ের সঙ্গে দেখা করবেন বলে দাবি বিজেপির রাজ্য সভাপতির।