নজরবন্দি ব্যুরো: সোনার বাংলা গড়তে এবার ‘ভিক্ষাং দেহি্’ মন্ত্রের জপ করতে চলেছেন জেপি নাড্ডা। বর্ধমানের এক গ্রামে বাড়ি বাড়ি হাত পাতবেন বিজেপি-র এই শীর্ষনেতা। চাল-ডাল তো নেবেনই, সঙ্গে কৃষকদের বাড়ি থেকে সব্জি নিয়েও ঝোলায় ভরবেন। ভোটব্যাঙ্ক বাড়াতে সাধারণ মানুষের বাড়িতে ভোজনের রীতি আগেই দেখিয়েছেন বিজেপি নেতারা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে নাড্ডা— সকলেই সেই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। এ বার দেখা যাবে জনসংযোগের নতুন কৌশল, ‘ভিক্ষাং দেহি’।
আরও পড়ুন: এবার বরানগরে বিজেপি নেতার বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চলার অভিযোগ, উত্তেজনা
বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি মাঝেমধ্যেই প্রকাশ্যে ‘মুষ্টিযোগ’-এর কথা বলে থাকেন। অর্থাৎ, ক্ষমতায় এলে অত্যাচারী পুলিশদের তাদের জায়গা দেখিয়ে দেওয়া হবে বা তৃণমূল একটা মারলে তাঁরা পাল্টা দু’টো মারবেন ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু নাড্ডা হাঁটছেন একেবারে ভিন্নপথে। শুধু বাড়ি বাড়ি যাওয়াই নয়, বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশ, সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গেও দলের নেতা-কর্মীদের যোগাযোগ করতে হবে নির্বাচনের আগে। সেইমতো কর্মসূচি নিচ্ছেন নাড্ডাও। গত ডিসেম্বরে বঙ্গ সফরে এসে প্রথমদিন কলকাতায় বস্তিবাসীদের সঙ্গে এবং দ্বিতীয়দিন ডায়মন্ডহারবারে মৎস্যজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন নাড্ডা। এ বার তাঁর এবং তাঁদের লক্ষ্য কৃষক।
বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি নাড্ডার শনিবার বঙ্গসফরে আসার কথা। তিনি একটি সমাবেশ করবেন পূর্ব বর্ধমানের দাঁইহাটে। সেখানেই নিজে ভিক্ষা চেয়ে রাজ্যে শুরু করবেন এক নতুন কর্মসূচি। ‘বাড়ি বাড়ি মুষ্টি’ নামে ওই কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবেই ভিক্ষাগ্রহণ। রাজ্য বিজেপি সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত যা ঠিক হয়েছে, তাতে কাটোয়ার দাঁইহাটে জগদানন্দপুর গ্রামের পাঁচ কৃষক পরিবারে যাবেন নড্ডা। সেখান থেকে ভিক্ষাসংগ্রহের পরে এক কৃষকের বাড়িতেই দ্বিপ্রাহরিক পিত্তরক্ষা করবেন। নতুন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নাজেহাল কেন্দ্রীয় সরকার। প্রবল সমালোচিত বিজেপি। এমনই এক পরিস্থিতিতে বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। আর সেই নির্বাচনে রাজ্যে কৃষিপ্রধান জেলা পূর্ব বর্ধমান থেকেই কৃষকদের কাছে টানার নতুন কর্মসূচির সূচনা হতে চলেছে। তবে নাড্ডা একাই ভিক্ষা করবেন না।
বিজেপি-র কাটোয়া সাংগঠনিক জেলার সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষ জানিয়েছেন, এটা সূচনা। এর পর এই কর্মসূচি চলতে থাকবে। ভিক্ষার চাল-ডাল-সব্জি নিয়ে কী হবে? তারও পরিকল্পনা করেছে বিজেপি। কৃষ্ণের কথায়, ‘‘নাড্ডাজি বাড়ি বাড়ি গিয়ে এক মুষ্ঠি করে যে চাল-সব্জি ইত্যাদি সংগ্রহ করবেন, তা জমিয়ে রাখা হবে। দলের অন্যান্য নেতা-কর্মী পরে ওই কাজ চালিয়ে যাবেন। এর পরে গ্রামে গ্রামে ‘সহভোজ’ হবে।’’
সোনার বাংলা গড়তে ‘ভিক্ষাং দেহি’ রণকৌশল নিল গেরুয়া শিবির, ‘সহভোজ’ পরিকল্পনার ব্যাখ্যা করে কৃষ্ণ বলেন, ‘‘বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংগ্রহ করা চাল-সব্জি দিয়ে রান্না করে বিজেপির উদ্যোগে হবে পিকনিক। গ্রামের সকলে একদিন এক সঙ্গে খাওয়াদাওয়া করবেন। সেটা কোথায় কবে হবে, তা এখনও ঠিক না হলেও শনিবার নাড্ডার সফর থেকেই ‘মুষ্টিভিক্ষা’ শুরু হয়ে যাবে। ইতিমধ্যে তার প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছে কাটোয়া বিজেপি। আগামিদিনে রাজ্যের অন্যান্য কৃষিপ্রধান এলাকাতেও এই কর্মসূচি শুরু করতে চায় বিজেপি।