নজরবন্দি ব্যুরোঃ শুভেন্দুর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করলেন তারই নিরাপত্তারক্ষীর স্ত্রী! পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন সুপর্ণা কাঞ্জিলাল চক্রবর্তী নামক এক মহিলা। সুপর্না অভিযোগ করেছেন শুভেন্দু অধিকারীর নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন তাঁর স্বামী প্রয়াত শুভব্রত চক্রবর্তী। তিনি প্রায় ৬-৭ বছর শুভেন্দু অধিকারীর নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে কাজ করতেন। এবং নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে কাজ করার সুবাদে কাঁথিতে থাকতেন।
আরও পড়ুনঃ ভুয়ো টিকা কাণ্ডে তদন্ত শুরুর পথে ED, ফের রাজ্য বনাম কেন্দ্র সংঘাতের সম্ভাবনা।
ভালভাবেই স্বামী এবং ২ সন্তানকে নিয়ে দিন কাটছিল সুপর্নার। কিন্তু তারপরেই আসে সেই ভয়ঙ্কর দিন। সুপর্নার অভিযোগ গত ১৩/১০/২০১৮ তে প্রতিদিনের মতই তাঁর স্বামী সকাল ১০টা নাগাত ফোনে জানান বাড়ি ফেরার কথা। কিন্তু আকস্মিক ভাবে সুপর্নার জা ফোন করে ১১ টা ২০ নাগাত তাঁকে দ্রুত বাড়ি আসতে বলেন। বাড়ি এসে সুপর্না শোনেন তাঁর স্বামী হাসপাতালে ভর্তি! ঘটনার আকস্মিকতায় হকচকিয়ে যান তিনি।
খবর পেয়ে দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছায় শুভব্রতর দুই দাদা এবং অন্যান্য আত্মীয়রা। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন ভাই গুলিবিদ্ধ। শুভেন্দু অধিকারীর নির্দেশে তাঁকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার ব্যাবস্থা হয়েছে। কিন্তু সময় অতিবাহিত হতে থাকে। অনেক অপেক্ষার পর এসে পৌঁছায়। যখন গুলিবিদ্ধ শুভব্রত বাবুকে কলকাতার অ্যাপেলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়ে তখন সন্ধ্যে ৭টা বেজে গিয়েছে।
শুভেন্দুর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ, FIR দায়ের করলেন তারই নিরাপত্তারক্ষীর স্ত্রী! এখানেও রাখাল
কার্যত বিনা চিকিৎসায় পড়েথাকা গুলিবিদ্ধ শুভব্রত চক্রবর্তী পরের দিন(১৪/১০/২০১৮) ৫টা নাগাত মারা যান। সুপর্নার অভিযোগ অনেক ভেবেও এটা বুঝতে পারিনি আমার স্বামী কিভাবে গুলি বিদ্ধ হলেন। তাছাড়া শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যের দাপুটে মন্ত্রী, তা সত্বেও তারই মরনাপন্ন নিরাপত্তা রক্ষীর জন্যে কেন অনেক দেরীতে অ্যাম্বুলেন্স এল!
সুপর্নার দাবি শুভেন্দু অধিকারী শুধু পূর্ব মেদিনীপুর জেলা নয়, রাজ্যের অন্যতম প্রভাবশালি ব্যাক্তি তাই ভয়ে মুখ খুলতে পারিনি। এখন পরিস্থির পরিবর্তন হয়েছে। তাই আমি আমার স্বামীর মৃত্যুর বিচার চাই। সুপর্নার লিখিত অভিযোগ শুভেন্দু অধিকারী ছাড়া আরও এক ব্যাক্তির নাম পাওয়া গিয়েছে ‘রাখাল বেরা‘!! যে রাখাল ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছে চাকরি দেওয়ার নাক করে আর্থিক প্রতারনা কাণ্ডে।
সুপর্নার অভিযোগ পোস্ট মর্টেমের সময়, শুভব্রত বাবুর দাদা চিকিৎসকদের বলেন “আমার ভাই এই কাজ করতে পারেনা!” তখন চিকিৎসকরা পোস্ট মর্টেম করতেই রাজি হননি! সেই সময় আসরে উপস্থিত হন জনৈক রাখাল বেরা। সাফ জানিয়ে দেন ভাসুর অর্থাৎ শুভব্রতর দাদার বয়ান শুভেন্দু অধিকারীর পছন্দ হয়নি। পরে এক পুলিশ আধিকারিক এসে বয়ান দিলে পোস্ট মর্টেম হয়।
সুপর্না কাঁথি থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকের কাছে বিচার চেয়ে সত্য উদ্ঘাটনের জন্যে প্রার্থনা করেছেন। আইপিসি ৩০২ এবং ১২০বি ধারায় অভিযোগ দায়ের কথা হয়েছে। সহজ ভাষায় বলা চলে, শুভেন্দুর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করলেন তারই নিরাপত্তারক্ষীর স্ত্রী!
শুভেন্দুর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করলেন তারই নিরাপত্তারক্ষীর স্ত্রী! দেখুন সেই অভিযোগপত্র এবং FIR কপি।