নজরবন্দি ব্যুরোঃ দরকারে পাই – সরকারে চাই। বেকারত্ব থেকে দূর্নীতি, ফেরাতে হাল ফিরবে লাল? রাজ্যের ক্ষমতায় নেই দীর্ঘদিন। ভোটের পাশাপাশি কমেছে সদস্য সংখ্যাও। সেই সিপিআইএম তাক লাগিয়ে দিচ্ছে কোভিড ১৯ অধ্যুষিত বাংলায়। করোনা পরিস্থিতি যত খারাপ হয়েছে ততই মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে নিজেদের হৃত যায়গা পুনরুদ্ধার করেছে বামেরা। খবরের বাইরে থেকে সরাসরি সাধারণ মানুষের সংস্পর্শ্বে এসে নিজেদের হারানো জমি কিছুটা হলেও উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে সিপিআইএম। কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলায় মাঠে নামার পর সিপিআইএমের স্লোগান ছিল সরকারে নেই, দরকারে আছি। কিন্তু এই শ্লোগানের পরিবর্তন করা হল এবার।
আরও পড়ুনঃ রাজ্যে সুস্থতার হার বেড়ে প্রায় ৭৮ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যু ৪৮ জনের।
৭৭ সালের নির্বাচনে বামফ্রন্টের শ্লোগান ছিল, অন্ধকারের দিন শেষ হোক। এইভাবে ২০০৬ সাল অর্থাৎ বাম জমানার শেষ সফলতম শ্লোগান ছিল, কৃষি আমাদের ভিত্তি-শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ। এর পাঁচ বছর পরেই ২০১১ সালে পরাজিত হয় বামফ্রন্ট। এরপর ক্রমেই ভোট কমেছে, আসন কমেছে। কিন্তু এখন কিছুটা হলেও পরিস্থিতি পরিবর্তিত হয়েছে। করোনা আবহে সাধারণ মানুষ কে পরিষেবা দিয়ে আবার বহু জনগনের মনে যায়গা করে নিয়েছে সিপিআইএম। এই আবহেই ২০২১ নির্বাচন কেন্দ্রিক বামেদের নতুন শ্লোগান দরকারে পাই, সরকারে চাই।
করোনা সময়ের মধ্যে আমফান ঘুর্ণিঝড় অনেক টা গোদের ওপর বিষ ফোঁড়ার ভূমিকা নিয়েছে। রাজ্যের বহু এলাকায় মানুষ কার্যত অভুক্ত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। হুহু করে বাড়ছে কর্মহীনের সংখ্যা এবং তাঁর সাথে তাল মিলিয়ে আর্থিক অনটন। পরিস্থিতি যে এমন হতে পারে তাঁর আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিল সিপিআইএম। নবান্নে একাধিক বৈঠকে সিপিআইএম মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে অনুরোধ করেন সতর্ক হওয়ার জন্যে। যদিও সূর্য কান্ত মিশ্র বা সুজন চক্রবর্তীদের সব পরামর্শ শুনলেও তা বাস্তবায়িত করেন নি মুখ্যমন্ত্রী বলে অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে লকডাউন শুরুর সময় থেকে সিপিআইএম রাজ্য জুড়ে খুলে ফেলে অসংখ্য কমিউনিটি কিচেন বা নাগরিক রান্নাঘর। পাশাপাশি বহু এলাকায় বাড়িতে বাড়িতে রেড ভলেন্টিয়ার রা পৌঁছে দেয় ন্যুনতম ত্রান সামগ্রী।
দরকারে পাই – সরকারে চাই। বেকারত্ব থেকে দূর্নীতি, ফেরাতে হাল ফিরবে লাল? রাজ্য জুড়ে প্রায় হাজার টি কমিউনিটি কিচেন থেকে কয়েক লক্ষ মানুষ খাওয়ার পেয়েছেন এই চরম সংকটজনক পরিস্থিতিতে। পাশাপাশি আমফান বিধ্বস্ত সুন্দরবন কে নিজের ছন্দে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্যে এখনও লড়াই করে চলেছেন কান্তি গাঙ্গুলির মত প্রবীণ নেতারা। অন্যদিকে রাজ্য রাজনীতিতে বড় ভূমিকা নিতে চলেছে চাকরিপ্রার্থী এবং তাঁর পরিবারের ভোট। রাজ্য সরকারের ভ্রান্ত নীতি, স্বজনপোষন, অসঙ্গতি পূর্ণ নিয়োগ প্রায় সব ক্ষেত্রেই চরম ক্ষুব্ধ রাজ্যের লক্ষ লক্ষ চাকরি প্রার্থী।
এই পরিস্থিতিতে তাঁদের পাশে থেকে ক্রমাগত সুর চড়িয়েছেন সুজন চক্রবর্তী। সুজন চক্রবর্তী কিছুদিন আগেই ঘোষণা করেছেন, “বাংলার যুব সমাজ দয়ার দান চায় না। ভিক্ষাবৃত্তির শিকার হতে চায় না। চায় অধিকার। চায় মাথা তুলে বাঁচতে। কথা দিলাম, সরকারে ফিরে আগের মতোই স্বচ্ছতার সাথে প্রতিবছর নিয়ম করে SSC, টেট সহ বিভিন্ন পরীক্ষা এবং নিয়োগ আবার চালু করব আমরা। মাথা উঁচু করে বাঁচবে বাংলার যুব সমাজ।” তিনি আরও বলেন “শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে সরকারের এত ছল-চাতুরী কেন? বহু নিয়োগ আটকে। লক্ষাধিক তো বটেই। প্রাইমারি, আপার, মাধ্যমিক প্রত্যেক ক্ষেত্রেই।। শারীরশিক্ষা, কর্মশিক্ষা সহ অন্যান্য নিয়োগ বন্ধ কেন? সরকার তথ্য স্পষ্ট করুক।। মিথ্যাচার আর টাকার খেলা চলবে না। দ্রুত স্বচ্ছ নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।”