নজরবন্দি ব্যুরোঃ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে নগদ ৪৯ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা। সাথে প্রায় ৬ কেজি সোনা। এই মুহুর্তে দুজনেই জেলবন্দি। পার্থ চট্টোপাধ্যায় ইস্যুতে বেশ কিছুটা ব্যাকফুটে তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে সম্পত্তি বৃদ্ধি সংক্রান্ত মামলায় আরও বিড়ম্বনায় পড়েছে রাজ্যের শাসক দল। সেই কারনেই আজ সাংবাদিক সম্মেলন করে ‘পূর্ণ সত্য’ সামনে আনল তৃণমূল।
আরও পড়ুনঃ বিকিনি পরা ছবি দিয়ে বিপাকে সেই অধ্যাপিকা, ৯৯ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ!
২০১৭ সালে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হওয়া মামলায় বলা হয়, ২০১১ ও ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনের সময় তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা নির্বাচন কমিশনে যে হলফনামা জমা দিয়েছিলেন, তাতে দেখা যাচ্ছে, শাসক দলের একাধিক নেতার সম্পত্তি ২০১১’র পর থেকে কয়েকগুণ বেড়েছে। কোনও কোনও নেতার সম্পত্তি ১ হাজার গুণ পর্যন্ত বেড়েছে বলে অভিযোগ। কিন্তু সেখানে পূর্নাঙ্গ তালিকা দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছে তৃণমূল।
তৃনমূলের দাবি, বিষয়টি নিয়ে বিজেপি, বাম ও কংগ্রেস অর্ধসত্য প্রচার চালাচ্ছে। যে ১৯ জনের নাম গত সোমবার প্রকাশ্যে এসেছিল, তাঁদের মধ্যে ছ’জন— ফিরহাদ হাকিম, ব্রাত্য বসু, অরূপ রায়, শিউলি সাহা, মলয় ঘটক এবং জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেই বৈঠকেই ‘সম্পূর্ণ’ তালিকা তুলে ধরেন ব্রাত্য। তিনি অধীর চোধুরী, সূর্যকান্ত মিশ্র-সহ বিরোধী দলের একাধিক নেতার নাম ওই তালিকায় রয়েছে বলে দাবি করেন।
তৃণমূলের তরফে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, ‘নির্বাচনী হলফনামায় আয়-ব্যয়ের সব হিসাব দিয়েছি। আয়কর দফতর কোনও পদক্ষেপ করেনি। রোজগার করা, সম্পত্তি বাড়ানো অন্যায় নয়। এটা জনস্বার্থ মামলা নয়, রাজনৈতিক স্বার্থে করা মামলা’ । তৃণমূলের দিকেই একতরফা অভিযোগ কেন তোলা হচ্ছে প্রশ্ন তোলেন ফিরহাদ। ফিরহাদ বলেন, ‘‘মানুষের কাজ করার জন্য আমরা ব্যক্তিগত সুখ বিসর্জন দিয়েছি। মানুষের স্বার্থে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে লড়েছি। কিন্তু রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে আমাদের অপমান করা হচ্ছে।’’
সূর্যকান্তদের নাম প্রকাশ, মানুষের সেবায় ব্যক্তিগত সুখ বিসর্জন দিয়েছেন ব্রাত্যরা।
বিজেপি-কে টার্গেট করেও আক্রমণ শানান ববি, তাঁর কথায়, ‘অমিত শাহর ছেলে জয় শাহর সম্পত্তির পরিমাণ কত?’ সেই সঙ্গে বাম কংগ্রেসের দিকেও তাঁর আক্রমণের ফলা। ‘বিজেপির বি টিম হয়ে কংগ্রেস-সিপিএম আক্রমণ করছে। অর্ধেক তথ্য প্রকাশ করছেন কেন?’ সেই সঙ্গে তিনি স্বীকার করে নেন, ‘পার্থ যা করেছেন, তাতে আমরা লজ্জিত। কিন্তু তার মানে এটা নয় যে, তৃণমূলের সবাই চোর’
ব্রাত্য বসু উল্লেখ করেন, ২০২১ সালে জেতা বিজেপি প্রার্থীদের সম্পত্তির দিকেও নজর থাকবে। আয় বৃদ্ধির তালিকায় নাম রয়েছে ১৩ বাম নেতার । আয় বৃদ্ধির তালিকায় নাম রয়েছে ৯ কংগ্রেস নেতার । সম্পত্তি বৃদ্ধির তালিকায় নাম ৪ বিজেপি নেতারও । তৃণমূলের দাবি এই তালিকায় নাম আছে – অধীর চৌধুরী, আবু হেনা, সূর্যকান্ত মিশ্র, অশোক ভট্টাচার্য, কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়, নেপাল মাহাতো।