নজরবন্দি ব্যুরোঃ গত রবিবার ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানের ১০৫ তম পর্ব। আর এদিনের ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে কিন্তু মূল যে দু’টি বিষয়কে প্রধানমন্ত্রী বিশেষভাবে তুলে ধরলেন তা হল, চন্দ্রযান-৩ এর সাফল্য এবং জি-২০ সম্মেলন। আর রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ কিন্তু মনে করছে, চন্দ্রযান-৩ ও জি-২০ সম্মেলনকে বিজেপি তাঁদের নির্বাচনী প্রচারের অঙ্গ হিসাবেই ব্যবহার করছে!
আরও পড়ুনঃ নওশাদকে ‘জঙ্গি সংগঠনের নায়ক’ বলে দাগলেন শওকত, পাল্টা কী বললেন ISF বিধায়ক?
গত ২৩শে অগস্ট চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফলভাবে অবতরণ করেছে ভারতীয় চন্দ্রযান। আমেরিকা, রাশিয়া ও চিনের পর চাঁদের সাথে সরাসরি ভারতের নাম জুড়ে হয়েছে ‘ভারতচন্দ্র’! এরপরই ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর নয়া দিল্লির ভারতমণ্ডপমে প্রথমবারের জন্য জি-২০ সম্মেলন আয়োজন করে গোটা বিশ্বের নজর কেড়েছে ভারত। পর পর এই দুই কীর্তি যেমন দেশের রাষ্ট্রনায়ক হিসাবে নরেন্দ্র মোদীর মর্যাদাকে দ্বিগুণ করেছে তেমনই আবার লোকসভা নির্বাচনের আগে কেন্দ্রের লাগাতার একটা একটা পদক্ষেপ কিন্তু রাজনৈতিকভাবেও ততোধিক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

রবিবার ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে এসে মোদী জানিয়েছেন চন্দ্রযান-৩ সাফল্য পাবার পর দেশের নানান প্রান্ত থেকে অগুনতি চিঠি পেয়েছেন তিনি। মোদীর বয়ানে, “কোটি কোটি ভারতবাসী বিভিন্ন মাধ্যমে চন্দ্রযান অভিযানের সাক্ষী থেকেছেন। বিক্রমের অবতরণের সময় ইসরোর ইউটিউব লাইভে ছিলেন ৮০ লাখ মানুষ। ১৫ লাখ মানুষ মহাকুইজে অংশ নিয়েছেন।”
চন্দ্রযান-৩ ও জি-২০ সম্মেলন কি বিজেপির নির্বাচনী প্রচারের অঙ্গ?
অন্যদিকে, জি-২০ সম্মেলন প্রসঙ্গে মোদী বলেন, “ভারতমণ্ডপম এখন একজন ‘সেলিব্রিটি’! মানুষ ভারতমণ্ডপমের সঙ্গে সেলফি তুলছে। প্রাচীন ভারতে সিল্করুটের মাধ্যমে বাণিজ্য চলত। এখন কিন্তু একটি নতুন রুট তৈরি হল, সেটা হল ভারত-মধ্য প্রাচ্য-ইউরোপ। এই করিডর আগামী দিনে বিশ্বের ব্যবসা মহলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হতে চলেছে। ইতিহাস মনে রাখবে ভারতের মাটিতে ভারতের সভাপতিত্বে এই করিডর শুরু হয়েছিল।”
লোকসভা ভোটকে কেন্দ্র করে খুব দ্রুত প্রচারে নামতে চলেছে সমস্ত রাজনৈতিক দল। আর বিজেপির তরফে এবারেরও যে প্রধান প্রচারক প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীই হতে চলেছেন সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। সেক্ষেত্রে নির্বাচনের সময় যত এগোচ্ছে ততই কিন্তু বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ বাড়াচ্ছে কেন্দ্র সরকার। এর মধ্যে উপরি পাওনা চন্দ্রযান ৩ ও জি-২০ সম্মেলন। ভোটের প্রাক্কালেই আবার উদ্বোধন হবে রাম মন্দির। উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে একটি ক্রিকেট স্টেডিয়ামের শিলান্যাস সম্পন্ন হয়েছে দিন দুয়েক আগেই। একাধিক বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের চাকা গড়িয়েছে দেশব্যাপী।
তাহলে, বিরোধী শক্তি যতই জোটকে কেন্দ্র করে আশাবাদী হোক না কেন, নির্বাচনের আগে একের পর এক ‘চমক’ দিতে কিন্তু এতটুকুও কুণ্ঠিত নয় মোদী সরকার। আগামী কয়েক মাসে আবারও কিছু এরকম অকল্পনীয় কাজ করতে পারে কেন্দ্র সরকার বলে ইঙ্গিত দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে, সব সরকারি কর্মকাণ্ডকে নির্বাচনী প্রচারে ব্যবহার করলে দলগত রাজনৈতিক আদর্শ কি আগামী দিনে মূল্যহীন হয়ে পড়বে না? প্রশ্ন থাকছে।
