নজরবন্দি ব্যুরোঃ কিছুক্ষন আগেই তৃণমূল নেতা অনুব্রত মন্ডলকে আরও ৪ দিনের সিবিআই হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত। এদিকে অনুব্রতর বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগে সিউড়ির ২ ব্যবসায়ীর পর এবার মুখ খুললেন শান্তিনিকেতন মেডিক্যাল কলেজের কর্ণধার। মলয় পিট দাবি করেছেন, ‘তাঁর কাছে ২টি গাড়ি চেয়েছিলেন অনুব্রত। সেগুলির দাম মেটাননি তিনি’।
আরও পড়ুনঃ জামিনের আর্জি খারিজ, ২৪ অগস্ট পর্যন্ত CBI হেফাজতে কেষ্ট
কিন্তু কে এই মলয় পিট? সূত্রের খবর, বীরভূমে অনুব্রত মণ্ডল ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী হিসাবে পরিচিত মলয়বাবু। অভিযোগ রয়েছে, অনুব্রতর কালো টাকা খাটে মলয় পিটের সংস্থায়। সেই মলয় বাবুই এবার সুযোগ পেয়ে সওাল করলেন অনুব্রতর বিরুদ্ধে। এদিন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মলয় পিট বলেন, ‘অনুব্রত মণ্ডলের সহযোগিতা ছাড়া মেডিক্যাল কলেজ করতে পারতাম না। অনেকের অবদান আছে। তবে ওনার অবদান সব থেকে বেশি। ওনার প্রভাব, ওনার দাপট। তবে সেজন্য ঘুষও দিতে হয়েছে তাঁকে’
এদিন মলয়বাবু দাবি করেন, অনুব্রত মণ্ডলকে ২টি গাড়ি দিতে হয়েছে। তিনি বলেন, ‘তিন দিনের মধ্যে আমার সব কাজ মিটে যায়। অনুব্রত মণ্ডল ফোন করে সরকারি আধিকারিকদের বলেন আইনের মধ্যে হলে মলয়ের কাজটা করে দিও। এর পর তিনি যদি বলেন, আমাকে দুটো গাড়ি দিও।” মলয়ের প্রশ্ন, ‘আমি না বলতে যাব?’ এরপরে তাঁর সংযোজন, “আমি বললাম ২টো গাড়ি আছে, তাহলে ওই ২টো নিয়ে নেবেন? উনি বললেন, হ্যাঁ নিয়ে নেব। এর পর উনিও আমাকে পয়সা দেননি। আমিও চাইতে পারিনি।” মলয়বাবুর বক্তব্য, ‘কিছু পেতে গেলে কিছু দিতে হয়।’
শান্তিনিকেতন মেডিক্যাল কলেজের অনুমোদন পাইয়ে দেওয়ার ঘুষ, ২টি গাড়ি নেন অনুব্রত!
সূত্রের খবর, স্বাধীন চ্যারিটেবল ট্রাস্ট নামে একটি সংস্থার কর্ণধার মলয় পিট। সেই সংস্থার অধীনেই তৈরি হয়েছে শান্তিনিকেতন মেডিক্যাল কলেজ। এছাড়া রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অন্তত ১ ডজন বিএড কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে এই ট্রাস্টের নামে। অভিযোগ, এই ট্রাস্টে বেনামে খাটে অনুব্রত মণ্ডলের কালো টাকা। অনুব্রত মণ্ডল যে গাড়িগুলি করে বিভিন্ন জায়গায় যান তার মধ্যে ২টি নথিভুক্ত রয়েছে এই ট্রাস্টের নামে।
শুক্রবার বোলপুুরে অনুব্রতর চালকলে সিবিআই তল্লাশিতে গ্যারাজে দেখা গিয়েছে সেই বিলাসবহুল গাড়ি দু’টি। সঙ্গে দেখা যায় আরও একটি বিলাসবহুল গাড়ি। তৃতীয় সেই গাড়ির মালিক মুখ খুলেছিলেন শুক্রবার বিকেলেই। আর রাত পোহাতে মুখ খুললেন মলয়বাবু। সব মিলিয়ে অনুব্রতর বিরুদ্ধে একের পর এক ব্যাক্তি মুখ খুলছেন যারা তাঁর ভয়ে বন্ধুত্বের সম্পর্ক বজায় রাখতেন বলে জানা যায়।