নজরবন্দি ব্যুরো: আর মাত্র কয়েকদিনের অপেক্ষা। তারপরেই শুরু হবে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। নদীর ধারে কাশ ফুলে হালকা হালকা রেশ দেখা যাচ্ছে। মায়ের আগমণের প্রাক্কালে সকলেই নিচ্ছে প্রস্তুতি। কিন্তু অনেকেই দেবী দুর্গা সম্বন্ধে অনেক কিছু জানি না। যেমন অনেকেই জানেন না, দেবীর দশ হাতের অস্ত্রের সম্বন্ধে । দেবীকে কোন কোন দেবতা সেই অস্ত্র, কী কাজে প্রদান করেছিলেন। আসুন তাহলে জেনেনিন মা দুর্গার ১০ হাতে ১০ অস্ত্র ।
আরও পড়ুন: দুর্গা পুজোকে ‘অকালবোধন’ বলা হয় , কেন তা জানেন?
১.ত্রিশূল- পার্বতীকে ত্রিশূল দান করেছিলেন স্বয়ং মহাদেব। কথিত আছে, ত্রিশূলের তিনটি ফলার আলাদা আলাদা ব্যাখ্যা আছে। মানুষ তিনটি গুণ, সত্য, তমঃ, রজঃ প্রতীক ত্রিশূলের তিন ফলা। এই ত্রিশূল দিয়েই মহিষাসুরকে বধ করেন তিনি।
২. শঙ্খ- বরুণ দেব মহামায়াকে দিয়েছিলেন শঙ্খ। যার ধ্বনি মঙ্গলময়। শঙ্খের আওয়াজে স্বর্গ, মর্ত্য ও নরক জুড়ে থাকা সব অশুভ শক্তি ভীত ও দুর্বল হয়ে পড়ে।
৩. বজ্র- দেবীর হাতে বজ্র তুলে দিয়েছিলেন দেবরাজ ইন্দ্র। নিজের বজ্রের থেকে আরও একটি বজ্র সৃষ্টি করে তা মহামায়াকে দেন তিনি। মা দুর্গার হাতের অশনি দৃঢ়তা এবং সংহতির প্রতীক। এই দুই গুণের মাধ্যমেই জীবনে নিজের লক্ষ্যে পৌঁছতে সক্ষম হন মানুষ।
৪. গদা- যমরাজ দেবী দুর্গাকে দিয়েছিলেন দিয়েছিলেন গদা ৷ যা কালদণ্ড নামেও পরিচিত। এই অস্ত্র আনুগত্য, ভালবাসা এবং ভক্তির প্রতীক। সেই সঙ্গে শক্তিরও প্রতীক। দশভূজার একটি গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র হল গদা।
৫. তীর ধনুক- পবন দেব দুর্গাকে দেন তীর ধনুক। উভয়ই ইতিবাচক শক্তির প্রতীক। অসুরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সময় এই তীর ধনুক ব্যবহার করেন ভবানী।
৬. পদ্ম- দেবীর হাতের পদ্ম অসাধারন বার্তা দেয় সমাজকে। পাঁকের মধ্যে জন্মানো সত্ত্বেও পদ্মের রূপ মুগ্ধ করে সকলকে। তাই মায়ের হাতে পদ্ম থাকার অর্থ হল, মায়ের আশীর্বাদে যেন অসুরকূলও তাঁদের ভিতরের অন্ধকার থেকে মুক্ত হয়।
৭. তলোয়ার বা খড়্গ – খড়্গ বা তলোয়ারের ধার আসলে মানুষের মগজাস্ত্রের বুদ্ধির ধার। আর এই ধার দিয়েই যাতে সমাজের সমস্ত বৈষম্য ও অশুভকে মানুষ জয় করতে পারে। সেই বার্তাই বহন করেন মা দুর্গার হাতের খড়্গ বা তলোয়ার।
৮. তীর-ধনুক- মনুষ্য শরীরের ভিতরে যে অন্তর্নিহিত শক্তি রয়েছে তারই প্রকাশ ঘটে ধনুর টঙ্কারে। আর এই ধনু টঙ্কারের সঙ্গে জুড়ে থাকে তীর যা এই ধনুর টঙ্কারে প্রকাশিত শক্তির ভারকে বহন করে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত হানে। মানব দেহে সেই শক্তির সঞ্চার করতেই মা দুর্গা নিজের হাতে তীর-ধনুক বহন করেন।
৯.সাপ-শেষ নাগ দিয়েছিলেন নাগহার৷ বিশুদ্ধ চেতনার প্রতীক হল এই সাপ। চেতনার নিম্ন স্তর থেকে উচ্চ স্তরে প্রবেশ এবং বিশুদ্ধ চেতনার চিহ্ন এই সাপ।
মা দুর্গার ১০ হাতে ১০ অস্ত্র , কারা এবং কেন দিয়েছিল?
১০. চক্র- দেবীর হাতে বিভিন্ন অস্ত্রের সঙ্গে শোভা পায় চক্র। শ্রীবিষ্ণু মহিষাসুরকে বধ করার জন্য নিজের চক্র থেকে এই চক্রটি সৃষ্টি করে দুর্গাকে দান করেন। মায়ের হাতের এই অস্ত্র দৃঢ়তা এবং সংহতির প্রতীক। দেবী দুর্গার হাতে চক্র থাকার অর্থ ,সমস্ত সৃষ্টির কেন্দ্রে অবস্থান করছেন দেবী।