নজরবন্দি ব্যুরোঃ জাল ভ্যাকসিন তৈরি থেকে তা মোটা টাকায় বিক্রি। সাংসদ-অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তীর সন্দেহের পরেই পুলিশের জালে ধরা পরে ভুয়ো আইএএস অফিসার দেবাঞ্জন। তবে ধরা পরার পর তাঁর জালিয়াতির তালিকা তৈরি করতে গিয়ে চোখ কপালে উঠেছে তদন্তকারী অফিসারেরা। আর এবার উঠে আসছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। ফিরহাদ-সুদীপ-নয়নার সাথে একই ফলকে নাম রয়েছে এই জালিয়াতের!
আরও পড়ুনঃ সঙ্কটের মুখে উচ্চ-প্রাথমিকে নিয়োগ, ইন্টারভিউ লিস্টকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা হাইকোর্টে।
জাল টিকাকাণ্ডে ধৃত দেবাঞ্জন দেবের নাম রয়েছে তালতলার একটি ফলকে! তালতলার এক রবীন্দ্রমূর্তির ফলকে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়, তাপস রায়, অতীন ঘোষ, ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে দেবাঞ্জনের নাম রয়েছে ওই ফলকে। পরিচয় দেওয়া হয়েছে, রাজ্য সরকারের যুগ্ম সচিব হিসেবে! বৃহস্পতিবার ওই নাম মুছে দেওয়ার চেষ্টাও করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
ফিরহাদ-সুদীপ-নয়নার সাথে একই ফলকে ‘টিকা জালিয়াত’ দেবাঞ্জন! এই ঘটনার কথা জানতে পেরে নয়না বন্দ্যোপাধ্যায় তালতলা থানায় FIR দায়ের করেছেন। নয়নার কথায়, ‘ত্রিপুরা শংকর শাস্ত্রী লাইব্রেরির বাইরে যে ফলক রয়েছে, তাতে আমার নামের সঙ্গে ভুয়ো টিকাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তির নাম দেখে আমি অবাক হয়ে গিয়েছি। কারা ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিলেন, ওই লাইব্রেরির প্রেসিডেন্ট কে এগুলি জানা অত্যন্ত জরুরি। আমি আদৌ ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলাম না। কারা অনুমতি না নিয়ে আমার নাম ব্যবহার করল তা খতিয়ে দেখা হোক।’
উল্লেখ্য, একটি বেসরকারি সংস্থাকে টিকা বেচে লক্ষাধিক টাকা আদায় করেছিল দেবাঞ্জন। সম্প্রতি এমনই তথ্য উঠে এসেছে পুরসভার হাতে। সূত্রের খবর, ওই সংস্থাটি ১৭১ টি করোনার টিকা বিক্রি করেছিল দেবাঞ্জন। যার বদলে ১.১১ লক্ষ টাকা আদায় করা হয়েছিল। পুরসভা সূত্রে খবর, সম্প্রতি সরলা ডেভলপমেন্ট মাইক্রোফিনান্স প্রাইভেট লিমিটেড নামক একটি সংস্থাকে ১৭১ টি করোনা টিকা সরবরাহ করেছিল দেবাঞ্জন। যার বিনিময়ে সে আদায় করেছিল ১ লক্ষ ১১ হাজার ১৫০ টাকা। মঙ্গলবার ভুয়ো টিকাকরণের বিষয়টি ফাঁস হওয়ার পর এবং দেবাঞ্জনকে পুলিশ গ্রেফতার করার পরই এই রিপোর্ট আসে পুরসভার কাছে। পুরসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক পুরো প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য এ দিন সেই রিপোর্ট দেখান।
একই সঙ্গে জানান, এনইএফটি করে এই টাকা পাঠানো হয়েছে দেবাঞ্জনকে। এছাড়াও জানা গেছে দিন ১৫ আগে নাকি কসবার ভুয়ো অফিসে নিজের কর্মীদের বেশ কয়েকজনকে ‘স্পুটনিক-ভি’ ভ্যাকসিন দিয়েছিলেন দেবাঞ্জন। যদিও কোথা থেকে দেবাঞ্জন ওই ভ্যাকসিন পেলেন তা এখনও পরিষ্কার নয়। সেই টিকাগুলি আসল ছিল না নকল, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। কারণ, কলকাতায় এখনও পর্যন্ত খুব বেশি সংখ্যক স্পুটনিক এসে পৌঁছয়নি। একমাত্র দু-একটি জায়গায় রাশিয়ার এই ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। অন্তত ১০ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছিল বলে খবর। তদন্তকারী অফিসারেরা খুঁজে দেখছেন এর পেছনে আরও বড় মাথা জড়িয়ে রয়েছে কিনা।