নজরবন্দি ব্যুরোঃ মারন করোনা ফিরিয়ে আনছে যক্ষা। তাই করোনা আবহে নতুন পদক্ষেপ নিল রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। দেশজুড়ে ক্রমেই বেড়ে চলেছে করোনা ভাইরাসের দাপট। সংক্রমনের গতি বেড়েই চলেছে প্রতিদিন। হুহু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। সংক্রমনের হাত থেকে বাঁচতে পারেনি বাংলাও। একদিকে নতুন সংক্রমন আর মৃত্যুমিছিলের মাঝেই প্রতিদিন সুস্থ হয়ে উঠছেন হাজার হাজার মানুষ। কিন্তু সংক্রমণের গতি অব্যাহত থাকায় তেমন ভাবে কমছে না চিকিৎসাধীন আক্রান্তের সংখ্যা।
আরও পড়ুনঃ উচ্চ প্রাথমিক শুনানিতে অব্যাহত ঢিলেমি! আজ কি হল হাইকোর্টে?
মারন করোনা ফিরিয়ে আনছে যক্ষা। এই পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিল রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। চিকিৎসকরা আতঙ্কিত করোনা ভাইরাসের নতুন একটি প্রভাব নিয়ে। গবেষনা এবং পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে একটি ভয়ানক তথ্য। মারণ কোভিডের হাত ধরে মানবদেহে নিঃশব্দে বাসা বাঁধে ক্ষয়রোগ বা যক্ষ্মা। তাই করোনা থেকে মুক্তি পাওয়ার পর বাধ্যতামূলক যক্ষ্মা পরীক্ষা করতে হবে বলে নির্দেশ দিল স্বাস্থ্য দফতর।
স্বাস্থ্যভবন থেকে কয়েকদিন আগে এমনই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, সরকারি-বেসরকারি তথা রাজ্যের সমস্ত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্রে বাধ্যতামূলক ভাবে করোনা রোগীর যক্ষার টেস্ট করতে হবে। স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশে স্পষ্ট করে নির্দেশ দিয়ে বলা হয়েছে হাসপাতাল বা বাড়িতে থেকে করোনা রোগ মুক্ত হওয়ার ৭-২১ দিনের মধ্যে যক্ষ্মা পরীক্ষা করতেই হবে।
এদিকে রাজ্যে প্রতিদিন হাজার হাজার আক্রান্ত করোনা মুক্ত হলেও বেড়েই চলেছে করোনা ভাইরাসে নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। তবে আশার কথা হল সুস্থতার হার ব্যাপক ভাবে বেড়েছে রাজ্যে। অন্যদিকে রাজ্যে মৃত ৪ হাজার ৬০৬ জনের মধ্যে ৮৫.৫ শতাংশ মানুষ মারা গিয়েছেন যাদের মধ্যে কো মর্বিডিটি ছিল। সংখ্যাটা হল ৩ হাজার ৯৩৬ জন। অন্যদিকে শুধু মাত্র করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৬৭০ জনের। অর্থাৎ মোট মৃতের মাত্র ১৪.৫ শতাংশ। এবার জেনে নিন কোন বয়েসের কত মানুষ এখন পর্যন্ত মারা গিয়েছেন রাজ্যে।
৭৫ বছর বা তার বেশি বয়স্ক মানুষ যারা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৩.৪৪ শতাংশের, অর্থাৎ সুস্থ হয়ে উঠেছেন প্রায় ৮৬ শতাংশের বেশি। একই ভাবে ৬১ থেকে ৭৫ বছর বয়স্ক যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৬.২৫ শতাংশের। অর্থাৎ সুস্থ হয়েছেন ৯৩ শতাংশের বেশি আক্রান্ত। ৪৬ থেকে ৬০ বছর বয়স্ক যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২.১০ শতাংশের। অর্থাৎ সুস্থ হয়েছেন প্রায় ৯৮ শতাংশ বেশি আক্রান্ত। ৩১ থেকে ৪৫ বছর বয়স্ক যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ০.৪৫ শতাংশের।
অর্থাৎ সুস্থ হয়েছেন ৯৯.৫৫ শতাংশ আক্রান্ত। ১৬ থেকে ৩০ বছর বয়স্ক যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ০.১৭ শতাংশের। অর্থাৎ সুস্থ হয়েছেন ৯৯.৮৩ শতাংশ আক্রান্ত। ০ থেকে ১৫ বছর বয়স্ক যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ০.১৮ শতাংশের। অর্থাৎ সুস্থ হয়েছেন ৯৯.৮৬ শতাংশ আক্রান্ত। অন্যদিকে সার্বিক ভাবে রাজ্যে এখন পর্যন্ত যত মহিলা আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১.৫৬ শতাংশের। পাশাপাশি যতজন পুরুষ আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২.১৫ শতাংশের।