রাজ্যে স্কুল খোলার সম্ভাবনা শেষ, অনিশ্চিত শিক্ষক নিয়োগ! করোনা ৩.০ #Editorial
রাজ্যে স্কুল খোলার সম্ভাবনা শেষ, অনিশ্চিত শিক্ষক নিয়োগ! করোনা ৩.০ #Editorial

অর্ক সানা, সম্পাদক(নজরবন্দি): শিক্ষাঙ্গনের কফিনে শেষ পেরেকটাও পড়ে গেল এবার। পরিস্থিতি বলছে আপাতত স্কুল কলেজ খোলার কোন সম্ভাবনাই নেই রাজ্যে। কারন? করোনা ভাইরাস এবং অবশ্যই পড়ুয়াদের সুরক্ষা দান! গোড়া থেকেই আমাদের রাজ্য তথা ভারত জুড়ে করোনা মহামারীর সাথে সব থেকে তাল মিলিয়ে যদি কেউ চলছে তা হল শিক্ষা দীক্ষা। আপাতচোখে রাজ্যের দিকে তাকালে সব কিছুকেই সচল দেখা যায়, শুধু ধুলো জমছে স্কুল কলেজের বেঞ্চে।

আরও পড়ুনঃ এখানে ক্লিক করে পড়তে পারবেন নজরবন্দির সমস্ত সম্পাদকীয়।

আসলে কমবয়সী পড়ুয়ারা যদি করোনা আক্রান্ত হয়, তাহলে রাজ্যের ভবিষ্যৎ সঙ্কটে পড়বে। সেই চিন্তায় ঘুম আসেনা সরকারের। স্কুল বন্ধ রাখার সময় তাঁরা ভুলে যান করোনা হল মানব বাহিত রোগ। বাড়ির বড়রা দিব্বি বাইরে থেকে ঘরে বয়ে এনে দিতে পারেন করোনা ভাইরাস কে। পড়ুয়াদের আক্রান্ত হওয়ার জন্যে স্কুলে কষ্ট করে যাওয়ার কোন দরকার নেই। কারন অফিস কাছারি, মাঠ ঘাট, বাজার হাট, ট্রেন মেট্রো, শপিং মল – মদ দোকান সবই খোলা।

এদিকে পুজোয় আমরা সারারাত ধরে ঠাকুর দেখেছি, ঘন্টার পর ঘন্টা লাইন দিয়ে ঘেমে নেয়ে প্যান্ডেল হপিং করছি, ৫ দিনে ১০০ কোটি টাকার মদ গিলেছি। সরকার প্রত্যেক পুজো কমিটিকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদাও দিয়েছে এই মরা বাজারে। বাঙালির বড় উৎসব বলে কথা। আমরা কদিন আগে জনসভায় গেছি, মিছিল করেছি। কিন্তু মাথায় আমাদের একটা চিন্তা ছিল পড়ুয়াদের বাঁচাতে হবে তাই খুলিনি স্কুল। তবে স্কুল খোলেনি তো কি হয়েছে, মাধ্যমিক উচ্চ-মাধ্যমিকে পরীক্ষা না দিয়েও সবাই পাশ করেছি, ভুরি ভুরি নাম্বার পেয়েছি যে!

রাজ্যে স্কুল খোলার সম্ভাবনা শেষ

রাজ্যে স্কুল খোলার সম্ভাবনা শেষ, অনিশ্চিত শিক্ষক নিয়োগ! করোনা ৩.০ #Editorial
রাজ্যে স্কুল খোলার সম্ভাবনা শেষ, অনিশ্চিত শিক্ষক নিয়োগ! করোনা ৩.০ #Editorial

এরাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী আছেন একজন, যদিও তিনি নামেই শিক্ষামন্ত্রী। তাঁর কোন সিদ্ধান্ত নেই। নাটক – চলচ্চিত্র নিয়েই থাকতে পারতেন কেন যে শিক্ষামন্ত্রী হয়েছেন তা তিনিই ভাল বলতে পারবেন। যাই হোক, যিন সব কিছুই দেখেন, সেই মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন পুজোর পর কোভিড পরিস্থিতি দেখে খোলা হবে স্কুল। আর দিন তিনেক আগে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, করোনা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নেবেন স্কুল খোলার। বলতে গেলেন কেন সেটাই প্রশ্ন! নাও বলতে পারতেন… সব সিদ্ধান্তই তো মুখ্যমন্ত্রীই নেন। ব্রাত্যমন্ত্রী থাকতে হয় আছেন।

এদিকে হুহু করে বাড়ছে করোনা, রাজ্যে ফেরানো হচ্ছে কনটেইন্মেন্ট জোন, ফিরছে নাইট কার্ফুও। ৭ দিনে দ্বিগুণ হয়েছে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা। মজার কথা হল যারা ডাবল ডোজ নিয়ে ফেলেছেন তাঁদের সিংহ ভাগ আক্রান্ত হচ্ছেন করোনায়। এই পরিস্থিতিতে স্কুল খুলবে? বালাই ষাট, পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হতে দেওয়া যায় নাকি? নাম্বার দিয়ে দেওয়া হবে সময় মত। অনলাইনে ক্লাসকরার জন্যে ট্যাব তো আছেই। আর শিক্ষক নিয়োগ? কি দরকার শিক্ষকের, স্কুল না খুললে শিক্ষক নিয়োগ করে বসিয়ে বসিয়ে মাইনে দেবে কেন সরকার! তার থেকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাক রাজ্য!

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে অনুরোধ, স্কুল খুলুন। শিক্ষক নিয়োগ করুন। আপনি পারেন না এমন কিছু নেই। ব্রাত্যদের নাহয় ব্রাত্যই রাখলাম। লাখো পড়ুয়া, হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থী তাকিয়ে রয়েছে আপনারই দিকে। সঠিক সিদ্ধানই নেবেন, ভরসার চোখে তাকিয়ে এই বিশ্বাস রাখি।