নজরবন্দি ব্যুরো: ছেঁড়া চটি পায়ে যে ছেলেটা কলকাতায় পা রেখেছিল, সে জানে অভাব কি!আজকের নায়ক কিন্তু হতে পারতো খলনায়ক, হয় নি কারন সে জানে লড়াই কি!সে জানে লড়াই করে কি ভাবে ফিরে আসা যায়। আজকের দামি শামি আসামী হত, যদি না চোয়াল শক্ত করে লড়াই করে ফিরে আসতো। ভারত হারলে শামিকেই দাঁড় করানো হত চোখাচোখা বিশেষণের সামনে।
আরও পড়ুনঃ ৭ উইকেট নিয়ে বিশ্বকাপে একাধিক রেকর্ডের মালিক হলেন শামি
বিশ্বকাপ শুরুতে প্রথম এগারোয় জায়গা হয়নি, কিন্তু সুযোগ আসতেই প্রমান করেছেন নিজেকে। একটা ম্যাচে ৭টা উইকেট! সব বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি এমন এক প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে উঠে এসেছিলেন। সেই তিনিই এখন বলকে কথা বলান। তাঁর বলের সিম পজিশন দেখে ঈর্ষান্বিত হতে পারেন পড়শিরা। প্রতিপক্ষের ওপেনারদের ফেরাতে, মিডল অর্ডারকে ধাক্কা দিতে বা ম্যাচের কঠিন সময়ে উইকেট তুলে নিতে তিনিই অধিনায়কের ভরসা।
তিনি মহম্মদ শামি। ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মার তুরুপের তাস। অথচ এই শামিরই তো জায়গা হচ্ছিল না প্রথম একাদশে। সবাই মাঠে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন আর তাঁকে মাঠের বাইরে বসে থাকতে হচ্ছে। মাঠের বাইরে থেকে ভেসে এসেছে অনেকের চাপা কণ্ঠস্বর, কেন জায়গা পাচ্ছেন না শামি? কেন? কেন? শামি উত্তর দেননি। চোয়াল চেপে অপেক্ষা করছিলেন সঠিক সময়ের। সুযোগ এসেও গেল।
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চোট পেলেন হার্দিক পাণ্ডিয়া। হার্দিক আউট, শামি ইন। দলে সুযোগ পেয়েই শামি ধরা দিলেন অন্য অবতারে। বিশ্বকাপের ইতিহাসে ভারতীয় হিসাবে সেরা বোলিং পারফরম্যান্স ৫০ উইকেট। বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশিবার এক ম্যাচে পাঁচ উইকেট তুলে নেওয়ার নজির। বিশ্বকাপের ৪৮ বছরের ইতিহাসে ৫০ উইকেট নেওয়ার ক্ষেত্রে শামিই দ্রুততম।
সেমির নায়ক কিন্তু হতে পারত খলনায়ক! এভাবেও ফিরে আসা যায়, কুর্নিশ শামি
জাহির খান এবং জাভাগল শ্রীনাথকে টপকে বিশ্বকাপে ভারতের সর্বোচ্চ উইকেট উইকেট সংগ্রাহক হয়েছেন তিনি। দেশের হয়ে ১০০টি এক দিনের ম্যাচ খেলা হয়ে গেল তাঁর। অপর দিকে এ বার বিশ্বকাপে ৬টি ম্যাচ খেলে তিনটিতেই ৫ উইকেট নিলেন তিনি। তিন বার ম্যাচের সেরার পুরস্কারও পেলেন। প্রথম একাদশে সুযোগ না পাওয়া সেই ছেলেটি সুযোগ পেয়েই বুঝিয়ে দিলেন যে এভাবেও ফিরে আসা যায়।