নজরবন্দি ব্যুরোঃ স্কুল সার্ভিস কমিশনের গ্রুপ ডি পদে নিয়োগ নিয়ে দ্বিমত প্রকাশ করেছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং রাজ্য। যার প্রেক্ষিতে কমিশন ভেঙে দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন বিশ্বজিৎ বসু। শূন্যপদে নিয়োগ নিয়ে বড় পদক্ষেপ, কমিশন কি পদক্ষেপ নিতে চলেছে তা জানতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু একদিনের মধ্যেই ভোলবদল কমিশনের। কমিশনের তরফে শুক্রবার আদালতে জানানো হয়েছে, বেআইনিভাবে যারা চাকরি পেয়েছে, তাঁদের শূন্যপদে নিয়োগ করা হবে না।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি কলকাতা হাইকোর্টের বিশ্বজিৎ বসুর পর্যবেক্ষণ, ১৯ মের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী রাজ্য জানিয়েছে, হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে বঞ্চিতদের নিয়োগ করতে হবে সেই শূন্যপদে। আবার কমিশন জানাচ্ছে, যাদের চাকরি বাতিল হয়েছে, তাঁদের জন্য শূন্যপদ। এরপরেই বিচারপতির প্রশ্ন, দুই জনের মতামত একে অপরের থেকে ভিন্ন। এটা কীভাবে সম্ভব? প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
এরপর রাজ্যের আইনজীবীর তরফে জানানো হয়েছে, যাদের ভুয়ো নিয়োগ হয়েছে, তাঁদের কথা ভেবে এবং তাঁদের পরিবারের কথা ভেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এমনকি এবিষয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়রাম্যানের সঙ্গে কথা হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে। সেইসময়েই বিচারপতির মন্তব্য, এই শিক্ষকদের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন চাকরি প্রার্থীরা। এরা অন্য কোথাও কাজ করতে পারলেও শিক্ষক হিসাবে এরা যোগ্য নয়। এর আগে অবশ্য এই নিয়োগ নিয়ে স্থগিতাদেশ জারি করেছিলেন বিচারপতি।
শুক্রবার শুনানির শুরুতেই নিজেদের অবস্থান জানিয়ে দিল স্কুল সার্ভিস কমিশন। সেখানে অতিরিক্ত শূন্যপদে বেআইনিভাবে চাকরি পাওয়া শিক্ষকদের নিয়োগ দেওয়ার আবেদন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।
২০১৬ সালে উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন। পরে ২০১৭ সালের জুন মাসে শুধুমাত্র কর্মশিক্ষা বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। ২০১৮ সালের মার্চে ইন্টারভিউ হয়। চলতি বছরের অক্টোবরে শারীরিক শিক্ষা এবং কর্মশিক্ষা বিষয়ে অতিরিক্ত পদে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে এসএসসি। এরপরেই নিয়োগ নিয়ে মামলা দায়ের করা হয় কলকাতা হাইকোর্টে।
চাকরি প্রার্থী সোমা রায়ের অভিযোগ, পরীক্ষা এবং পার্সোনালিটি টেস্ট মিলিয়ে ৭২ নম্বর পেয়েছেন তিনি। তপশিলি জাতিভুক্ত হওয়ার পরেও অ্যাকাডেমিক স্কোরে ২২ এর পরিবর্তে তাঁকে ১৮ নম্বর দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ, তাঁকে অ্যাকাডেমিক স্কোরে নম্বর কম দেওয়া হয়েছে। এমনকি তাঁর পার্সোনালিটি টেস্টের নম্বর যোগ করা হয়নি।
শূন্যপদে নিয়োগ নিয়ে বড় পদক্ষেপ, কমিশনের সিদ্ধান্ত নিয়ে জল্পনা
সোমবার সোমা রায়ের আইনজীবীদের বক্তব্য ছিল, এরকম ৬০ জন চাকরি প্রার্থী রয়েছেন, যাদের নম্বর তাঁদের সোমার থেকে কম। এরপরেই প্রতিটি নম্বর ধরে চাকরি প্রার্থীদের সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখতে চান বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। পরে কমিশনের আইনজীবীর যুক্তি মানতে চানননি বিচারপতি। বিচারপতির প্রশ্ন, কোথায় বিশেষ যোগ্যতা রয়েছে ওই প্রার্থীদের? ভৌমিক পদবি তপশিলি জাতিভুক্ত? এ সব করে চাকরি প্রার্থীদের হয়রানি করা হচ্ছে। মন্তব্য বিচারপতির।