নজরবন্দি ব্যুরো: ওড়িশার বালেশ্বরের দুর্ঘটনা গোটা দেশে সাড়া ফেলে দিয়েছে। করমণ্ডল এক্সপ্রেস, হামসফর এক্সপ্রেস এবং মালগাড়ির সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে শয়ে শয়ে যাত্রীর। আহতের সংখ্যা হাজার ছুঁই ছুঁই। সংঘাতের অভিঘাত এতটাই বেশি ছিল যে করমণ্ডল এক্সপ্রেস মালগাড়ির উপরে উঠে যায়। লাইনচ্যুত হয় ২১ টি কামরা। অন্যদিকে হামসফর এক্সপেসের একাধিক কামরা লাইনচ্যুত হয়। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি যে হয়েছে একথা বলার অপেক্ষা রাখে না। শুক্রবারের এই বিধ্বংসী দুর্ঘটনার জেরে রেলের কত কোটি টাকার ক্ষতি হল? ইতিমধ্যেই এর একটি প্রাথমিক রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শেষ উদ্ধারকাজ! নিহতদের ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণা ওড়িশার মুখ্য়মন্ত্রীর
কেন্দ্রীয় রেল মন্ত্রকের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, আনুমানিক প্রায় ২৩ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে দুটি এলএইচবি কোচ ট্রেনের ক্ষতির আনুমানিক পরিমাণ প্রায় ১৬ কোটি টাকা। দুর্ঘটনাগ্রস্ত মালগাড়িতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৩ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। বালেশ্বর দুর্ঘটনার জেরে রেললাইন উপড়ে গিয়েছে। রেল চলাচল স্বাভাবিক করতে নতুন লাইন পাততে হবে। যার জন্য খরচ হবে আনুমানিক ২ কোটি টাকা। করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার জেরে দেড়দিন ধরে বন্ধ রয়েছে ওই রুটের রেল চলাচল। কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন আগামী বুধবারের আগে ট্রেন পরিষেবা চালু হবে না। অন্যদিকে ট্রেন পরিষেবা বন্ধ থাকার কারণে ২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
শুক্রবার শালিমার-চেন্নাই এক্সপ্রেসের দুটি কামরা লাইনচ্যূত হয়। সেই কামরাতেই ধাক্কা মারে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস। এরপর দাঁড়িয়ে থাকা একটি মালগাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। কামরাগুলি কার্যত বিধ্বস্ত হয়ে যায়। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ২০টি বগি লাইনচ্যুত হয়ে যায়। দুর্ঘটনার পরই ঘটনাস্থলে যান ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক। তিনি নিহতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেছেন। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। শুক্রবার রাতেই তিনি একটি প্রতিনিধি দল বালেশ্বরে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। শনিবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী নিজেই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান।

করমণ্ডল দুর্ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শনিবার বিকেলে তিনিও দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধারকার্য ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেছেন। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার জন্য কারা দায়ী তাঁদের শনাক্ত করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। শনিবার সকাল থেকেই ঘটনাস্থলে ছিলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। আহতদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হয়েছে। এই দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২৯৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা রয়েছে।
ধ্বংস একাধিক কামরা, বালেশ্বর দুর্ঘটনায় কত কোটি টাকার ক্ষতি রেলের
