বাম ক্যান্টিনের আদলে খাওয়াবে মমতার ‘মা’ কিচেন, ৫ টাকাতেই ডিম ভাত!

mamata-banerjees-ma-kitchen
mamata-banerjees-ma-kitchen

নজরবন্দি ব্যুরোঃ বাম ক্যান্টিনের আদলে খাওয়াবে মমতার ‘মা’ কিচেন, ৫ টাকাতেই ডিম ভাত! মানুষের জন্য ভাবার দায়িত্ব নিয়েই সরকার আসে রাজ্যে। নিজেদের শাসন কালে কাজ করে যায় মানুষের জন্য। কোথাও ওঠে বিতর্ক,কোথাও হাততালি। কোনো কোনো শাসক দল চিহ্ন রেখে যায়,পরের দল অনুসরণ করে, কোনো কোনো দল হেরে গিয়েও মন্ত্র দেয় বেঁচে থাকার। এসব প্রায় সব রাজ্যেরই গল্প, এসব গল্প বাংলারও। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় নিজের রাজ্যের মানুষের পেট পুরে ডিম ভাতের ব্যবস্থা করেছেন মাত্র ৫ টাকায়।

আরও পড়ুনঃ মানুষই ইতিহাস রচনা করেন, ‘২১ নির্বাচনে BJP প্রাপ্তি তৃতীয় স্থান নয়তো? #Editorial

নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলের মাস্টারস্ট্রোক ভাবা যেতেই পারে। কিন্তু মানুষের জন্য বাংলা যে ভাবে, বাংলার দল যে ভাবে তার উদাহরণ তো আগেও দিয়েছে রাজ্য। দিয়েছে গত এবং চলতি বছরেই। সারাটা জীবন বামেরা বলে এসেছে মেহনতি মানুষদের স্বার্থে এবং পাশে আছে বামেরা। কথা রেখেছে ক্ষমতায় না থেকেও। কোরোনা কালের হাহাকারের বাজারে গোটা রাজ্য জুড়ে শ্রমজীবী ক্যান্টিন চালিয়েছেন তাঁরা। কোভিড ব্যারিয়ার মেনে মানুষের মুখের আগে পৌঁছে দিয়েছিলেন খাবার।

বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মার্জিত ভাবে বলেন না এবং ভাবেন না বলে অভিযোগ মানুষের বহু দিনের। তাই স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গীতে নিজের রাজ্যের মানুষের জন্য ” মায়ের রান্নাঘর” চালু করলেন তিনি। ৫ টাকায় ডিম ভাত। পেট পুরে। রাজ্যের মানুষের কথা ভেবে এবারের অর্থ বাজেট পেশ করার সময় নিজমুখে ঘোষণা করেছিলেন। আর বাজেট পেশের মাত্র ৭ দিনের মধ্যে নিজের দেওয়া কথা রাখতে চলেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটের আগে ফের কল্পতরু দিদি। বাজেটে দেওয়া কথা মত এবার ‘মায়ের রান্নাঘর’ চালু হতে চলেছে মহানগরে। মাত্র ৫ টাকায় সরকারের ক্যান্টিনে মিলবে ২০০ গ্রাম চালের ভাত ডিম সব্জি ও ডাল।

বাম ক্যান্টিনের আদলে খাওয়াবে মমতার ‘মা’ কিচেন, প্রথমে শহরের ১৬ টি ওয়ার্ডে আগামী সোমবার ভার্চুয়ালি এই প্রকল্পের সুচনা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। আপাতত ১৬ টি ওয়ার্ডে হলেও খুব শীঘ্রই মহানগরের ১৪৪ টি ওয়ার্ডেই দুপুর ১ টা থেকে ২ টো পর্যন্ত খাবার পাওয়া যাবে এই জনসাধারন ক্যান্টিনে। এর আগে মুখ্যমন্ত্রী ৫ তারিখ বাজেট পেশের সময়েই রান্না করা খাবার দেওয়ায়র কথা ঘোষণা করেন। গোটা লকডাউনে স্কুল বন্ধ থাকলেও পড়ুয়াদের জন্য চাল ডাল আলু সরবরাহ করে রাজ্য সরকার। আর এবার আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পরা মানুষদের জন্য এই প্রকল্প চালু করল সরকার। প্রথমে এই প্রকল্প কলকাতায় চালু হলেও ভোটের আগেই রাজ্যের সমস্ত জেলায় এই প্রকল্প চালু করতে চলেছে সরকার বলে প্রশাসন সুত্রে খবর।

ইতিমধ্যে রেশন থেকে এর জন্য চাল বণ্টনও শুরু হয়েছে। পুরসভার তরফে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক দেবাশিস কুমার জানিয়েছেন, ‘বরাে এলাকার যেকোনও একটি পয়েন্ট থেকে বিলি করা হবে রান্না করা খাবারের থালি। যে মরশুমে যেমন সবজি পাওয়া যাবে, সেটাই এই থালিতে ডিমের সঙ্গে সরবরাহ করা হবে।’ উল্লেখ্য, বছরদুয়েক আগে দক্ষিণ কলকাতার ৮৫ নম্বর ওয়ার্ডে শিশুমঙ্গল হাসপাতালের সামনে মাত্র ছ’টাকায় দুপুরে নিরামিষ খাবারের থালি বণ্টনের কাজ শুরু করেছিলেন দেবাশিস কুমারই। এদিন তিনি স্বীকার করেন, ত্রিধারা ক্লাবের উদ্যোগে সেই থালিটি ছিল নিরামিষ। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মাত্র পাঁচ টাকায় আমজনতাকে ডিম-ভাত খাওয়াচ্ছেন।

সর্বভারতীয় স্তরে এধরণের প্রকল্পের রূপক ছিলেন জয়ললিতা। বছর ৮ আগে তামিলনাড়ু তে শুরু করেছিলেন এই প্রকল্প। নাম ছিল আম্মা ক্যান্টিন। তার পর সেই প্রকল্প ছড়িয়েছে গোটা রাজ্যে। নিজদের মত করে উদ্যোগ নিয়েছেন সকল রাজ্যের মানুষ। এবার বাংলা নিল সেই উদ্যোগ। যদিও ইতিমধ্যেই বিরোধী দল ” গিমিক” বলে মার্ক করেছেন, কেউ বা বলছেন শ্রমজীবী ক্যান্টিনের ডুব্লিকেট। কেউ বলছে ভোটের আগের নতুন খেলা। তবে ওয়াকিবহাল মহল বলছে, যদি অনুসরণ হয়ই বা,বা ভোটের আগের মাস্টারস্ট্রোক, সাধারণ মানুষের স্বার্থে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কর্তব্যের সমীকরণের ওপর কিছুই যেতে পারেনা।