নজরবন্দি ব্যুরোঃ দেখতে দেখতে ছটা বছর। দফায় দফায় আন্দোলনেও কোনও লাভ হচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস শুধুমাত্র মুখে থেকে বের হওয়া শব্দ। পাল্টা সেই আন্দোলনের চিৎকার মনে করিয়ে দিতে চায় প্রতিশ্রুতির শব্দগুলি। ৭৩ তম প্রজাতন্ত্র দিবসে ৩১৭ দিন অতিক্রান্ত করলেন তাঁরা।
আরও পড়ুনঃ Mukul Roy: তৃণমূলের সাংগঠনিক বৈঠকে থাকছেন না মুকুল! কোন ফুলে ঝড়বে মুকুল?
দেখতে দেখতে ৩১৫ দিনে পড়ল হবু শিক্ষকদের আন্দোলন। আন্দোলনরত হবু শিক্ষকদের বক্তব্য, ২০১৯ সালে প্রেস ক্লাবের সামনে স্কুল সার্ভিস কমিশনের দুর্নীতি সম্পর্কে অবগত হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২৯ দিন ধরে অনশন চলার পর তাঁদের চাকরীর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। কথা দিয়েছিলেন মেধাতালিকাভুক্ত সকল প্রার্থীর চাকরি তিনি সুনিশ্চিত করবেন। তাঁর ওপর ভরসা রাখতে। তিনি কথা দিলে কথা রাখেন।
তাহলে কেন শিক্ষক নিয়োগের মেধাতালিকায় উত্তীর্ণ হয়েও, এমনকি প্রথম দফায় ডাক পেয়েও ৩০৬ দিন এরও বেশী সময় ধরে শীত,ঝড়, মহামারীর প্রচণ্ডতাকে উপেক্ষা করে অনশন ও অবস্থান বিক্ষোভ করতে হবে?একইসঙ্গে তাঁদের প্রশ্ন, কেন তাঁদের বিকাশ ভবন, আচার্য সদন, তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী, বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে পুলিশের অত্যাচার সহ্য করেও ন্যায্য চাকরী চাইতে গিয়ে লাঞ্ছনার শিকার হতে হবে?
মুখ্যমন্ত্রী দুর্নীতির কারণে বঞ্চিত সকল মেধাতালিকাভুক্ত চাকরী প্রার্থীর চাকরি সুনিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিলেও আজও কেন পুজোর মরশুমগুলো তাঁদের রাস্তায় কাটাতে হয়? কেন আত্মঘাতী হয় মেধাতালিকাভুক্ত বঞ্চিত প্রার্থী? কেন কৃষক মেহেনতি মজদুর সমাজের ছেলেমেয়েরা পরীক্ষায় পাশ করেও দুর্নীতির শিকার হয়ে বঞ্চিত থেকে যায়? কেন দুর্নীতির বলি হতে হয় শিক্ষিত মেধার?
প্রথম পর্যায়ে ২০১৯ সালে প্রেসক্লাবের সামনে ২৯ দিনের অনশন করেন হবু শিক্ষকরা । দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে সেন্ট্রাল পার্কের ৫ নম্বর গেটের সামনে ১৮৭ দিনের অবস্থান বিক্ষোভ ও অনশন। তৃতীয় পর্যায়ে ২০২১ সালের ৮ ই অক্টোবর থেকে ধর্মতলার গান্ধী মূর্তির পাদদেশে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ধর্না। যা আজ ৯৯ দিনে পড়েছে।
৭৩ তম প্রজাতন্ত্র দিবসে ৩১৭ দিন, সরকারের তরফে মেলেনি উত্তর

২০১৯ সালে রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বঞ্চিত শিক্ষক পদপ্রার্থীদের মঞ্চে গিয়ে আশ্বাস দিয়েছিলেন মেধাতালিকা ভুক্ত কোনো প্রার্থী বঞ্চিত হবে না। প্রয়োজনে আইনের কিছু পরিবর্তন করেও হলেও মেধাতালিকাভুক্ত অথচ বঞ্চিত শিক্ষক পদপ্রার্থীদের চাকরিতে নিয়োগ করা হবে। হবু শিক্ষকদের বক্তব্য, ২০১৯ সালে দেওয়া মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস ২০২২ সালের জানুয়ারিতে এসেও কার্যকর হয়নি। তার ওপর স্কুল সার্ভিস কমিশনের লাগাতার অবৈধভাবে নিয়োগ চলছে।