নজরবন্দি ব্যুরো: রেশন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তিনি রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী ও বর্তমান বনমন্ত্রী। কয়েকদিন আগেই মন্ত্রিসভার বৈঠকে বালু’কেই মন্ত্রী রেখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বন দফতরের দায়িত্ব দিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদাকে। কিন্তু গত বছর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির ছয় দিনের মাথায় তাঁকে মন্ত্রিত্ব সহ দলের সমস্ত পদ থেকে অপসারণ করেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো। দুজনের ক্ষেত্রে কেন এই পার্থক্য? জানালেন মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জামিন পার্থঘনিষ্ঠ প্রসন্নর, ‘সুপ্রিম’ প্রশ্নের মুখে CBI
তৃণমূলের তরফে বরাবর স্পষ্ট করা হয়েছে, দুর্নীতির দায়ে কোনও নেতা মন্ত্রী গ্রেফতার হলে তার পিছনে রয়েছে ব্যক্তি স্বার্থ। দল কারও দায় নেবে না। দেড় বছর আগে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত পার্থ চট্টোপাধ্যায় হোক কিংবা রেশন দুর্নীতি মামলায় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, দলের মতামত এক। পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া অন্য কারও অনুপস্থিতিই তৃণমূল কংগ্রেসে কোনও প্রভাব ফেলবে না। তিনি বলেন, “আমাদের দলে অনেকেই মনে করেন যে খুব গুরুত্বপূর্ণ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া অন্য কারও ক্ষেত্রেই দলের কোনও ক্ষতি হবে না। উত্তর ২৪ পরগনায় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের একটা ভাল সংগঠন ছিল ঠিকই। কিন্তু আমাদের দলে শেষ কথা মমতাই। অন্য কেউ না।”
এদিকে পার্থর সঙ্গে জ্যোতিপ্রিয়র তুলনা করতে নারাজ শোভনদেব। তাঁর কথায়, “পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে দৃশ্যত দেখা গিয়েছিল অনেক টাকা। কিন্তু জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ক্ষেত্রে সেরকম কিছু দেখা যায়নি। তাই দু’টো ক্ষেত্রে সমান না।” এমনকি শোভনদেব দাবি করেছেন যে তিনি বিশ্বাস করেন না জ্যোতিপ্রিয় এমন কোনও কাজ করেছেন। তবে তৃণমূলের প্রবীণ নেতা বুঝিয়ে দিয়েছেন, কেউ কোনও অপরাধ করলে সে দায় যে দল নেবেন না।
উল্লেখ্য, গত বছর জুলাই মাসে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ২৩ ঘণ্টার তল্লাশি শেষে গ্রেফতার করা হয় রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। তাঁর গ্রেফতারির পর হদিশ মেলে পার্থর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের। তাঁর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় প্রায় ৫০ কোটি টাকা নগদ। শাসক দলের একজন ‘হেভিওয়েট’ নেতার গ্রেফতারিতে শোরগোল পড়ে যায় রাজ্যে। সরব হয় বিরোধীরা। গ্রেফতারির ছয়দিনের মাথায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করে মন্ত্রিত্ব সহ দলের সমস্ত পদ থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে অপসারণ করে। অন্যদিকে, গতমাসে রেশন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালু। কয়েকদিন আগেই জ্যোতিপ্রিয়কে ছাড়া প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠক বসে। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বন দফতরের মন্ত্রী থাকবেন বালু। তবে আপাতত দফতরের দায়িত্ব সামলাবেন প্রতিমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা।
পার্থর সঙ্গে জ্যোতিপ্রিয়র তুলনা টানতে নারাজ তৃণমূল, দুজনের মধ্যে পার্থক্যের মাপকাঠি ‘টাকা’!
