নজরবন্দি ব্যুরোঃ দুর্নীতিতে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকা প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ তদন্তে সিবিআই ২০১৪ সালে টেট পাশ শিক্ষকদের দশটি নথি জমা করার নির্দেশ দিয়েছেন। এই নথির ভিত্তিতেই চাকরি বাঁচবে যা যাবে তা নির্ভর করছিল অনেকটাই। এদিকে বিভিন্ন জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ খুঁজেই পাচ্ছেনা ২০১৪ টেটে নিয়োগ বিষয়ক নথিপত্র। যত দিন গড়াচ্ছে ততই চাকরি হারানোর আশঙ্কা বাড়ছে প্রাথমিক শিক্ষকদের। কিন্তু এবার খুশির খবর রাজ্যের কয়েক হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের জন্যে।
আরও পড়ুনঃ চলে যেতে পারে চাকরি, গৃহশিক্ষকতা বন্ধ করতে কড়া নির্দেশিকা শিক্ষা দফতরের।
সমস্যায় পড়েছেন হাজার হাজার কর্মরত প্রাথমিক শিক্ষক। সোমবার থেকেই শুরু হয়েছে তথ্য সংগ্রহের কাজ। জেলা থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো চিঠিতে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে ২০১৪ সালে টেট পরীক্ষায় পাশ করে যারা ২০১৭ থেকে ২০২০ এর মধ্যে চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের সকলের নথি পাঠাতে হবে৷ চাওয়া হয়েছে পরীক্ষার্থীদের নিয়োগপত্রের কপি সহ ১০ টি তথ্য৷ এই পরিস্থিতিতে সামনে এসেছে প্রয়োজনীয় নথি না খুঁজে পাওয়ার মত খবর। তাতেই ঘুম উড়েছে শিক্ষকদের।
সূত্রের দাবি, ২০১৪ সালের টেটে নিয়োগপত্র দেওয়ার জন্য শুধু মার্কশিট, অ্যাডমিট কার্ড এসব ভেরিফাই করা হয়েছিল। অন্য কিছু নয়। কিন্তু কেন ভেরিফাই করা যায়নি সেই প্রশ্নের উত্তর এল আজ। নিখিলবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে বড় বার্তা দিলেন সাধারন সম্পাদক মোহনদাস পণ্ডিত। এক বিবৃতিতে তিনি জানিয়েছেন, ”২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার শুধু রেজাল্ট প্রকাশিত হয়েছিল, টেট পরীক্ষা উত্তীর্ণের কোন সার্টিফিকেট রাজ্য সরকার প্রদান করেননি। টেট সার্টিফিকেট দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের, শিক্ষকরা শুধু টেট রেজাল্ট জমা করবেন।”
নিখিলবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির প্রধানের কথায় পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে বিষয়টি। যে সার্টিফিকেট সরকার প্রদানই করেনি, সেই সার্টিফিকেট কিভাবে জমা করা সম্ভব, সেই প্রশ্ন উঠছে। স্বাভাবিকভাবেই এবিপিটিএর (ABPTA) পক্ষ থেকে শিক্ষকদের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে কোন ফাঁদে পা না দেওয়ার জন্যে। সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “শিক্ষাগত ও পেশাগত যোগ্যতা প্রমাণ করে যারা চাকুরীতে যোগদান করেছেন তাঁদের সকলের পেশা রক্ষায় এবিপিটিএ (ABPTA) সবসময় পাশে থাকবে।” সুরতরাং এটা পরিষ্কার যে সরকারের ভুলেই সার্টিফিকেট পাওয়া হয়নি প্রাথমিক শিক্ষকদের। তাই যারা শিক্ষাগত ও পেশাগত যোগ্যতার প্রমান দেখাতে পারবেন চাকরি বাঁচবে তাঁদের।
CBI তদন্ত হলেও চাকরি বাঁচবে, প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য বিরাট খবর।
উল্লেখ্য, মোট ১০ টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে ২০১৪ সালের টেট পাশ করা শিক্ষকদের। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা রয়েছে সেই ১০ টি বিষয়। ১) নিয়োগপত্রের প্রতিলিপি ২) চাকরিতে যগদানের রিপোর্ট ৩) ২০১৪ সালে টেট পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড ৪) টেটে যোগ্যতা অর্জনের তথ্য ৫) প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের প্রশিক্ষনের শংসাপত্র ৬) জাতিগত শংসাপত্র(যদি থাকে)
৭) সর্বস্তরের পরীক্ষার মার্কশীট, অ্যাডমিট কার্ড ৮) পার্শ্ব শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত প্যারাটিচার এনগেজমেন্ট লেটার। ৯) কোন কাজের অভিজ্ঞতা যদি থাকে তাহলে তাঁর শংসাপত্র এবং ১০) ২০১৪ সালের টেট সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য।