নন্দীগ্রামে ফের রাজনৈতিক উত্তেজনা। শনিবার সরাসরি থানায় ঢুকে পুলিশের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। অভিযোগ—মিথ্যে মামলায় বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নন্দীগ্রাম থানায় গিয়ে পুলিশকে কার্যত শাসানি দিয়ে শুভেন্দুর দাবি, শাসকদলের চাপে পড়ে বেআইনি ভাবে এই গ্রেফতারি করা হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার। নন্দীগ্রামে তৃণমূল কংগ্রেস–এর তরফে ‘উন্নয়নের পাঁচালি’ কর্মসূচির প্রচার চলাকালীন একটি ট্যাবলো ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে। পুলিশ সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিজেপির এক দলীয় কর্মী তথা মণ্ডল সভাপতিকে গ্রেফতার করে। কিন্তু বিজেপির পাল্টা অভিযোগ, ট্যাবলো ভাঙচুরের কোনও ঘটনাই ঘটেনি। পরিকল্পিত ভাবে মিথ্যে মামলা সাজিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এই ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার **নন্দীগ্রাম থানা**য় পৌঁছন শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় আক্রমণ শানান। শুভেন্দুর অভিযোগ, “তৃণমূলের টোটোতে কেউ হাত দেয়নি। ফ্লেক্স পুকুরে পড়ে ছিঁড়েছে। অথচ মিথ্যে মামলা দিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে।” তাঁর কটাক্ষ, যাঁর কথায় পুলিশ এই পদক্ষেপ করেছে, তিনি কোনও পড়াশোনা করেন না, অথচ পুলিশ তাঁর কথাতেই ‘কাঁপছে’।
অভিযুক্ত বিজেপি কর্মীর পরিবারের তরফেও গুরুতর অভিযোগ তোলা হয়েছে। পরিবারের দাবি, গ্রেফতারির সময় কেউ পুলিশের পোশাকে ছিল না। সিভিল ড্রেসে এসে কোনও রকম বডিক্যাম ছাড়াই তাঁকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এই অভিযোগকে সামনে রেখে শুভেন্দু প্রশ্ন তোলেন—আইন মেনে না চলেই কি পুলিশ গ্রেফতার করেছে? সাদা পোশাকে গিয়ে কাউকে তুলে নিয়ে যাওয়ার বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন করেন তিনি।
পুলিশের ভূমিকা নিয়ে আরও এক ধাপ এগিয়ে শুভেন্দু দাবি করেন, রাজ্য পুলিশের একাংশ শাসকদল ও রাজনৈতিক কৌশলবিদদের প্রভাবে কাজ করছে। একই সঙ্গে তিনি রাজনৈতিক হুঁশিয়ারিও দেন। শুভেন্দুর কথায়, “এপ্রিলের পর পরিস্থিতি বদলাবে। তখন সব কিছুর হিসাব হবে।” তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক মহলে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে।


সব মিলিয়ে, নন্দীগ্রামের এই ঘটনা শুধু একটি গ্রেফতারি নিয়ে বিতর্ক নয়—রাজ্য পুলিশ, শাসক দল এবং বিরোধীদের সংঘাতের আরও এক দৃষ্টান্ত বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ।








