নজরবন্দি ব্যুরো: কয়েক সপ্তাহ হতে চললো,ভোট পূর্ব বাংলা দেখছে মিছিল – পাল্টা মিছিলের রাজনীতি। সভা মঞ্চের জনসমাগম দেখে পরিস্থিতির জল মাপতে চাইছেন অনেকেই । বাংলায় এই দলবদল আর পাল্টা মিছিলের মাঝেও একক সভা মঞ্চে নজির গড়ছেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। একের পর এক সভায় ভিড় হয়েছে প্রচুর।
আরও পড়ুনঃ টলি পাড়ার আরও দুই! তৃণমূলে যোগ দিলেন কৌশাণী – পিয়া ।
চলতি মাসে একাধিক সভা করার পর ,আজ রবিবার কুলতলিতে সভা করেন তৃণমূলের যুব সভাপতি অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। সভা মঞ্চে দাঁড়িয়ে একের পর এক উত্তর দিয়ে গেছেন বিরোধী পক্ষের সকল আক্রমনের। নাম করে, ধরে ধরে বুঝিয়ে দিয়েছেন বাংলার রাজনীতিতে কার অবস্থান কোথায়। প্রসঙ্গত গতকাল রাজ্যে এসে নেতাজী জন্ম জয়ন্তী পালন এবং সে প্রসঙ্গে মঞ্চে ওঠার আগে যে বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছিল উপস্থিত মানুষ , কাল থেকেই সে নিয়ে চলছে জলঘোলা, আজ সভামঞ্চ থেকে তা নিয়ে আওয়াজ তোলেন অভিষেক। বাংলার বুকে দাঁড়িয়ে বাংলার কৃষ্টি,সংস্কৃতি নষ্ট করছে যাঁরা তাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন ভরা সভামঞ্চে।
শুধু তাই নয়, একে একে মুখ খোলেন তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা প্রটিতা অভিযোগের। প্রথমে বাবুল এবং কয়েকদিন আগে খেজুরির সভা মঞ্চ থেকে শুভেন্দু। দুজনেই বারবার বলেছেন অভিষেক তোলাবাজ। অভিষেকের নামে দুর্নীতির মিথ্যে মামলা লাগানোর দায়ে দুবারই তাঁর আইনজীবী আইনি নোটিস পাঠান তাঁদের। আজ কুলতলির মঞ্চে দাঁড়িয়ে কার্যত সব হিসেব বুঝিয়ে দেন অভিষেক ।
সভা মঞ্চে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু অধিকারীকে একহাত নেন তৃণমূলের যুব সভাপতি। এবং তিনি স্পষ্টতই জানান কোনো ভাববাচ্যে নয়, সরাসরি নাম করে হিসেব বুঝিয়ে দেবেন তিনি। প্রমাণ হিসেবে সুদীপ্ত সেনের চিঠির কপি নিয়ে আসেন। যেখানে আছে সুদীপ্ত সেন শুভেন্দু অধিকারীকে ৬ কোটি টাকা দিয়েছিলেন, তারপরও শুভেন্দু অভিষেক কে তোলাবাজ বলেন কোন প্রেক্ষিতে সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি। সরাসরি শুভেন্দু কে চ্যালেঞ্জ করে পুরনো প্রসঙ্গ তুলে আনেন অভিষেক। যেখানে বার বার টিভির পর্দায় থেকে আইনি জায়গায় নিজের টাকা আত্মসাৎ এর প্রমাণ আছে সেখান তার পরও অভিষেকের নামে মিথ্যে অপবাদের জবাব দেন ।এমনকি সিবিআই এর ভয়েই যে শুভেন্দু বিজেপি তে গেছেন তাও জানান তিনি।
তোয়ালে মোড়া ঘুষের নায়ক শোভন কে হুঙ্কার, শুভেন্দুকে নজিরবিহীন চ্যালেঞ্জ অভিষেকের। শুভেন্দু ঘুষখোর বলে আওয়াজ যেমন দিয়েছেন তেমনই সবিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বকে নাম করে তিনি আক্রমণ করেছেন।নাম নিয়ে দিলীপ ঘোষকে গুন্ডা। কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে বহিরাগত। অমিত শাহকে বহিরাগত বলেন তিনি । তাঁদের পাশাপাশি বিজেপি নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায়কেও নিশানা করেছেন তিনি। অভিষেক বলেন,” আমাকে নাকি উনি জিতিয়েছিলেন। তিন বছর ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন। তিনি যখন দায়িত্বে ছিলেন তখন আমি ৭০ হাজার ভোটে জিতেছি। আর যখন আমার হয়ে নামেননি তখন আমার মার্জিন আড়াই লক্ষ ছাড়িয়ে গেছে। একহাতে সিগারেট টানতে টানতে তোয়ালে জড়িয়ে টাকা নিয়েছিলে।
বাংলায় সামনে আসছে মসনদ বদলের লড়াই। এই লড়াই লড়তে, বাংলাকে বাঁচাতে সবাইকে এখিতে ডাক দিয়েছেন তিনি। কুলতলীর সভায় দাঁড়িয়ে অভিষেক বৃহত্তর বাংলার স্বার্থে ডাক দিয়েছেন এক হওয়ার। সভা মঞ্চ থেকেই তিনি ময়ে করিয়ে দেন এই জেলা সেই জেলা, যেখান থেকে বাম দের বিরুদ্ধে চাকা ঘুরেছিল তৃণমুলের। ২০০৮ এর পঞ্চায়েত ভোট, ২০০৯ এর লোকসভা ভোট থেকে ২০১৬ ক্ষমতায়নের গ্রাফ জানিয়ে তা ধরে রাখার আবেদন জানান ।
মঞ্চ থেকেই প্রবিবার তন্ত্র নিয়ে যে কথা তাঁকে শুনতে হয়, তারও যোগ্য জবাব দিয়েছেন অভিষেক। এর পাশাপাশি মনে করিয়ে দেন তৃণমূল সরকার গঠনের সময় বলেছিল বদল নয় বদল চায়, এবার নবান্নে ফিরে সরকার গড়ে প্রতিটা হিসেব মিটিয়ে নেবেন তিনি নিজেই।