তৃণমূলের থেকে দলকে বাঁচান! দিলীপকে চিঠি, দেবশ্রীকে ফোন বিজেপি নেতার।
তৃণমূলের থেকে দলকে বাঁচান! দিলীপকে চিঠি, দেবশ্রীকে ফোন বিজেপি নেতার।

নজরবন্দি ব্যুরো: তৃণমুলের থেকে দল কে বাঁচান! বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে এই মর্মে চিঠি পাঠালো বিজেপির সাধারণ কর্মীরা। এই মুহূর্তে বিজেপির প্রথম সারির নেতাদের অধিকাংশই হলেন তৃণমূল বা অন্যদল থেকে বিজেপিতে যাওয়া নেতা মন্ত্রীরা। ডিসেম্বরে শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ার পর থেকেই রীতিমত ঝাঁকে ঝাঁকে তৃণমূলের নেতা থেকে কর্মী যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। অঞ্চল থেকে মঞ্চ, দীর্ঘদিনের বিজেপি কর্মীদের পিছনে ফেলে সামনের সারিতে উঠেও আসছিলেন তারাই।

আরও পড়ুনঃ ২০ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি, এবার মহার্ঘ্য হতে চলেছে জীবনদায়ী ওষুধ।

সে নিয়ে বেশ কয়েকমাস আগে থেকেই বিজেপিতে শুরু হয়েছে গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব। আদি বিজেপি এবং নব্য বিজেপি। প্রার্থী তালিকার কানাঘুষো শুরু হওয়ার পর থেকেই দলের ভেতরে শুরু বিয়, গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের ছাপ দেখা গিয়েছিল দেওয়াল লিখনেও। সেই ছাপ এবার কার্যত বিক্ষোভের আকার নিয়েছে বিজেপির তৃতীয় এবং চতুর্থ দফার প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করার পর। তালিকায় দলত্যাগ করে আসা প্রার্থীদেরই রমরমা। প্রার্থী পছন্দ না হওয়ায় রাজ্যের একাধিক জায়গায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বিজেপির সাধারণ কর্মীরা। ভাঙছে পার্টি অফিস, কথাও আগুন লাগানো হচ্ছে পতাকায়, কার্যালয়ে। হাওড়ার কর্মীরা ভাংচুর চালিয়েছেন হেস্টিংসে বিজেপির পার্টি অফিসে। একে একে দল ছাড়ছেন একাধিক কর্মীরা।

এই পরিস্থিতিতে নিজেদের স্থানীয় কর্মীকেই প্রার্থী করার জন্য, এবং অন্যথায় খারাপ হবে পরিস্থিতি জানিয়ে দেবশ্রী চৌধুরীকে ফোন করেছেন নদীয়া দক্ষিণের বিজেপি নেতা। চিঠি দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকেও। তিনি বার বার জানিয়েছেন দীর্ঘদিন ধরে দলের জন্য লড়াই করেন তাঁরা, সেখানে অন্য বাইরের প্রার্থী এসে তাঁদের ওপর দাদাগিরি দেখবেন এটা মেনে নেওয়া যায়না। তিনি দেবশ্রী চৌধুরীকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন প্রার্থী যেনো হন স্থানীয় বাসিন্দা। তবে দেবশ্রী চৌধুরী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন প্রার্থী নাম ঘোষণা করছেন তিনি, প্রার্থী বাছাইয়ে হাত নেই তাঁর। সব কিছুই ঠিক করছেন অমিত শাহ্। তিনি এও জানিয়েছিলেন, ওই এলাকায় প্রার্থী হবে দলের বাইরের ই, তবে তাতে ফল ভালো হবেনা বলে জনিয়ে দিয়েছিলেন বিজেপির ওই নেতা। অন্যদিকে দিলীপ ঘোষকেও চিঠি দিয়েছেন বিজেপি নেতা দিলীপ চক্রবর্ত্তী।

তিনি জানিয়েছেন ১৯৯৫ থেকে বিজেপির হয়ে কাজ করছেন তিনি, এবং কখনোই দলের বিপক্ষে গিয়ে কিছু বলেন নি, কিন্তু বিজেপির এবারের প্রার্থী তালিকা ক্ষুন্ন করেছে তাঁকে। চিঠির মধ্যেই তিনি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন, একের পর এক তৃণমূলত্যাগীদের দলে নেওয়ার আগে বিজেপির উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই জানতে চান না এতদিনের কর্মচারীদের মতামত। তিনি আরো অভিযোগ করছেন একের পর এক তৃণমুল ত্যাগী, যেসব দুর্নীতিপরায়ণ নেতা মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে তাঁদের এতদিনের লড়াই ছিলো তারাই এবার বিজেপির প্রার্থী।

তৃণমূলের থেকে দলকে বাঁচান! এই ঘটনা কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তাঁরা। সমস্ত সাধারণ কর্মীদের পক্ষ থেকে এই চিঠি বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে লেখেন তিনি। অন্যদিকে চিঠির শেষে তিনি এও লিখেছেন, “তৃণমূল থেকে বিজেপিকে রক্ষা করুন”। ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে নিজেদের এতদিনের কর্মীদের বাদ দিয়ে একাধিক জায়গায় দলত্যাগী দের প্রার্থী করায় যে লাগাতার বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন সাধারণ কর্মীরা, তাতে অস্বস্তিতে বিজেপি, এবং এর প্রভাব পড়বে ভোট ব্যাংকেও বলে মনে করছেন তাঁরা।