নজরবন্দি ব্যুরো: ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনার সাক্ষী রইল গোটা দেশ। টানা ৩২ ঘণ্টা উদ্ধারকাজ চালানো হয়। মৃত্যু মিছিল যেন আর থামার নামই নিচ্ছিল না। এখনও এমন শতাধিক মানুষ আছে যাদের পরিচয় জানা যায়নি। যদিও নিজেদের দিক থেকে তাঁদের খোঁজ চালাচ্ছে ওড়িশা সরকার। কিন্তু কিভাবে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা! প্রথম থেকেই ক্ষুব্ধ জনতার প্রশ্নে সরকারের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছিল।
তবে রেলের পক্ষ থেকে প্রাথমিক তদন্তে জানানো হয়েছিল যে, সিগন্যালের ত্রুটিই কারণেই এই ঘটনা। তবে তদন্ত বাড়লে আসল কারণ জানা যাবে। কিন্তু এবার দুর্ঘটনার ৪০ ঘণ্টার মধ্যে কারণ স্পষ্ট করে দিলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব! কোনও যান্ত্রিক ত্রুটিবিচ্যুতি নয়! বরং করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় মানুষকেই দায়ী করলেন কেন্দ্রিয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। ইতিমধ্যেই রবিবার বিকেলে এপ্রসঙ্গে তিনি ঘোষণা করে জানান, “মানুষের হাতেই করমণ্ডল বিপর্যয়! দোষীদের চিহ্নিত করা হয়েছে! তদন্তও সম্পূর্ণ করা হয়েছে।”

প্রসঙ্গত, রেলের পক্ষ থেকে প্রাথমিক তদন্তে দাবি করে জানানো হয়েছিল যে সিগন্যালের ত্রুটির কারণেই ওড়িশায় ট্রেন দুর্ঘটনা! শনিবার বিকেলে রেলের তরফে একটি যৌথ পরিদর্শন রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়ে। ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর ওই যৌথ রিপোর্টে সিগন্যালের ত্রুটির কথাই উল্লেখ্য করা হয়েছে। রেলের পক্ষ থেকে যৌথ পরিদর্শন রিপোর্টে বলা হয়েছে, “আপ মেন লাইনে সবুজ সিগন্যাল দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই আপ লাইনে ঢোকেইনি ট্রেনটি। ওই ট্রেন ঢুকেছিল লুপ লাইনে। আর সেখানেই আগে থেকে দারিয়েছিল একটি মালগাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল। এরপরেই ওই দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষে করমণ্ডল এক্সপ্রেসটি লাইনচ্যুত হয়। আর এর মাঝেই অন্যদিক থেকে ডাউন লাইন দিয়ে বালেশ্বরের দিকে যাচ্ছিল বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। সেই ট্রেনটিরও দু’টি বগি এই ঘটনার জেরে লাইনচ্যুত হয়।”
অন্যদিকে, বালেশ্বরের ট্রেন দুর্ঘটনার জল গড়াল সুপ্রিম কোর্টেও। ট্রেন দুর্ঘটনায় তদন্তে দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা হল জনস্বার্থ মামলা। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নজরদারিতে বালেশ্বরের দুর্ঘটনা নিয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। পাশাপাশি এই রকমের দুর্ঘটনা এড়াতে ভারতীয় রেলের প্রতিটি ট্রেনে কবচ বাধ্যতামূলক করার দাবিতেও শীর্ষ আদালতে মামলা করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।