উত্থানের জমিতে শুরু হল মমতার হাইভোল্টজ সভা

নজরবন্দি ব্যুরো: উত্থানের জমিতে শুরু হল মমতার হাইভোল্টজ সভা। শুরুতেই মমতা বলেন, “আন্দোলনে শহিদ হয়েছিলেন ১৪ জন। তার পাশাপাশি ১০ জন মানুষও আজও ফিরে আসেনি। তাঁরা নিখোঁজ আজও”। আজকের এই মঞ্চ সরকারি মঞ্চ। এই মঞ্চ থেকে ৪ লাখ টাকা করে সরকারি সাহায্য়ের চেক তুলে দেওয়া হয় সেই নিখোঁজদের পরিবারের হাতে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় পৌঁছলেন নন্দীগ্রামের তেখালি বাজার মাঠ সভাস্থলে। মঞ্চে উপস্থিত নেই অধিকারী পরিবার। শহীদদের পরিবার মমতার সভায় উপস্থিত রয়েছেন। ঢল নেমেছে মানুষের। লাখ মানুষ ভীড় জমিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীকে দেখতে। ডুমুরজলা হেলিপ্যাড গ্রাউন্ড থেকে রওনা দেওয়ার আগে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “নন্দীগ্রাম আমি রোজই যাই। মনে নন্দীগ্রাম আমার রোজই থাকে।” এদিকে সভাস্থলে মুখ্যমন্ত্রীর অভ্যর্থনায় নন্দীগ্রাম সভাস্থলে “তোমায় হৃদমাঝারে রাখিব, ছেড়ে দেব না “বাজানো হচ্ছে। সভায় উপস্থিত সবার চোখ এখন শুধুই মমতার দিকে।
আরও পড়ুন: বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, ফাঁস করেই দলের কাছে ধমক খেলেন সৌমিত্র
মমতা বলেন, অনেকে বড় বড় কথা বলে, সিঙ্গুর থেকে আন্দোলন শুরু হয়। তাপসী মালিকে অত্যাচার করে হত্যা করা হল। ১৪ মার্চ গুলি চলেছে। আমি আন্দোলন করেছিলাম। কেন্দ্রীয় সরকারও সেটা বলতে বাধ্য হয়েছিল। ১৪ মার্চ ২৬দিন অনশন করেছিলাম। সেই সময় আমার শরীর খারাপ হয়। আমি ডাক্তারদের কাছে গিয়েছিলাম, তখন শুনলাম গুলি চলছে। আমার গাড়ি ঘিরে ধরে পেট্রোল বোমা আমাকে জ্বালিয়ে দিত চেয়েছিল। সেই সময়ে গর্ভনর আমাকে বলেছিল ফিরে আসতে। কিন্তু আমি ফিরে আসিনি। কোলাঘাটের বাড়িতে ঢোকার সময়ে দেখি বড় বড় বাস দিয়ে বন্ধ রাখা হয়েছিল। পরে টপকে যেতে হয়েছিল। আনিসুরকে আজও জেলে রাখা হয়েছে। ওর বাইকে করে আমি আর ও গেলাম।
উত্থানের জমিতে শুরু হল , এদিন নন্দীগ্রামের সভা থেকে মমতা বলেন, আমি কারোর কাছে জ্ঞান দেবো না। কে নন্দীগ্রাম আন্দোলন করেছে। সেইসব দিন আমরা দেখেছি। কীভাবে জ্যান্ত মানুষগুলোকে হত্যা কর হল। নন্দীগ্রামের আত্মিক টান ছিল-আছে থাকবে। ভুলতে পারি নিজের নাম। ভুলবো না নন্দীগ্রাম। এটা নিয়ে আমার বই আছে। আজ নন্দীগ্রাম অনেক উন্নত হয়েছে। কৃষাণ মান্ডি হয়েছে।
উত্থানের জমিতে শুরু হল মমতার হাইভোল্টজ সভা, সভা থেকে বিজেপিকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, সারা দেশে কৃষি আন্দোলন চলছে। ফসল দখল করার একটা চক্রান্ত বিজেপি সরকার করেছে। তোমরা বাংলা দখল করবে। কৃষকদের ৩টে বিল প্রত্যাহার করতে হবে। কেউ কেউ এদিন ওদিন করছে। তৃণমূল কংগ্রেসের জন্মদিনেও তোমরা ছিলে না। অন্যদিকে নাম না করে শুভেন্দুকে নিশানা করে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন,” কেউ তোমরা যেতেই পার। এটা তোমাদের স্বাধীনতা। আমার অভিনন্দন রইল।” সেইসঙ্গে তিনি বলেন, “রাজনীতিতে তিন ধরনে লোক হয়। লোভী, ভোগী আর ত্যাগী। যারা ত্যাগী তারা কোথাও যাবে না। আরেকদলের অনেক সম্পত্তি রয়েছে, টাকা রয়েছে। সেই টাকা রক্ষা করার জন্য। বিজেপি ওয়ার্শিং মেশিন। কালো হয়ে ঘুরবে সাদা হয়ে বেরিয়ে আসবে। তোমরা ভালোটা বেছে নিয়েছ”।
উন্নয়ন সম্পর্কে তিনি বলেন, অশোকনগরে গ্যাস পাওয়া গিয়েছে। প্রচুর কাজ হবে। এখানকার ছেলে মেয়েরা প্রচুর কাজ পাবে। ৭০ হাজার পরিবারে ২৪ ঘণ্টা পানীয় জল পৌঁছে দিতে দেড় হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। কৃষাণ মণ্ডি ৭টা হয়েছে। মাল্টি সুপার হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। নন্দীগ্রাম শহিদ ও নিখোঁজ পরিবারকে এক হাজার টাকা করে পেনশন দেওয়ার ব্যবস্থা করব। কৃষকদের শস্য বিমা বিনা পয়সায় করেছি। কোনও খাজনা লাগবে না। জাতি শংসাপত্র ৭দিনে পাবেন। ২ কোটি মানুষ দুয়ারে সরকারে গেছে। দেড় কোটি লাভ পেয়েছেন।
মমতা বলেন. যেভাবে আপনারা আন্দোলন করেছিলেন, তা তুলনা হয় না। নন্দীগ্রাম আমার কাছে লাকি জায়গায় ২০১৬ বিধানসভার আগে আমি ঘোষণা করেছিলাম তৃণমূল জিতবে। ২০২১ এও তৃণমূলে জিতবে। নন্দীগ্রামে প্রার্থী হতে চলেছেন মমতা। সভায় ঘোষণা মমতার।