নজরবন্দি ব্যুরোঃ একেবারে নিখুঁতভাবে সাজানো নৃশংস হত্যা। প্রেমিকা শ্রদ্ধাকে খুন করে ঠাণ্ডা মাথায় দেহের বিভিন্ন অংশ গুলো ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখছিল আফতাব। গুগল করে মানবদেহ টুকরো করা ও রক্তের দাগ পরিষ্কারের পদ্ধতি খুঁজে বের করেছিল সে। দিনে রাতে দেখত আমেরিকার বিখ্যাত অপরাধ জগতের সিরিজ ‘ডেক্সটার’। দিল্লির মেহুরাউলিতে ‘লিভ ইনে’ থাকত আফতাব আমিন পুনাওয়ালা এবং তাঁর প্রেমিকা শ্রদ্ধা। মেহরুলির সেই ফ্ল্যাটেই নতুন একটি ফ্রিজ কিনে আনেন তিনি। তারপর শ্রদ্ধার মৃতদেহের ৩৫ টুকরো করে ফ্রিজে পুরে রাখে। এই অবধি ছিল নৃশংস হত্যাকাণ্ড। কিন্তু এর পরের অংশ আরও ভয়ংকর। যা পড়লে শিউরে উঠবে যে কোন মানুষ।
আরও পড়ুনঃ টুইটার মেটার পথে হাঁটছে এবার অ্যামাজন, চাকরি যাবে বহু কর্মীর
মোট ১৮ দিন যাবৎ শ্রদ্ধার মৃতদেহের অংশগুলি বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়ে ফেলে এসেছিল আফতাব। খুনের সময় ‘ডেক্সটার’ ছাড়াও দেখত একাধিক অপরাধমূলক ওয়েব সিরিজ ও সিনেমা। পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে সাজাত খুন ও তা লোপাটের চিহ্ন। নিজের প্রেমিকার দেহের সব অংশ ফেলে এলেও মাথাটা দীর্ঘদিন ধরে ফ্রিজে রেখেছিলেন। এসময় একাধিক যৌনসঙ্গীকে আমন্ত্রণ জানাত আফতাব। প্রেমিকার মৃতদেহ ফ্রিজে রেখে তাঁর সামনেই চলত অবাধ যৌনাচার। যৌনক্রিয়ার পর প্রতি রাতে প্রেমিকার কাটা মাথা দেখতে যেতেন আফতাব। তারপর ফ্রিজে প্রেমিকার মৃতদেহের পাশে বাকি রাত কাটাতেন তিনি।

শ্রদ্ধাকে খুন করার পর একাধিক নারীর সঙ্গে ডেটিং অ্যাপে আলাপ করে আফতাব। তাঁদের নিজেরই ফ্ল্যাটে ডেকে আনে আফতাব। চড়া সুগন্ধের ধূপ ও রুম্ফ্রেশনার দিয়ে মৃত দেহের পচা গন্ধ ঢাকার চেষ্টা করতেন আফতাব। পুলিশকে জেরায় জানিয়েছেন সেই সব যৌনসঙ্গীরা। কিন্তু সে সময় কেউই এটা ভাবেননি যে ফ্ল্যাটে থাকা ফ্রিজে টুকরো টুকরো মৃতদেহ থাকতে পারে।
প্রসঙ্গত, প্রায় ছ’মাস আগে ২৭ বছরের লিভ-ইন সঙ্গী শ্রদ্ধাকে ২৮ বছরের আফতাব খুন করেন বলে অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, আফতাব এবং শ্রদ্ধা দু’জনেই মুম্বইয়ের বাসিন্দা। একটি কল সেন্টারে কাজ করার সময় ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে আলাপ হয় তাঁদের। তিন বছর আগে এক সঙ্গে থাকতে শুরু করেন আফতাব এবং শ্রদ্ধা। এর পরেই মুম্বই ছেড়ে দিল্লি চলে যান। তার কিছু দিন পর থেকে বিয়ের জন্য আফতাবকে চাপ দিতে শুরু করেন শ্রদ্ধা। কিন্তু আফতাব তাতে রাজি ছিলেন না। সেই নিয়ে রোজই চলত ঝামেলা। গত ১৮ মে তুমুল ঝগড়া বাধে দু’জনের। সে সময় শ্রদ্ধাকে গলা টিপে আফতাব খুন করেন। আর তারপরেই চলে নারকীয় কাণ্ড।
প্রেমিকা শ্রদ্ধার কাটা মাথার সামনেই আবাধ যৌনাচার! নারকীয় হত্যার কথা স্বীকার আফতাবের
সেপ্টেম্বরে শ্রদ্ধার এক বন্ধু তাঁর পরিবারকে জানান যে, আগের আড়াই মাস ধরে কোনও খোঁজ মেলেনি তরুণীর। এমনকি তাঁর মোবাইলও সুইচড অফ। এর পরেই শ্রদ্ধার পরিবার তাঁর সোশ্যাল অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখেন। দেখা যায়, আগের আড়াই মাস কোনও পোস্ট দেননি তিনি। নভেম্বরে শ্রদ্ধার বাবা বিকাশ মদন ওয়ালকার মুম্বই পুলিশের দ্বারস্থ হন। আফতাবের সঙ্গে মেয়ের সম্পর্কের কথাও জানান। এর পরেই মুম্বই পুলিশ শ্রদ্ধার ফোনের তথ্য খতিয়ে জানতে পারেন, দিল্লিতে গিয়েছিলেন তিনি। তদন্তভার হাতে নেয় দিল্লি পুলিশ। শনিবার ধরা পড়েন আফতাব। জেরায় স্বীকার করেন, বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন বলেই শ্রদ্ধাকে খুন করেছেন তিনি।