নজরবন্দি ব্যুরোঃ অবশেষে দেখা মিলল ৩-৪ কেজির পেল্লাই সাইজের ইলিশের, গত কয়েকদিন ধরেই ফেনী নদীতে ধরা পড়ছে পেল্লাই সাইজের ইলিশ। বাংলাদেশের সোনাগাজী উপজেলার বড় ফেনী নদীতে মৎস্যজীবীদের জালে ধরা পড়েছে প্রায় ৩-৪ কেজি ওজনের ইলিশ। এই মাছগুলি বিক্রিও হচ্ছে রেকর্ড দামে। এর আগের দিনও বড় আকারের ইলিশ ধরা পড়েছিল সেখানে।
আরও পড়ুনঃ ইডির পর সিবিআই তলব, পার্থ অর্পিতাকে
বড় সাইজের ইলিশ পেতে এবং মাছের দাম উঠতেই হাসি আরও চওড়া হচ্ছে মৎস্যজীবীদের। পর পর বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায় ওই নদীতে পেল্লাই সাইজের ইলিশ ধরা পড়তেই খুশিতে চোখমুখ ঝলমল করছে মৎস্যজীবী থেকে সাধারণ মানুষের। প্রশ্ন উঠছে, কেন ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার বড় ফেনী নদীতে ইদানীং বেশি বড় আকারের ইলিশ ধরা পড়ছে?

স্থানীয় মৎস্যজীবী, মৎস্য দফতরের আধিকারিক এবং ইলিশগবেষকেরা জানান, আগে ওই নদীতে ধরা পড়ত প্রচুর পরিমাণে জলের রূপালী শস্য। মাঝে কিছুদিন ওই নদীতে হারিয়ে গিয়েছিল এই সম্পদ। এখন আবার ওই নদীতে ফিরে এসেছে বড় আকারের ইলিশ। এতে যেমন মৎস্যজীবীদের মুখে হাসি ফুটেছে, তেমনই একে ভালো লক্ষণ বলেই মনে করছেন আধিকারিকরা।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক আনিছুর রহমানের বক্তব্য, ‘ফেনী নদীতে যে স্বাভাবিকতা আবার ফিরে আসছে, এটা তারই প্রমাণ। এই কারণে ওই নদীতে এখন আবার আগের মতই বড় আকারের ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে।’ ওই এলাকার বাসিন্দা হরলাল জলদাস প্রায় ৪০ বছর ধরে ফেনী নদীতে মাছ ধরেন। তিনি জানান, ১৫ থেকে ২০ বছর আগে এই নদীতে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ত। কিন্তু মাঝখানে ইলিশ কমে যায়। তবে গত ২-৩ বছর ধরে ফেনী নদীতে আবার প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে।

সোনাগাজী উপজেলার মৎস্য আধিকারিক তূর্য সাহার বক্তব্য, ‘প্রতি বছর এখানে টানা ৬৫দিন ইলিশ মাছ ধরার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা থাকে। ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই সাগরে মাছ ধরতে দেওয়া হয় না। সেই সঙ্গে অক্টোবর মাসে, যখন ইলিশের প্রজনন মরশুম সেই সময়ে, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা থাকে। এখন এই নিয়ম মেনে চলেন মৎস্যজীবীরা। তার সুফল এখন পাওয়া যাচ্ছে।’
অবশেষে দেখা মিলল ৩-৪ কেজির পেল্লাই সাইজের ইলিশের

তিনি আরও জানান, ফেনীতে যে এলাকায় বড় আকারের ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে তা সাগর থেকে খুব দূরে নয়। জোয়ারের সময়ে সমুদ্রের জল আসছে ওই নদীতে। সেই সঙ্গে আসছে ইলিশ। তিনি বলেন, ‘ফেনীতে যে ইলিশ ধরা পড়ছে তা মূলত সাগরের।’ ইলিশ গবেষকদের মতে, ৩ কেজি ওজনের একটি ইলিশ ১৫ থেকে ২০ লাখ ডিম ছাড়তে পারে। আর ২ কেজি ওজনের একটি ইলিশ ছাড়তে পারে ১৫ লাখ পর্যন্ত ডিম। আর নিয়ম মেনে চললেই এই থেকে আগামী দিনে ওই এলাকায় আরও বেশি এবং বড় আকারের ইলিশ পাওয়া যাবে।