নজরবন্দি ব্যুরোঃ দাবানলের গতিতে বাড়ছে বঙ্গ বিজেপিতে ক্ষোভের উত্তাপ। একের পর এক বিক্ষুব্ধ নেতাদের শামলাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে মুরলীধর সেন লেনের নেতাদের। এরই মধ্যে ঠাকুরবাড়িতে বিজেপির বিক্ষুব্ধ নেতাদের বৈঠক সেই ক্ষোভের চাপা আগুনে ঘৃতাহুতি দিয়েছে। যদিও পুরো বিষয়টিকে সৌজন্যতাঁর নজীর বলে কৌশলে এড়িয়ে গেলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
আরও পড়ুনঃ করোনা আক্রান্ত সুকান্ত কে ফোন মমতার, কুশল কামনা করে পাশে থাকার বার্তা।
তিন্নি বলেন, যে কেউ যেখানে যার বাড়িতে মিটিং করতেই পারেন। কে কার বাড়িতে বৈঠক করবে তা নিয়ে কী বলার আছে! শান্তনু এখন খবরের নজরে আসছেন। তাই তাঁর বাড়িতে বৈঠক হলেই খবর হচ্ছে। তিনি তো কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। যে কেউ তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারে। সৌজন্যের রাজনীতিতে তো কোনও খারাপ কিছু নেই। এ কথা তো আমি আগেও বলেছি।
দিলীপ ঘোষ নিজের কায়দায় এই প্রশ্ন এড়িয়ে গেলেও ঠাকুরবাড়ির বৈঠক নিয়ে রীতিমতো চিন্তিত বঙ্গ বিজেপি। কারণ, রবিবার ঠাকুরবাড়ির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির রাজ্য কমিটি থেকে বাদ পড়া জয়প্রকাশ মজুমদার, রীতেশ তিওয়ারি, সমীরণ সাহা এবং সায়ন্তন বসুর মতো নেতারা। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, গত কয়েকদিন যাবদ বঙ্গ বিজেপির অন্দরে যে ঘটনাবলী ঘটে চলেছে তাতে এই বৈঠক রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
বিদ্রোহের এই আগুন ধরতে শুরু করেছিল রাজ্য কমিটি থেকে শুরু করে জেলা সভাপতি পদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। তার পর থেকেই বিজেপিতে হোয়াটসঅ্যাপ বিদ্রোহ। একে একে সমস্ত গ্রুপ ছাড়লেন বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক অশোক কির্তনীয়া, গাইঘাটার বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর, হরিণঘাটার বিধায়ক অসীম সরকার, রাণাঘাটের বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারী এবং কল্যাণীর বিধায়ক অম্বিকা রায়। একইসঙ্গে বিজেপিতে ক্ষোভ দেখাতে শুরু করলেন বাঁকুড়ার চার বিধায়ক। তাঁরা হলেন,বাঁকুড়ার বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানা, ওন্দার বিধায়ক অমরনাথ শাখা, সোনামুখীর বিধায়ক দিবাকর ঘরামি এবং ইন্দাসের বিধায়ক নির্মল ধাড়া।
সম্প্রতি সেই শিবিরে নাম লিখিয়েছেন খড়গপুরের বিধায়ক হীরন চট্টোপাধ্যায় এবং গতকাল যুব নেতা শঙ্কু পণ্ডার হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ত্যাগ। সব মিলিয়ে দলের নেতৃত্বদের ক্ষোভ প্রশমনে বিজেপি যে ব্যর্থ হচ্ছে তা ধীরে ধীরে স্পষ্ট হচ্ছে। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের মন্তব্যে স্পষ্ট বিজেপির সঙ্গে মতুয়াদের সম্পর্কের দুরত্ব ক্রমশ বেড়েই চলেছে। এমনকি বিজেপির থেকে মতুয়ারা মুখ ফেরাতে শুরু করেছেন তা একেবারে স্পষ্ট।
ঠাকুরবাড়িতে বিজেপির বিক্ষুব্ধ নেতাদের বৈঠক, চিন্তায় গেরুয়া শিবির
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, অবিলম্বে ক্ষত মেরামত করতে হবে বঙ্গ বিজেপিকে। কারণ, ১৯ ভোটে বঙ্গ বিজেপির পালে হাওয়া লাগানো মতুয়া ভোট ২৪ এর নির্বাচনের জন্যেও বিরাট ফ্যাক্টর। দ্রুত ড্যামেজ কন্ট্রোল না করতে পারলে শিয়রে সঙ্কট রয়েছে।