নজরবন্দি ব্যুরোঃ আমরা যদি বঙ্গ নির্বাচনের একমাস পিছিয়ে যায় অর্থাৎ নির্বাচনের প্রাক্কালে প্রচারপর্বে বিজেপির অনেক ইস্যুর মধ্যে অন্যতম ছিল প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্মান নিধীর টাকা। সেই সময় বিজেপি বাংলার বিভিন্ন সভা মিটিং মিছিলে অভিযোগ তুলেছিল বাংলার কৃষকরা এই টাকা পাচ্ছেন না। এই বিষয়টি নিয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রীও তার সভাতে মুখ খুলেছেন। এমনকি বাংলায় ক্ষমতায় এলে বকেয়া টাকা সহ সব টাকা কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এ যাবে বলে দাবি করেছিল বিজেপি।
আরও পড়ুনঃ করোনা মৃতের দেহ ছুঁলনা কেউ, আত্মীয়সম যত্নে শেষ যাত্রার সঙ্গী রেড ভলেন্টিয়ার্স…
কিন্তু ভোট পরবর্তী সময়ে ফলাফলের ভিত্তিতে মুখ থুবরে পড়েছে বিজেপি। বাংলায় সরকার গড়েছে তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরেই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে কিষান সম্মান নিধির টাকা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। সেইমতো প্রথম কিস্তির টাকা কৃষকদের অ্যাকাউন্ট এ পৌঁছে যায়। কিন্তু এবার সেই টাকার পরবর্তী কিস্তি না দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন খোদ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
আর এই চিঠি যাওয়া নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। শাসকদলের দাবি বিজেপি বাংলায় হেরে যাওয়ার পর থেকেই প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে। আর এই প্রতিহিংসার কোপ এবার পড়েছে বাংলার কৃষকদের ওপর। তৃণমূলের আরো দাবি কৃষকদের ওপর এই বঞ্চনার যোগ্য জবাব দেবেন তাঁরা। কিন্তু হঠাৎ কেন টাকা বন্ধের জন্য চিঠি লিখলেন দিলীপবাবু? তাঁর দাবি কৃষকদের এই টাকা নিয়ে দুর্নীতি হতে পারে। কেমন হতে পারে সেই দুর্নীতি? এবিষয় নিয়েও চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীকে কয়েকটি পরামর্শ দিয়েছেন দিলীপবাবু।
চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন রাজ্যের পাঠানো কৃষকদের তালিকা যেন ভালোভাবে পরীক্ষা করা হয়। দিলীপবাবু আরো জানিয়েছেন এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে বাংলা থেকে ২৩ লক্ষ কৃষক আবেদন করলেও টাকা পেয়েছেন মাত্র ৭ লক্ষ কৃষক। বাকি কৃষকদের জন্য রাজ্য সরকার সেভাবে কোনও উদ্যোগ নেয়নি। এছাড়াও চিঠিতে সিন্ডিকেট ও কাটমানি প্রসঙ্গও উল্লেখ করেছেন রাজ্য সভাপতি। তার দাবি তৃণমূল সরকার তোষনের পথে হেঁটে অনেক যোগ্য কৃষককে তালিকা থেকে বাদ দিতে পারে। এছাড়াও চিঠিতে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন কৃষকদের সঠিক তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে যেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের প্রতিনিধি দল পাঠানো হয় রাজ্যে।
এই প্রকল্পের টাকা পেতে আধার কার্ড বাধ্যতামূলক। এই বিষয়েও দিলীপবাবু তার নির্দিষ্ট পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি চিঠি মারফত প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন বাধ্যতামূলক আধার কার্ড পশ্চিমবঙ্গে সঠিক পদ্ধতি নয়। বিজেপির রাজ্য সভাপতির মতে এই রাজ্যে তৃণমূল নেতাদের সহযোগিতায় অনেক অনুপ্রবেশকারির কাছেই আধার কার্ড আছে।
এইসব আশঙ্কার কথা জানিয়ে দিলীপবাবু পরামর্শ দিয়েছেন আপাতত টাকা বন্ধ করে আগে কৃষকদের তালিকা পরীক্ষা করা হোক এবং একইসাথে সম্পূর্ণ তালিকা পিএম কিষান পোর্ট এলে দেওয়া হোক। এবার দেখার বিষয় এই যে বাংলার কৃষকদের ভাগ্য দিলীপবাবুর এই চিঠির ওপরে দাঁড়িয়ে থাকে নাকি দ্বিতীয় কিস্তির টাকা বাংলার কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এ ঢোকে।