27th ডিসেম্বর, 2025 (শনিবার) - 6:30 অপরাহ্ন
23 C
Kolkata

‘নন্দীগ্রাম চাই’ বার্তা স্পষ্ট— শুভেন্দুর গড়ে শুরু হচ্ছে অভিষেকের ‘সেবাশ্রয় শিবির’

শুভেন্দুর বিধানসভা কেন্দ্র নন্দীগ্রামে মধ্য জানুয়ারি থেকে অভিষেকের ‘সেবাশ্রয় শিবির’, স্পষ্ট রাজনৈতিক বার্তা তৃণমূলের।

নজরবন্দি ডিজিটাল ডেস্ক

ডায়মন্ড হারবারের গণ্ডি পেরিয়ে এ বার সরাসরি নন্দীগ্রাম। রাজনৈতিক ভাবে তাৎপর্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী–র বিধানসভা কেন্দ্রে ‘সেবাশ্রয় শিবির’ শুরু করার নির্দেশ দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মধ্য জানুয়ারি থেকেই নন্দীগ্রামের দু’টি ব্লকে এই জনকল্যাণমূলক শিবির চালু করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। তৃণমূল শিবিরে একে নিছক স্বাস্থ্যশিবির নয়, স্পষ্ট রাজনৈতিক বার্তা হিসেবেই দেখা হচ্ছে—‘নন্দীগ্রাম চাই’।

কোভিড পর্বে ডায়মন্ড হারবার–এ চালু হওয়া ‘ডায়মন্ড হারবার মডেল’ বা ‘সেবাশ্রয় শিবির’ রাজ্যজুড়ে নজির তৈরি করেছিল। সেই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই অভিষেকের পরিকল্পনায় প্রথম বার তাঁর লোকসভা কেন্দ্রের বাইরে এই প্রকল্প নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আর ঘটনাচক্রে সেই এলাকা নন্দীগ্রাম—যেখানে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়–কে সামান্য ভোটে হারিয়ে রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী।

‘নন্দীগ্রাম চাই’ বার্তা স্পষ্ট— শুভেন্দুর গড়ে শুরু হচ্ছে অভিষেকের ‘সেবাশ্রয় শিবির’
‘নন্দীগ্রাম চাই’ বার্তা স্পষ্ট— শুভেন্দুর গড়ে শুরু হচ্ছে অভিষেকের ‘সেবাশ্রয় শিবির’sebaashray-camp

তৃণমূল সূত্রের খবর, জানুয়ারি মাসের ১৫ তারিখ থেকে নন্দীগ্রামের দু’টি ব্লকে সাত থেকে দশ দিনের জন্য সেবাশ্রয় শিবির চালু করা হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, অভিষেক নিজেও সেখানে উপস্থিত থাকবেন। কারণ, শিবিরের ভাবনাটি যেমন তাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত, তেমনই নন্দীগ্রামে এই উদ্যোগের রাজনৈতিক লক্ষ্য পূরণে তাঁর সরাসরি উপস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে দল। যদিও তিনি উদ্বোধনের দিন যাবেন, নাকি শিবির শেষে জনসভা করবেন—তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

জানুয়ারির শুরুতেই উত্তরবঙ্গ সফরে বেরোচ্ছেন অভিষেক। ২ জানুয়ারি বারুইপুরে যাওয়ার পর ৩ তারিখ থেকে জেলা সফর শুরু করবেন তিনি। জানুয়ারির মাঝামাঝি পূর্ব মেদিনীপুরে তাঁর জনসভা রয়েছে। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, সেই সভা থেকেই নন্দীগ্রামে সেবাশ্রয় শিবির শুরুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হতে পারে।

ডায়মন্ড হারবারে এই শিবিরের সাফল্য তৃণমূলের কাছে বড় হাতিয়ার। সেখানে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ চিকিৎসা পরিষেবা নিতে আসছেন। প্রথম দিকে বিরোধীরা একে ‘সমান্তরাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা’ বলে কটাক্ষ করলেও অভিষেক পাল্টা যুক্তি দিয়েছিলেন—জনপ্রতিনিধি হিসেবে নিজের এলাকার মানুষের জন্য পরিষেবা দেওয়ার অধিকার সকল সাংসদেরই রয়েছে। পরে ব্যারাকপুরের সাংসদ পার্থ ভৌমিকের মতো নেতারাও এই মডেল অনুসরণের কথা ভাবেন।

কিন্তু নন্দীগ্রামে সেবাশ্রয় শিবিরের রাজনৈতিক তাৎপর্য আলাদা। সংগঠন মজবুত করতে কোর কমিটি গঠন, দায়িত্ব বণ্টনের মতো অভ্যন্তরীণ কাজ তৃণমূল আগেই শুরু করেছে। তবে সেগুলি সাধারণ মানুষের চোখে পড়ে না। সেবাশ্রয়ের মতো জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি সরাসরি মানুষের সঙ্গে সংযোগ তৈরি করে—এই বিশ্বাস থেকেই নন্দীগ্রামে এই উদ্যোগ। শাসক শিবিরের আশা, স্বাস্থ্য পরিষেবার মাধ্যমে নন্দীগ্রামের মানুষের মনে যে প্রভাব পড়বে, তা আগামী রাজনৈতিক লড়াইয়ে বড় ভূমিকা নেবে।

সব মিলিয়ে, নন্দীগ্রামে অভিষেকের সেবাশ্রয় শিবির শুধু পরিষেবা নয়—এটি শুভেন্দুর গড়ে ঢুকে রাজনৈতিক জমি পুনর্দখলের প্রস্তুতি, এমনটাই মনে করছে তৃণমূলের অন্দরমহল।

সবচেয়ে আগে সঠিক খবর, প্রতি মুহুর্তে। আমাদের ফলো করুন
Google News Google News

সদ্য প্রকাশিত

Discover more from Najarbandi | Get Latest Bengali News, Bangla News, বাংলা খবর

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading