নজরবন্দি ব্যুরোঃ বিপর্যয়ের মাঝে সরকারকে ফাঁসাতে করোনা স্প্রেডের ছক! গতকাল বাংলায় বয়ে গেছে ঘুর্ণিঝড় ইয়াস। পরিস্থিতি মোকাবিলায় যখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকে মুখ্যসচিব নবান্নে রাত কাটাচ্ছেন জাগ্রত অবস্থায়, গোটা রাজ্যবাসী আতঙ্কের প্রহর গুনছে ক্ষয়ক্ষতির, ক্লান্তিহিন কান্তি বুড়ো পৌঁছে গেছে রায়দিঘি বরাবরের মতো, ব্লক ব্লকে উপস্থিত সরকারি অফিসার, তৈরি ত্রাণ শিবির।
আরও পড়ুনঃ শক্তি হারিয়ে সুপার সাইক্লোন এখন নিম্নচাপ, সাগর পাড়ে আতঙ্ক ভরা কোটালের
তখন অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন এই বিপর্যয়ে কোথায় গেরুয়া শিবিরের নেতা মন্ত্রীরা। আর সেসব প্রশ্নের মাঝেই গতকাল রাত নাগাদ ফাঁস হয় বিজেপির নেতাদের একটি হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের স্ক্রিনশট। সেখানে দেখা গেছে পুরুলিয়া জেলার বিজেপির কোর কমিটি নামক একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সেখানের নেতা নিদান দিয়েছেন, সরকার কে বিপদে ফেলতে এই বিপর্যয়ের সময়ে বেশি করে ছড়িয়ে পড়ুক করোনা।
বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর নাম থেকে গ্রুপে আসা একটি ম্যাসেজে বলা হয়েছে, “ঘর পাবে বলে প্রশাসনের ত্রাণ শিবির বা স্কুলগুলিতে বেশি করে লোক ঢুকিয়ে দাও। ফলে করোনা হবে। সরকার ফাঁসবে।” এই নির্দেশে সম্মতি দেন, রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো। যদিও ওই স্ক্রিন শটে দেখা যায় আরও অনেকে এই নির্দেশের সপক্ষে মত প্রকাশ করেননি। তার পরেই ভাইরাল হয় এই চ্যাটের স্ক্রিনশট।
সুত্রের খবর গতকাল, অর্থাৎ বুধবার বেলা বাড়তেই পুরুলিয়ায় রটে যায় এই বিপর্যয়ের দিনে ত্রাণ শিবিরে গেলে আলাদা বাড়ি পাওয়া যাবে। তার পরেই দলে দলে যাঁদের সম্পন্ন বাড়ি আচে তাঁরাও ভিড় জমাতে শুরু করেন ত্রাণ শিবির গুলিতে। পুলিশ বারবার বোঝালেও শোনেনিনি সাধারণ মানুষ। স্বাভাবিক ভাবেই সময়ের সাথে সাথে ভিড় বাড়তে থাকে শিবির গুলিতে। প্রসঙ্গত একই ঘটনা ঘটেছে বাঁকুড়ার কিছু এলাকাতেও।
তার পরই রাত নাগাদ ভাইরাল হয় পুরুলিয়ার গেরুয়া শিবিরের নেতাদের ওই কথোপকথন। যেখানে বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর নির্দেশের পর বিজেপি নেতা, সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো আবার বলেছেন, “আপনি বলে দিন। সেন্ট্রালকে বলে আমি মিডিয়াতে দিয়ে দেব। আমাদের কর্মীদেরকে বলতে হবে বেশি করে ফটো ভিডিও করে।” এই সংলাপ প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয় তীব্র বিতর্ক। এই কঠিন পরিস্থিতিতে গেরুয়া শিবিরের এই ফন্দি আঁটাকে ঘৃণ্য রাজনীতির সঙ্গে তুলনা করেছে রাজ্যের শাসক দলের নেতা কর্মীরা।
বিপর্যয়ের মাঝে সরকারকে ফাঁসাতে করোনা স্প্রেডের ছক! যদিও এই অভিযোগ একেবারে সমূলে নস্যাৎ করেছেন বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী। তাঁর মতে এসব তৃণমূলের চাল, তাঁরাই এসব করে বিজেপি নেতাদের ফাঁসাচ্ছেন। অন্যদিকে শাসক দলের অভিযোগ রাজ্যের এই সংকটের সময়ে বিজেপি নেতাদের ঘরে বসে ছকা ঘৃণ্য পরিকল্পনা মানুষের সামনে চলে আসতেই এসব মিথ্যে কথা বলছেন নিজেদের দোষ ঢাকার জন্য। জেলা পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে ইতিমধ্যে। প্রসঙ্গত এই স্ক্রিনশটের সত্যতা যাচাই করেনি নজরবন্দি।