ফের কাঠগড়ায় রাজ্যের সরকারি হোম, সেফটিপিন দিয়ে নাম খোদাই করা হল নাবালিকার শরীরে

নজরবন্দি ব্যুরো: ফের কাঠগড়ায় রাজ্যের এক সরকারি হোম। মানুষ যে হোমে নিশ্চিন্ত আশ্রয়ের জন্য পাঠানো হয়, সেখানেই চলে অকথ্য র্যাগিং। আর সেখানকার আবাসিকরাই নির্যাতন চালায় নবাগতদের উপর। প্রমাণ লিলুয়ার হোম কাণ্ড। সেখানে ফের অত্যাচারের শিকার হল এক নাবালিকা। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় সেফটিপিন দিয়ে খোদাই করে দেওয়া দিদিদের নামের আদ্যাক্ষর।
আরও পড়ুন: দীর্ঘদিনের বঞ্চনার প্রতিবাদে কুড়মিদের অবস্থান, অবরুদ্ধ জাতীয় সড়ক
চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার লিলুয়ায়। নির্মম, অমানবিক এই ঘটনায় সরব হয়েছেন ওই নাবালিকার বাড়ির এলাকা চুঁচুড়ার মানুষ। যারা এই নির্যাতনের সঙ্গে যুক্ত তাদের কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছেন নির্যাতিতা ওই নাবালিকার বাবা-মা।
জানা গিয়েছে, বাবা-মায়ের সঙ্গে ঝগড়া, অভিমান করে তিন সপ্তাহ আগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল চুঁচুড়ার ওই নাবালিকা। এরপর স্থান হয়েছিল লিলুয়ার সরকারি হোমে। পরিবারের লোক হোমের সঙ্গে যোগাযোগ করে আইনি জটিলতা কাটিয়ে যখন মেয়েকে ফিরে পান তখনই ধরা পড়ে সে অকথ্য অত্যাচারের শিকার। তাঁর সারা শরীরে নির্যাতনের ছাপ স্পষ্ট। এরপরই লিলুয়া হোমের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ তুলে চুঁচুড়া সদর মহকুমা শাসকের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা।
জানা গিয়েছে, তিন সপ্তাহ আগে ঘর ছাড়া নাবালিকাকে হাওড়া স্টেশনে ঘুরতে দেখে জিআরপি উদ্ধার করে। চাইল্ড লাইনের মাধ্যমে লিলুয়া হোমে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। এরপর আইনের দ্বারস্থ হয়ে মেয়েকে ফিরে পাওয়ার আবেদন জানায় পরিবার।
তবে মেয়েকে ফিরিয়ে আনতে গিয়ে রীতিমতো শিউরে ওঠেন নাবালিকার বাবা-মা। দেখেন মেয়ের হাতে সেফটিপিন দিয়ে ইংরেজি হরফ খোদাই করা রয়েছে। সে জানায় তাকে লিলুয়া হোমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে হোমের দিদিরা ভয় দেখিয়ে তার হাতে সেফটিপিন দিয়ে দিদিদের নামের আদ্যাক্ষর খোদাই করে দেয়। অভিযোগ, তাঁকে বলা হয়, তাদের যাতে মনে রাখে, সেজন্যই তার হাতে সেফটিপিন দিয়ে খোদাই করে দেওয়া হয়েছে।
নির্যাতিতার শিকার ওই নাবালিকা আরও জানায়, হোমে এরকম আরও অনেক মেয়ের হাতে এই নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। সদর মহকুমা শাসক সৈকত গঙ্গোপাধ্যায় জানান, ওই নাবালিকার পরিবার তাঁর কাছে এসেছিল। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য তিনি কর্তৃপক্ষকে জানাবেন।
ফের কাঠগড়ায় রাজ্যের সরকারি হোম, এদিকে, এই ঘটনার পরই বুধবার লিলুয়া হোমে বেলুড় থানার আধিকারিক ও শিশু অধিকার কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী হোম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। তবে এই বিষয়ে হোম কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এদিকে নাবালিকার বাবা-মা দাবি করেছেন, তাঁদের মেয়ের এই অবস্থার জন্য যারা দায়ী তাদের যেন কঠোর শাস্তি হয়। যদিও সেখানে পুলিশ গিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।