ভোটকর্মীদের ১০০ শতাংশ নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে এবার শিক্ষকদের পাশে দাঁড়ালেন রবীন দেব

নজরবন্দি ব্যুরো: ভোটকর্মীদের ১০০ শতাংশ নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে এবার শিক্ষকদের পাশে দাঁড়ালেন রবীন দেব. আজ ,বৃহস্পতিবার মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল আরোরার সঙ্গে বৈঠকে বসেন এডিজি(আইনশৃঙ্খলা) জ্ঞানবন্ত সিং। সেইসঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা। রাজ্যের শাসকদল ছাড়াও বিরোধী দলনেতারা এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। আজকে নির্বাচন কমিশনের বৈঠকে রাজ্যের আইনশৃংখলার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয়। ভোটের সময় হিসাত্মক ঘটনা এঁড়াতে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার। এমনকি এদিন সমস্ত দলগুলির পক্ষ থেকে কমিশনের কাছে নিরপত্তা নিয়ে করা নানা অভিযোগ গুলি নিয়ে খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন সুনীল আরোরা।
আরও পড়ুন: বঙ্গ সফরে এসে ইসকন মন্দিরে যাবেন শাহ, যোগ দেবেন বিজেপির রথযাত্রাতেও
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯ টা নাগাদ বৈঠকে বসেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার। সূত্রের খবর রাজ্যের দেওয়া আইনশৃঙ্খলা নিয়ে দেওয়া রিপোর্টে সন্তুষ্ট নয় কমিশন । তানিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। ২১ এর নির্বাচনে নিরাপত্তা নিয়ে এদিন সিপিএম নেতা রবিন দেব প্রশ্ন তোলেন । তিনি বলেন,” রাজ্যে ভুয়ো ভোটারদের বাদ দিতে হবে। ভোটার তালিকায় বহু ভোটারের নাম বাদ পড়েছে। অথচ মৃত ভোটারের নাম বাদ যায়নি। স্ক্রুটিনি করা হোক। পর্যবেক্ষক যাঁরা থাকেন, তাঁরা পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করেন। পারস্পরিক প্রতিযোগিতা করে তৃণমূল বিজেপি ভয়ের পরিবেশ তৈরি করছে। ধর্মের ভিত্তিতে ভোট চাইছে, এটা বন্ধ করতে হবে।”এছাড়াও ভোটকর্মীদের পাশে দাঁড়ান তিনি। তাঁদের ১০০ শতাংশ নিরাপত্তার দাবি জানিয়ে সরব হন তিনি।
প্রসঙ্গত, ভোটুকর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে বুধবার অর্থাৎ ২০শে জানুয়ারী বেলা দেড়টা নাগাদ কলকাতার জিপিও-র কাছে সিইও অফিসের সামনে বিক্ষোভে বসেন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা। একগুচ্ছ দাবি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে ডেপুটেশনও জমা দেন তাঁরা। বুধবার বিক্ষোভ প্রদর্শনের পর অ্যাডিশনাল চিফ এলেক্টরাল অফিসার শৈবাল বর্মন এবং ডেপুটি সিইও বুলান ভট্টাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তাঁদের দাবি তুলেন তাঁরা। এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অ্যাডিশনাল চিফ এলেক্টরাল অফিসার শৈবাল বর্মন শিক্ষক শিক্ষাকর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্যমঞ্চের প্রতিনিধিদের আশ্বস্ত করেন কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের যে ফুল টিম আসছে তাঁদের কাছে এই সকল দাবিদাওয়া তুলে করা হবে। ভোট কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে বলেও এদিন তিনি আশ্বাস দেন।
বুধবার নির্বাচন কমিশনের কাছে যে ডেপুটেশন জমা দেন তাতে বলা হয়েছে প্রতিটি বুথে সেন্ট্রাল ফোর্স সহ প্রতিটি ভোট কর্মীর জন্য সুনিশ্চিত নিরাপত্তার ব্যবস্থা এবং তার লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। প্রতিটি বুথে প্রিজাইডিং অফিসারের সহিত ৬ জন কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে ভোটার এবং ভোট কর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। স্পর্শকাতর বুথগুলিতে দ্বিগুণ হারে এই নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যবস্থা রাখতে হবে। ডিউটিরত অবস্থায় হিংসাত্মক কোন ঘটনায় ভোট কর্মীর মৃত্যু হলে ৫০ লক্ষ টাকা আর সাধারণ মৃত্যুর ক্ষেত্রে ৩০ লক্ষ টাকা তার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসাবে দিতে হবে এবং পরিবারের একজনকে চাকুরি দিতে হবে।
ভোটকর্মীদের ১০০ শতাংশ নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে এবার শিক্ষকদের পাশে দাঁড়ালেন রবীন দেব। হতাহতের জন্য আগে থেকে প্রতিটি ভোট কর্মীর জন্য বীমার ব্যবস্থা করে রাখতে হবে। ভোট গ্রহণের শেষে ভোট বাক্স জমা দেওয়ার পর রিলিজ অর্ডার দিয়ে দিলেই নির্বাচন কমিশনের সমস্ত দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। ভোট গ্রহণের জন্য ভোট কর্মীদের বাড়ি থেকে বাহির হওয়ার পর থেকে বাড়ি না ফেরা পর্যন্ত তাঁর জীবনের সমস্ত নিরাপত্তার ভার নির্বাচন কমিশনকে নিতে হবে। কোভিড পরিস্থিতিতে ভোট কর্মী এবং ভোটারদের সুরক্ষিত রাখার জন্য সমস্ত রকম উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রতিটি বুথে ভোট কর্মীদের থাকা, খাওয়া ও সঠিকভাবে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া পরিচালনার উপযুক্ত পরিকাঠামোর ব্যবস্থা রাখতে হবে।