রাজ্যের প্রথম বিজনেস কনক্লেভের মঞ্চ থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র অভিযোগ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার ধনধান্য স্টেডিয়ামে আয়োজিত শিল্প সম্মেলনে তিনি বলেন, “GST-র নামে কেন্দ্র রাজ্য থেকে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা নিয়ে গিয়েছে।” একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় সংস্থার মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের হয়রানির অভিযোগও করেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ব্যবসা চালানোর ক্ষেত্রে স্বাধীনতা অত্যন্ত জরুরি। শিল্পমঞ্চ থেকেই তাঁর স্পষ্ট বার্তা—সরকারের কাজ সহযোগিতা করা, নিয়ন্ত্রণ নয়। “শিল্পপতিদের কাজ করতে দিতে হবে। সব বিষয়ে সরকারের নাক গলানো ঠিক নয়,” বলেন তিনি।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর বক্তব্যে স্মরণ করিয়ে দেন, এক সময় বাংলাকে নিয়ে প্রচলিত ছিল ‘এখানে কিছুই হয় না’—এই কটাক্ষ। সেই ধারণাকেই তিনি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেই রাজ্য ধীরে ধীরে শিল্প, পরিষেবা এবং লজিস্টিক সেক্টরে দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা করে নিয়েছে।

বিশেষ করে লজিস্টিক ও ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্পে (MSME) বাংলার অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, এই ক্ষেত্রগুলির সঙ্গে রাজ্যে এক কোটিরও বেশি মানুষ প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত।
এ বছর বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের পরিবর্তে রাজ্য সরকার প্রথমবার বিজনেস কনক্লেভ আয়োজন করেছে। শিল্পমঞ্চে উপস্থিত ছিলেন হর্ষ নেওটিয়া, সঞ্জীব পুরি, সঞ্জীব গোয়েঙ্কা, রুদ্র চট্টোপাধ্যায়, সঞ্জয় বুধিয়া, উমেশ চৌধুরীর মতো দেশের প্রথম সারির শিল্পপতিরা।


উল্লেখযোগ্য ভাবে, এই কনক্লেভের আগের দিনই রাজ্যে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের পৃথক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দুই দিনের কর্মসূচির মধ্য দিয়ে শিল্প ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলার অবস্থান তুলে ধরাই ছিল রাজ্য সরকারের লক্ষ্য।
২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে এই শিল্প সম্মেলনের রাজনৈতিক তাৎপর্যও কম নয়। শিল্পমঞ্চ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করতে চাইলেন—পশ্চিমবঙ্গ বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত, ব্যবসাবান্ধব এবং শিল্পের বিকাশে আগ্রহী। কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক, GST বণ্টন, কেন্দ্রীয় সংস্থার ভূমিকা এবং ব্যবসায়ীদের স্বাধীনতা—সব মিলিয়ে এ দিনের বক্তব্যে শিল্পের পাশাপাশি রাজনীতির বার্তাও স্পষ্ট করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।









