নজরবন্দি ব্যুরো: এজেন্সী মুক্ত করে সরাসরি রাজ্যের হস্তক্ষেপ দাবি। চরম সংকটে ICT কম্পিউটার শিক্ষক-শিক্ষিকারা! পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ও সরকারী অধীনস্ত স্কুলগুলিতে কম্পিউটার প্রশিক্ষকদের চাকরী হারানোর সমস্যা নিয়ে রাজ্যসরকারের দারস্থ হলো ওয়েস্ট বেঙ্গল ICT স্কুল কোর্ডিনেটর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোশিয়ান। বর্তমান পরিস্হিতিতে স্কুল বহুদিন বন্ধ থাকায় চাকরী সঙ্কটে পড়েছেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, কম্পিউটার শিক্ষা থেকে শিক্ষার্থীরাও বঞ্চিত হবে বলেও জানিয়েছেন। পাশাপাশি কম্পিউটার সম্পর্কিত অন্যান্য কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে তাঁদের আশঙ্কা।
আরও পড়ুনঃ আজ মৃত্যু ৬১ জনের। রাজ্যে লাগামহীন করোনা ভাইরাস।
দীর্ঘ সাত বছর ধরে তাঁরা বিভিন্নভাবে কোম্পানীর শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ । ২ রা এপ্রিল ২০১৯ , এ তাঁদের ওপর মাত্রাছাড়া শোষণ চালানো হয়। এনিয়ে IL & FS এর কাছে অভিযোগ করতে গেলে গুন্ডাবাহিনী দিয়ে লাঠিচার্জ করানো হয়। সেদিন লাঠির আঘাতে ৪৫ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা গুরুতরভাবে আহত হন। এবং ১৯ জন শিক্ষকের নামে আইনি জটিলতার সৃষ্টি করা হয়। যার এখনও কোনও সুরাহা হয়নি। মেমো নম্বর 20-SE(P&B)/ICT-09-2019dt. অনুযায়ী I.C.T প্রজেক্টের প্রতিটি স্কুলে প্রজেক্ট কস্ট খুবই সামান্য দেখানো হয়। সেক্ষেত্রে ইনস্টাক্টরকে বেতন দিয়ে যৎসামান্য বেতন পান শিক্ষকরা।
এজেন্সী মুক্ত করে সরাসরি রাজ্যের হস্তক্ষেপ দাবি। তাঁরা আরও বলেন, ৫ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত ক্লাসের ছাত্র-ছাত্রীদের কম্পিউটারের theory ও practical ক্লাস নেওয়া, প্রতি সপ্তাহে ২৪ টি করে ক্লাস নেওয়ার পাশাপাশি অতিরিক্ত ক্লাস নেওয়া, দৈনিক ইমেল চেক করা এবং প্রয়োজনীয় তথ্য পাঠানো , স্কুল শিক্ষকের বেতন জমা দেওয়ার কাজ, কন্যাশ্রী, শিক্ষাশ্রী , ঐক্যশ্রী , প্রাক ম্যাক্টিক বৃত্তি , ডেটা এন্ট্রি ছাড়াও কম্পিউটার সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ তাঁরা করে থাকেন।
শুধু তাই নয়, অতিরিক্ত পারিশ্রমিক ছাড়াই যে কোনও ছুটিতে তাঁরা অনলাইন কাজ করেন।বর্তমান সরকার ১৪ ই অগস্ট ,২০১৯ থেকে ICT কম্পিউটার শিক্ষক শিক্ষিকাদের মাসিক বেতন ১০,০০০ টাকা করলেও, সেই টাকা তাঁরা পান না বলে অভিযোগ করেন ওয়েস্ট বেঙ্গল ICT স্কুল কোর্ডিনেটর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোশিয়ানের প্রেসিডেন্ট। তাঁরা আজ সরকারের কাছে যে আবেদনটি করেছেন, তাতে তাঁরা কিছু আর্জি জানান। সেগুলি হলো- ১. ICT কম্পিউটার শিক্ষক শিক্ষ্কাদের এজেন্সি মুক্ত করে সরাসরি সরকারি চুক্তি মূলক পদে বহাল করা। ২. উপযুক্ত সম্মান দেওয়া। ৩.কম্পিউটার সাবজেক্টিকে সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করা। ৪.বাংলার শিক্ষা অনলাইন পোর্টালে কম্পিউটার শিক্ষক শিক্ষিকাদের নাম ও কম্পিউটার বিষয়টি নাম নথিভুক্ত করা।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-ছাত্রীদের বিনামূল্যে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে কম্পিউটার শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার জন্য বর্তমান রাজ্য সরকার রাজ্যের বিদ্যালয়গুলিতে ২০১৩ সাল থেকে ICT প্রকল্পের তত্ত্বাবধানে মোট চারটি ধাপে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার জন কম্পিউটার শিক্ষক শিক্ষিকা নিয়োগ করেন।যদিও রাজ্য সরকার এই প্রকল্পের দায়ভার তুলে দেয় রাজ্য সরকারের অধীনস্থ WEBEL নামক সংস্থার হাতে। সূত্রের খবর, রাজ্য সরকার এই প্রকল্পের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করলেও তার সুবিধা স্কুল বা এই সমস্ত কম্পিউটার শিক্ষক-শিক্ষিকারা কেউই পায় না। Memo No:-20-SE(P&B)/ICT-02/2017, Dated-09/January/2029 অনুযায়ী রাজ্য সরকার এই প্রকল্পে প্রতিবছর ৩ লক্ষ ৪৯ হাজার ৩৫৬ টাকা ব্যয় করেন।
অবাক করার মত কথা হলেও এটা সত্যি যে তা সত্ত্বেও এই সমস্ত ICT কম্পিউটার শিক্ষকদের বেতন মাত্র ৭ হাজার টাকা, যা বর্তমান মূল্য বৃদ্ধির যুগে নগন্য বা একজন দিনমজুরের থেকেও কম। এক্ষেত্রে বলাবাহুল্য , রাজ্য সরকার গত ২০১৯ সালের August মাসে একটি বিজ্ঞপ্তি (316-SE(P&B), Dated-14/August/2019) দিয়ে বলেন যে- রাজ্যের ICT কম্পিউটার শিক্ষক শিক্ষিকাদের বেতন ১০ হাজার টাকা এবং প্রতি বছর ৩% ইনক্রিমেন্ট চালু করা হলো। কিন্তু হাস্যকর বিষয়- তারপর এক বছর কেটে গেলেও এখনো পর্যন্ত এই সমস্ত কম্পিউটার শিক্ষক-শিক্ষিকারা তাদের বেতনের এই সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিতই রয়ে গেছেন।কম্পিউটার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কথা অনুযায়ী :- রাজ্য সরকার প্রতিবছর প্রত্যেকটি স্কুল পিছু যে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেন তার বেশিরভাগটাই WEBEL নিযুক্ত থার্ডপার্টি কোম্পানি ( SchoolNet India Pvt.Ltd, Extramarks, Acess) মুনাফা হিসাবে পায়।