নজরবন্দি ব্যুরোঃ আমার কেবিনে যেন রত্না না আসে, এভাবেই এসএসকেএম হাসপাতালের সুপারকে চিঠি দিলেন রত্নার স্বামী শোভন চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী। আজ(বুধবার) নারদ মামলার শুনানির পর শোভন চট্টোপাধ্যায়ের পক্ষ থেকে তাঁর আইনজীবী প্রতিম প্রিয় দাশগুপ্ত এসএসকেএম হাসপাতালের সুপারকে চিঠি লিখে অনুরোধ জানান, যতক্ষণ না শোভন নিজে অনুমতি দিচ্ছেন, ততক্ষণ স্ত্রী রত্না সহ তাঁর ছেলে সপ্তর্ষি এবং মেয়ে সুহানিকেও যেন তাঁর কাছে ঘেঁষতে না দেওয়া হয়।
আরও পড়ুনঃ বড় ঘোষণা করলো কেন্দ্র, ১৫ই জুনের মধ্যে সব রাজ্য পাবে ৫ কোটি ৮৬ লক্ষ ভ্যাকসিন
কিন্তু কেন এমনটা হল? সোমবার নারদ মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট বিচার বিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেওয়ার পর প্রেসিডেন্সি জেলে নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতার প্রাক্তন মেয়র কে। মঙ্গলবার অসুস্থ হয়ে পড়ায় এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয় তাঁকে। একই দিনে স্বামীর সাথে দেখা করতে ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন রত্না। আর তাতেই চটেছেন শোভন। একদিকে যখন কেঁদে ভাসাচ্ছেন বৈশাখী তখন রত্নার এই কাছে আসার ‘চক্রান্ত’ ভালভাবে নেননি তিনি!
শোভনের ধারণা রত্না যদি তাঁর সাথে দেখা করতে আসেন তাহলে তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়বেন! আইনি নোটিশ বা চিঠিতে কাননের আইনজীবী লিখেছেন, “শোভন-রত্নার বিবাহ-বিচ্ছেদের মামলা এখনও চলছে। এই পরিস্থিতিতে স্ত্রী রত্নাকে হাসপাতালে তাঁর কেবিনে ঢুকতে দিলে অশান্তির ঘটনা ঘটতে পারে। তাতে তাঁর শরীরের অবস্থার আরও অবনতি হতে পারে, এমনটাই আশঙ্কা করছেন শোভন।” রত্নার পাশাপাশি ছেলে সপ্তর্ষি এবং মেয়ে সুহানির আসাতেও লাগাম লাগিয়েছেন শোভন। যদিও বৈশাখীকে নিয়ে তাঁর কোন আপত্তি নেই বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, সোমবার শোভনের গ্রেফতারির খবর পেয়ে বেহালা পূর্বের নব নির্বাচিত বিধায়িকা অর্থাৎ শোভন জায়া রত্না দৌড়ে যান সিবিআই দফতরে। অন্যদিকে দলের নেতাদের গ্রেফতারিতে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি ধর্ণায় বসেন একেবারে নিজাম প্যালেসের অন্দরে। পরে চার জনের জামিনের খবর পাকা করে ধর্না তোলেন মমতা! ব্যাস এতেই গলে যান বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি চরম আনুগত্য প্রকাশ করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, “শোভনের পাশে যেভাবে মুখ্যমন্ত্রী এসে দাঁড়ালেন, ওনার জন্য আমি আজ থেকে প্রাণ দিতেও প্রস্তুত।” বৈশাখী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী দেখিয়ে দিলেন যে, উনি ক্যাপ্টেন। তিনি যে সবার মুখ্যমন্ত্রী সেটা আবারও একবার প্রমাণ করলেন।”
কিন্তু তারপরেই বদলে যায় চিত্র। জামিন খারিজ হয়ে শোভনের ঠিকানা হয় প্রেসিডেন্সি জেল। রাতেই জেলের বাইরে পৌঁছে যান বৈশাখী। কাঁদতে কাঁদতে চিৎকার করে বলতে থাকেন তাকেও জেলে নিয়ে যেতে হবে। অন্যথায় সেখানেই প্রাণত্যাগ করবেন। যদিও পরে সেখান থেকে চলে আসেন তিনি। এরপর শরীর খারাপ হয় নারদে ধৃত ৩ নেতার। সবাররই ঠিকানা এখন পিজি হাসপাতালের উডবার্ণ ওয়ার্ড। আমিও উডবার্নে ভর্তি হব, এভাবেই পিজি হাসপাতালের সামনে আবদার করতে থাকেন শোভনের প্রিয় বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।