Cyclone: মে মাস মানেই ঘুর্নিঝড়, কিন্তু ঘুর্নিঝড় বা সাইক্লোন কাকে বলে জানেন কি?

নিজস্ব প্রতিনিধি, নজরবন্দি.ইন

নজরবন্দি ব্যুরোঃ সাধারণত সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড় পৃথিবীর মহাসাগরীয় অঞ্চলে গড়ে ওঠে। এর কারণ হলো সাইক্লোন গড়ে উঠতে গেলে যে কয়েকটি বিষয় অত্যন্ত জরুরী তারমধ্যে সবগুলি মহাসাগরীয় অঞ্চলে পাওয়া যায়, সেই কারনে বেশিরভাগ ঘূর্ণিঝড় গুলি মহাসাগরে গড়ে ওঠে। এই ঘুর্ণিঝড় কখনো তা মহাসাগরে স্মৃষ্টি হয়ে মহা সাগরেই বিলীন হয়ে যায় এবার কখনো তা স্থলভাগের উপর আছড়ে পড়ে।

আরও পড়ুনঃ অশনি আসছে, ঘুর্নিঝড়ের যাবতীয় আপডেট পেতে এখানে ক্লিক করুন।

সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হতে গেলে কমপক্ষে দেড়শ থেকে দুশ বর্গ কিলোমিটার বিস্তীর্ণ এলাকা প্রয়োজন হয়। যেখানে সূর্যের তাপে গড় তাপমাত্রা পরিমাণ হবে মোটামুটি ৩০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড এর আশেপাশে। আর এই ধরনের বিস্তীর্ণ এলাকা একমাত্র মহাসাগরে দেখা যায়। এক্ষেত্রে একটা কথা মনে রাখা দরকার সাইক্লোন এর বিস্তার ৫০০ থেকে ৬০০ বর্গমিটার স্থানজুড়ে হতে পারে।

বেশিরভাগ সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড় গুলি বিষুব অঞ্চল বা নিরক্ষীয় অঞ্চলে স্মৃষ্টি হয় এর কারণ হলো – সাইক্লোন সৃষ্টি হতে গেলে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের বায়ুমন্ডলে উপর একটি নিম্নচাপ কেন্দ্র সৃষ্টি হতে হয় আর বাতাসের নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে গেলে প্রয়োজন গড় ২৫ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা। পৃথিবীর বায়ুচাপ ও তাপ বলয় গুলির মধ্যে একমাত্র নিরক্ষীয় অঞ্চলে এই ধরনের তাপমাত্রা দেখা যায়। এই কারণে বেশিরভাগ ঘূর্ণিঝড় বা সাইক্লোন গুলির উৎপত্তি হয় নিরক্ষীয় অঞ্চলে।

সমুদ্রের উপরে একটি বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রচন্ড উত্তাপ হওয়ার ফলে সেখানকার জল বাস্পে পরিণত হয় ও সাথে সাথে সংলগ্ন বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। আমরা জানি কোন স্থানের বায়ু উত্তপ্ত হলে তা ধীরে ধীরে উপরের দিকে উঠে যায়, কারণ হালকা হয়ে যায়, সাথে সাথে এই ধরনের বায়ু প্রচন্ড জলীয়বাষ্প ধারণে সক্ষম হয়ে পড়ে। বিস্তীর্ণ অঞ্চল এর বাতাস জলীয় বাষ্পপূর্ণ ও হালকা হয়ে একটি উষ্ণতা নিয়ে উপরের দিকে অবস্থান করে কিন্তু ওই বিশাল এলাকা হঠাৎ করে বায়ুশূন্য হয়ে যাওয়ার ফলে নিম্নচাপের সৃষ্টি করে। আর একটি সাইক্লোন সৃষ্টি হওয়ার পিছনে এটি হলো প্রধান এবং প্রথম ঘটনা। যেহেতু ওই বিশাল অঞ্চলটি বায়ুশূন্য রূপে অবস্থান করে এই কারণে মেরু অঞ্চলের দিক থেকে অর্থাৎ উচ্চচাপ যুক্ত অঞ্চল থেকে অপেক্ষাকৃত শীতল বায়ু ওই নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে প্রবল গতিতে ছুটে আসে।

মে মাস মানেই ঘুর্নিঝড়, কিন্তু ঘুর্নিঝড় বা সাইক্লোন কাকে বলে জানেন কি?
মে মাস মানেই ঘুর্নিঝড়, কিন্তু ঘুর্নিঝড় বা সাইক্লোন কাকে বলে জানেন কি?

মেরু অঞ্চলের শীতল বায়ু যখন ওই নিম্নচাপ অঞ্চলে ছুটে আসে তখন প্রচুর জলীয় বাষ্প বহন করে নিয়ে আসে এবং ওই স্থানে এসে আবার উষ্ণ হয়ে পড়ে এর ফলে ওই সকল বাতাস এক ধরনের আয়ন গ্রহণ করে নিজের ভিতর গতির সৃষ্টি করে। আমরা জানি বাষ্পের গতি বা বল কতখানি। ওই নিম্নচাপ যুক্ত অঞ্চলে প্রচন্ড বাষ্প যুক্ত বাতাস ধীরে ধীরে প্রবল গতিসম্পন্ন হয়ে ওঠে ও আশেপাশের থেকে আরো বাতাস ছুটে এসে একটি কেন্দ্র বিন্দুতে মিলিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। মনে রাখতে হবে একটি সাইক্লোন এর এই সকল প্রক্রিয়া গুলি যে গতির ফলে ঘটে সেই গতির সৃষ্টি হয় সমুদ্রের জল যখন বাষ্পে রূপান্তরিত হয় সেই বাষ্পের কারণে।

একবার ওই নিম্নচাপ অঞ্চলে এই ধরনের গতি সৃষ্টি হয়ে গেলে উষ্ণতার কারণে প্রতি মুহূর্তে সেখানে বাষ্পের সৃষ্টি হয় ও ধীরে ধীরে ওই সাইক্লোন এর গতি বৃদ্ধি পায় এ কারণে একটি সাইক্লোন / ঘূর্ণিঝড় যতক্ষণ সমুদ্র এর মধ্যে অবস্থান করে ততক্ষণ জলীয় বাষ্পের অভাব বোধ না করার জন্য গতি বাড়তে থাকে। তারপর যখন ওই সাইক্লোন নিকটবর্তী কোন স্থলভাগের উপর এসে পড়ে তখন ধীরে ধীরে জলীয় বাষ্পের সৃষ্টির প্রক্রিয়া কম হয়ে যায় বলে তা গতি হারাতে থাকে ও ধীরে ধীরে একসময় বিলীন হয়ে যায়।

Cyclone: মে মাস মানেই ঘুর্নিঝড়, কিন্তু ঘুর্নিঝড় বা সাইক্লোন কাকে বলে জানেন কি?

যেহেতু সাইক্লোন ঘূর্ণিঝড় বাতাসের একটি ঘূর্ণন প্রক্রিয়া তাই এর একটা কেন্দ্রবিন্দু থাকে যাকে আমরা সাইক্লোনের চোখ বলে জেনে থাকি। একটি মজার বিষয় হলো সাইক্লোনের কেন্দ্রবিন্দু বা চোখ অঞ্চলে বাতাসের তেমন কোন গতি অনুভূত হয় না যেখানে বাইরের দিকের গতি থাকে ১০০ থেকে ২০০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা।

সমুদ্রের মধ্যে এই ধরনের বাতাসের ঘূর্ণন গতির সৃষ্টি হলেই যে তাকে সাইক্লোন বলা হবে এমন কোন কথা নয়, যদি সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণন বাতাসের গতি ৬২ কিলোমিটার এর বেশি হয় তবে তাকে ঘূর্ণিঝড় বলা হয়। ১১৫ কিলোমিটার এর বেশি গতিসম্পন্ন ঘূর্ণিঝড় কে তীব্র ঘূর্ণিঝড় বলা হয়। ১৮০ কিলোমিটার এর বেশি গতিসম্পন্ন কে প্রবল ধ্বংসাত্মক ঘূর্ণিঝড় বলা হয়। আর যদি ওই বায়ুর গতি ৬২ কিলোমিটার এর কম হয় তবে তাকে মৌসুমী ঝড় বলা হয়।

মে মাস মানেই ঘুর্নিঝড়, কিন্তু ঘুর্নিঝড় বা সাইক্লোন কাকে বলে জানেন কি?

Cyclone: মে মাস মানেই ঘুর্নিঝড়, কিন্তু ঘুর্নিঝড় বা সাইক্লোন কাকে বলে জানেন কি?

এই ধরনের সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড় গুলির সৃষ্টি হওয়ার স্থান অনুযায়ী এদের আলাদা আলাদা নামকরণ করা হয়েছে – ভারত মহাসাগর ও দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে নাম সাইক্লোন, দক্ষিণ চীন সাগরে এর নাম টাইফুন, আবার আমেরিকার আশেপাশে গঠিত সাইক্লোন এর নাম টর্নেডো। টর্নেডো একটি প্রবাল গতিসম্পন্ন ঘূর্ণিঝড় যা ধ্বংসাত্মক রূপ নিয়ে থাকে। ভারত মহাসাগরে উৎপন্ন ১৯৭০ সালের ফাইলিন ছিল সব থেকে তীব্রতর ও ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় যার প্রতি ঘণ্টায় গতিবেগ ছিল ১৮০ কিলোমিটার এর উপর। এর ফলে প্রায় ৫ থেকে ৬ লক্ষ মানুষের জীবন হানি হয়েছিল।

Related News

Health

ফের দেশে বাড়ছে করোনার প্রকোপ, গত এক দিনে মৃত্যু ৪ জনের

Corona Virus: ফের দেশে বাড়ছে করোনার প্রকোপ, গত এক দিনে মৃত্যু...

গত ২৪ ঘণ্টায় এ দেশে করোনামুক্ত হয়েছেন ৩২৫ জন। সুস্থতার হার ৯৮.৮১ শতাংশ। শুধু দেশেই নয় গোটা বিশ্বব্যাপী ফের করোনার বাড়বাড়ন্ত লক্ষ্য করা যাচ্ছে। WHO দেওয়া তথ্য বলছে গোটা দুনিয়ায় করোনার দাপট ৫২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের নির্দেশ, হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে SSC

প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের নির্দেশ, হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে SSC

রায় ঘোষণার পরদিনই দলে দলে চাকরিচ্যুতরা ভিড় জমিয়েছেন ধর্মতলায় গান্ধীমূর্তির পাদদেশে। তাঁদের সাফ প্রশ্ন, “সিবিআই-এর মতো সংস্থা যদি এতদিন ধরে তদন্ত করে যোগ্য অযোগ্য বাছতে অপারগ হয় তাহলে কি করে হবে?”
আজ থেকে শুরু তাপপ্রবাহের স্পেল, উত্তরেও চড়ছে পারদ, কেমন থাকবে আবহাওয়া?

আজ থেকে শুরু তাপপ্রবাহের স্পেল, উত্তরেও চড়ছে পারদ, কেমন থাকবে আবহাওয়া?

উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায় পারদ চড়বে। নীচের তিন জেলায় মালদহ, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুরে ক্রমেই তাপমাত্রা বাড়বে। তবে উপরের জেলাগুলিতে যেমন- দার্জিলিং, কোচবিহার, জলপাইগুড়িতে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা বৃষ্টি হতে পারে বলেই জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
নিষিদ্ধ পল্লীর বাচ্চাদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্য, প্রতিনিয়ত সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে কুমারটুলি ফুটবল কোচিং সেন্টার

নিষিদ্ধ পল্লীর বাচ্চাদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্য, প্রতিনিয়ত সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে কুমারটুলি ফুটবল কোচিং...

কুমারটুলি ফুটবল কোচিং সেন্টারের সম্পাদক রাজীব গুহ ও তাঁর বন্ধু সঞ্জয় ঘোষ রায় যিনি ইস্টবেঙ্গল মোহনবাগান মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে খেলেছেন, তাঁদের উদ্দেশ্য ভালো মানের খেলোয়ার তৈরি করে ময়দানে পাঠানো ও বাংলা তথা ভারতের প্রতিনিধিত্ব করানো।
আপাতত তিহাড় জেলেই থাকবেন কেজরীওয়াল, ৭ মে তাঁকে আদালতে হাজির করানো হবে

আপাতত তিহাড় জেলেই থাকবেন কেজরীওয়াল, ৭ মে তাঁকে আদালতে হাজির করানো হবে

তিনি এ জন্য ১০০ কোটি টাকা ঘুষও নিয়েছিলেন। সেই টাকা পঞ্জাব এবং গোয়ার বিধানসভা নির্বাচনে আপের প্রচারে খরচ করা হয়েছে। কেজরীওয়াল সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, ‘রাজনৈতিক স্বার্থ’ নিয়ে বিজেপি এ সব করছে।
বাঘের চোখে জল! স্ত্রী-কন্যাকে আল্লাহ্‌র কাছে প্রার্থনার আর্জি জানিয়ে কেঁদে ফেললেন শাহজাহান

বাঘের চোখে জল! স্ত্রী-কন্যাকে আল্লাহ্‌র কাছে প্রার্থনার আর্জি জানিয়ে কেঁদে ফেললেন শাহজাহান

অবশেষে বাঘের চোখে জল! হ্যাঁ, তিনি আসলে বাঘমানুষ। সন্দেশখালির বেতাজ বাদশা। যাকে ধরতে গিয়ে আক্রান্ত হতে হয় ইডিকে। সকলকে চমকে দিয়ে নিঃশব্দে গা-ঢাকা দিয়ে থাকতে পারেন মাসের পর মাস। সেই শাহজাহান শেখ এবার প্রিজন ভ্যানে বসে স্ত্রী তসলিমা বিবির হাত ধরে কাঁদলেন!

Lifestyle and More...