নজরবন্দি ব্যুরোঃ আমি স্থানীয় ছেলে, এলাকায় থাকব আমাকেই ভোটে জেতান। নন্দীগ্রাম বাসীর কাছে ভোট প্রার্থনা করলেন ভূমিপুত্র শুভেন্দু অধিকারী। আজ নন্দীগ্রামে ঠাসা কর্মসূচি রয়েছে বিজেপি প্রার্থীর। পরপর পাঁচটি পথসভা রয়েছে তাঁর। বয়াল ১ ও বয়াল ২ নম্বর অঞ্চল, ভেটুরিয়া, জয়কালী ও ঘোলপুকুরে নির্বাচনী প্রচার করবেন বিজেপি প্রার্থী। এই প্রচার কর্মসূচীর সময় খবর আসে নন্দীগ্রামবাসীর দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মহিলাদের উচ্ছ্বাস চোখ এড়ায়নি অতি বড় বিজেপি সমর্থকেরও। তারপরেই হাফ লাখ ভোটে হারানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া শুভেন্দু অধিকারী ভোট প্রার্থনা করলেন এলাকার ছেলে হিসেবে।
আরও পড়ুনঃ নরকে পরিণত হয়েছে দিলীপের খাসতালুক, স্বর্গ বানাবেন হিরণ!
এদিন নন্দীগ্রামে প্রভারে বেরিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘আমি স্থানীয় ছেলে এখানেই থাকব। বাকি যাঁরা উড়ে এসেছেন, উড়ে চলে যাবেন। নাম না করে মমতাকে কটাক্ষ শুভেন্দুর। তিরিশে তিরিশ পাবে বিজেপি।’ উল্লেখ্য যেদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন নন্দীগ্রামে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত সেদিন শুভেন্দু ছিলেন দক্ষিণ কলকাতায় বিজেপির একটি কর্মসূচীতে। তিনি বলেছিলেন, ” আপনি সভা থেকে বলেছেন নন্দীগ্রামে দাঁড়াবেন। এটা আপনার পার্টিতেই হতে পারে। আপনি আর আপনার ভাইপো কোনও কোম্পানির মিটিংয়ে দাঁড়িয়ে এই ঘোষণা করতে পারেন। কিন্তু ভারতীয় জনতা পার্টি সেটা পারে না। কারণ ভারতীয় জনতা পার্টি একটা শৃঙ্খলাপরায়ণ পার্টি।” এর পরেই শুভেন্দু ঘোষণা করেন নন্দীগ্রামে তিনি দাঁড়ান বা বিজেপির যেকোন প্রার্থী তাঁকে হাফ লাখ ভোটে না জেতাতে পারলে রাজনীতি ছেড়ে দেবেন।
অপরদিকে সকাল থেকে প্রচারে বেরিয়েছেন মমতা। নন্দীগ্রামের এলাকা চষে ফেলছেন তিনি। হটসিট নন্দীগ্রাম। মুখোমুখি ভূমিপুত্র বনাম বাংলার মেয়ে। শুভেন্দু জানিয়ে দিয়েছেন তিনি নিশ্চিত জয়ের ব্যাপারে। হাফ লাখ ভোটে হারাবেন প্রাক্তন নেত্রীকে। এদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিন্তিত মার্জিন নিয়ে। তৃণমূলের বিশ্বাস অন্তত ১ লক্ষ ভোটে জয়ী হবেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এই অবস্থায়, রাজ্যে ফের ক্ষমতায় এলে নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর (সিএমও) করবেন বলে জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি তিনি নন্দীগ্রামে ‘আন্দোলনের ভূমিকন্যার বাড়ি’ও বানাবেন বলে ঘোষণা করেছেন রবিবার। প্রসঙ্গত, নন্দীগ্রামের তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন, গত ১০ মার্চ সন্ধ্যায় আহত হন মমতা। চোট লাগে পায়ে। প্লাস্টার পায়ে, হুইল চেয়ারে বসেই একের পর এক জনসভা করে চলেছেন তিনি। এদিকে চোট পাওয়ার ১৮ দিন পরে রবিবার ফের নন্দীগ্রাম এসেছেন মমতা।
এদিকে সকাল থেকেই নন্দীগ্রামের একাধিক মন্দিরে গিয়ে জনসংযোগ করেছেন বিজেপি প্রার্থী। সেখানেও তিনি কটাক্ষ করেছেন মুখ্যমন্ত্রীকে। তিনি বলেন ভোট বলেই এখন ভগবানের কথা মনে পড়েছে মাননীয়ার। একদিকে মমতা যখন বলছেন ভোটের আগের তাঁর পা ভাঙিয়েছেন শুভেন্দু, শুভেন্দু পাল্টা বলছেন, “২৭সে এপ্রিলের পর পায়ের ব্যান্ডেজ খুলে নেবেন তিনি, এসব ভাঁওতা।” একাধিক সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার দাবি করছেন তাঁকে নন্দীগ্রাম ঢুকতে দেওয়া হতনা, সঙ্গে তিনি আক্ষেপ করছেন, শুভেন্দু কে তিনি ভালোবাসার নন্দীগ্রাম দিয়েছিলেন, ক্ষমতা দিয়েছিলেন, সেই নন্দীগ্রামের রাস্তার বেহাল অবস্থা দেখে ক্ষুব্ধ তিনি, প্রশ্ন করেছেন এতদিন ধরে নন্দীগ্রামের নাম ভাঙিয়ে খাওয়ার পর কেনো এখনো একটা রাস্তা ঠিক করেনি বিধায়ক?
অন্যদিকে শুভেন্দু বলছেন এতদিন এখানের মানুষের বিয়ে থেকে রাস্তা , সবকিছু তিনি দেখেছেন আগামী দিনেও তিনিই দেখবেন, তিনি এখানে ছিলেন, এখানেই থাকবেন, তার মতে, “আমি লোকটা এক আছি, শুধু প্ল্যাটফর্মটা বদলেছি।” আগামী ৫ বছর মোদীজির ইঙ্গিতে চলে নন্দীগ্রামকে আরো উন্নত বানাবেন তিনি।মনে করিয়ে দিয়েছেন শীত গ্রীষ্ম বর্ষায় তিনিই আছেন মানুষের পাশে।