নজরবন্দি ব্যুরোঃ মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা ১ নম্বর ব্লকের সাহারা গ্রাম পঞ্চায়েতের খাদিকুল গ্রাম। অবৈধ বাজি কারখানায় এই ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবী (Egra Update)। বিস্ফোরণের জেরে রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে একাধিক মৃতদেহ। দেহগুলি আগুনে সম্পূর্ণ ঝলসে গিয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবী। প্রাথমিক ভাবে এই ঘটনায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে অসমর্থিত সূত্রে দাবী, সেই সঙ্গে আরও প্রায় ৪ জনকে গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ তৃণমূল নেতার বাড়িতে বিস্ফোরণে মৃত ২১, পুলিশ কে দৌড় করিয়ে পেটাল স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এদিন বেলার দিকে আচমকাই বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে খাদিকুল গ্রামের ভানু বাগের বাড়ি। বিস্ফোরণের তীব্রতায় প্রায় ১ কিমি এলাকা কেঁপে উঠেছে বলে এলাকাবাসীরা দাবী জানিয়েছেন। এর জেরে গোটা বাড়িটিই ধুলিস্যাৎ হয়ে গিয়েছে। ভানু স্থানীয় তৃণমূল নেতা বলেই এলাকাবাসীর দাবী। এই ঘটনার পরেই স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে ছুটে এলে দেখা যায় ঘটনাস্থল থেকে অনেকটা দূরে রাস্তার ওপর একের পর এক ঝলসে যাওয়া দেহ পড়ে রয়েছে।

পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অমরনাথ কে সংবাদমাধ্যমে জানান, ‘‘ওড়িশা সীমানা থেকে কিছুটা দূরে একটা বাড়িতে বিস্ফোরণ হয়েছে। সেখানে বাজি তৈরি হচ্ছিল। বিস্ফোরণের জেরে এখনও পর্যন্ত তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর জখম হয়েছেন চার জন। তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। উদ্ধারকাজ এখনও চলছে।’’
বিস্ফোরণে মৃতদের পরিবারকে আড়াই লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ মমতার, NIA তদন্তের দাবি সুকান্তর
এগরার বিধায়ক তরুণ মাইতি বলেন, “আমি ঘটনাস্থলে যাচ্ছি. বাজি কারখানা ছিল বলেই খবর পেয়েছি। পুলিশ আগেই তল্লাশি করে বন্ধ করেছিল। তারপরও লুকিয়ে চলছিল। কতজন মারা গিয়েছেন এখন বলতে পারব না। খুবই খারাপ লাগছে। প্রশাসনকে বলব কড়া হাতে দমন করতে। আমি বিধায়ক হওয়ার পর এই প্রথম এই ঘটনা। আমি আগেই নির্দেশ দিয়েছিলাম। পুলিশও টহলদারি করেছে। কিন্তু গোপনে হয়ত চলছিল।”
তবে পূর্ব মেদিনীপুরে এটাই প্রথম ঘটনা নয়। গত বছর একই ভাবে ভগবানপুর-২ ব্লকের ভূপতিনগর থানার অর্জুননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের নাড়য়াবিলা গ্রামেও বিস্ফোরণ ঘটেছিল। ওই ঘটনায় মৃত্যু হয় এক তৃণমূল নেতা-সহ তিন জনের। তার আগে খেজুরির পশ্চিম ভাঙনমারি গ্রামে এক তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণ হয়। সেখানেও বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়। সেই ঘটনায় এনআইএ তদন্তে নেমে তৃণমূল নেতা সহ একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে।
বিস্ফোরণে মৃতদের পরিবারকে আড়াই লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ মমতার, NIA তদন্তের দাবি সুকান্তর
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী’র দাবী, “ভানু বাগ এলাকার নামকরা তৃণমূলের নেতা। কিভাবে বাড়িতে এমন বাজি কারখানা চলছিল। পুলিশের নাকের ডগায় এভাবে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা জুড়ে বোমা বন্দুকের কারখানা তৈরি হয়েছে। এই জেলায় একের পর এক খুন, বোমা বিস্ফোরণে মানুষ আতংকিত। এই ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত”। অন্যদিকে বিজেপির তরফে এই ঘটনাতে এনআইএ তদন্তেরও দাবী জানানো হয়েছে। এনআইএ চেয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দিচ্ছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।