নজরবন্দি ব্যুরোঃ দলের রং সরিয়ে মুকুল-জায়াকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে হাজির বহু মানুষ। কৃষ্ণা রায় নেই একথা মেনে নিতে পারছেন না অনেকেই। তাঁরা সকলেই এই মুহুর্তে হয়তো একই রাজনৈতিক দলের সহকর্মী নন, তবে কখনো ছিলেন। কেউ কেউ দুই দলেই কোন না কোন সময়ে সহচার্য্য পেয়েছেন রায় সাহেবের। কাছ থেকে দেখে বুঝেছেন কতটা অমায়িক মুকুল জায়া । আর কেউ কেউ তো ঘরের পাশে দেখেছেন তাঁকে, দিদি, বৌদি বা কাকিমা হিসেবে।
আরও পড়ুনঃ জ্বালানির দাম সেঞ্চুরি পার, প্রতিবাদে সাইকেলে বিধানসভা আসছেন বেচারাম
আর তাঁর চলে যাওয়াটা মানতে পারছেন না অনেকেই। গতকাল বহু দিনের সঙ্গী মুকুলের পত্নী বিয়োগের খবর পেয়ে তাঁর সল্টলেকের বাড়িতে ছুটে গিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গিয়ে শোক প্রকাশের পাশাপাশি পুরানো স্ম্রিতি তুলে এনে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, আমরা ভেবেছিলেম ও সুস্থ হয়ে যাবে…
তবে সুস্থ হয়ে ওঠেননি কৃষ্ণা রায়। চেন্নাইয়ের হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। আজ দেহ আনা হয়েছে কলকাতায়। তকাল চেন্নাই থেকে কলকাতায় আসার কোনও ফ্লাইট না থাকায় আজ সকাল ৭.১৭ মিনিটে কফিনবন্দি দেহ পৌঁছায় কৃষ্ণা রায়ের। কাঁচরাপাড়ার বাড়িতে গিয়ে হবে সব কাজ।
মুকুল-জায়াকে শেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছে গোটা কাঁচরাপাড়া।
তাঁরা মানতে পারছেন না বৌদির চলে যাওয়া, কেউ বা হারালেন সমসবয়সী আটপৌরে ভদ্রমহিলাকে, যাঁর হাবেভাবে প্রকাশ পায়নি গরিমা, বহু মানুষ আজ বলছেন নেতা পিতা পুত্রের সঙ্গে একাধিক বার সংযোগের কারণ ছিলেন তিনিই। ‘বৌদি নেই…’, দলের রং সরিয়ে মুকুল-জায়াকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে হাজির রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় সুনীল সিং’রা।
উভয়ের আগমনে রাজনৈতিক চর্চা যে শুরু হয়নি তা ভাবা ভুল। তবে এই মুহুর্তে সেসব পাত্তা দিতে বা উত্তর দিতে নারাজ কেউ। সহচার্য্যে আসা ‘বৌদি নেই…’, অমায়িক ব্যবহার, আদ্যোপান্ত ভালো মানুষের চলে যাওয়ায় মুকুল শুভ্রাংশুর পাশে থাকতে, কৃষ্ণা দেবীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ছুটে এসেছেন তাঁরা। যেমন ভিড় জমিয়েছেন আরও বহু সাধারণ মানুষ, এটুকুই।
প্রায় একই সময়ে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন মকুল-কৃষ্ণা। মুকুল রায় ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠলেও শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে মুকুল জায়ার। ফুসফুস প্রতিস্থাপন করার জন্য কৃষ্ণা রায়কে নিয়ে যাওয়া হয় চেন্নাইয়ে। বেশ কয়েকদিন চিকিৎসা করা হলেও, ফুসফুস প্রতিস্থাপন হয়ে ওঠেনি এখনো। তার মধ্যেই গতকাল সকালে ভোর পৌনে পাঁচটা নাগাদ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চেন্নাইয়ের ওই হাসপাতালে প্রাণ ত্যাগ করেন তিনি।