নজরবন্দি ব্যুরোঃ একতরফা তৃণমূল বিরোধীতা ভুল হয়েছে, রাজ্য কমিটির বৈঠকে মানল সিপিআইএম। স্বাধীনতার পর এই প্রথম, ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে ‘শূণ্য’ বাম। এমন ভাবে জনগন বাম নেতৃত্বাধীন সংযুক্ত মোর্চাকে প্রত্যাখ্যান করবে ভাবেননি তাবড় বাম নেতৃত্ব। শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে শুরু করে অধুনা ডিজিটাল কমরেডরা ভেবেছিলেন ক্ষমতায় আসা সময়ের অপেক্ষা। বামেদের ‘অত্যাধুনিক’ প্রজন্মের ‘টুম্পা সোনা’ ব্রিগেডে গিয়ে চেন ফ্ল্যাগে মাঠ সাজিয়েছে ঠিকই কিন্তু বাড়ি ফিরে ভোট দিয়েছে হয় তৃণমূল নয় বিজেপি-কে!
আরও পড়ুনঃ শুকনো কাশি ভোগাচ্ছে, আজই বুকে এক্স-রে হবে বুদ্ধবাবুর।
যাই হোক প্রাসঙ্গিক ভাবেই ভোট বিপর্যয়ের কারন খুঁজতে বসেছিল সিপিআইএম। সেই ভার্চুয়াল সভায় যা হল তা বর্ণনা করা কিঞ্চিত কঠিন। কারন এত বিপর্যয়ের পরেও অনেক নেতার বক্তব্য – “মানুষ ভুল করেছে, আমরা বোঝাতে পারিনি!” যদিও আলিমুদ্দিনের ভোট ম্যানেজারদের কার্যত তুলোধনা করেছে জেলা নেতৃত্ব। বেশিরভাগ নেতার দাবি ‘একলা চলো’। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে জোট বিষয় আলোচনার আগেই সিদ্ধান্ত হয়ে যায় একপ্রকার। সূর্য-সেলিম-বিমান জুটি যে আইএসএফের সাথে জোট ভাঙবেনা আগ বাড়িয়ে তা নিশ্চিত করে দেওয়া হয় জেলার নেতাদের কাছে।
একতরফা তৃণমূল বিরোধীতা ভুল হয়েছে, মানলেন সূর্য বাবুরা। শনিবার সিপিআইএম রাজ্য কমিটির সভায় কমবেশি মেনে নেওয়া হয়েছে তৃণমূলের উগ্র বিরোধীতা মানুষ ভালভাবে নেননি। জেলা নেতৃত্ব আব্বাসের ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের সাথে জোট করা নিয়েও কাঠ গড়ায় তোলেন শীর্ষ নেতৃত্বকে। জোট গঠনের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তাই ব্যার্থতার দায়ভার তাঁদের বলে মত দেন বেশিরভাগ জেলার নেতারা। প্রশ্ন ওঠে পীরজাদাকে বেশি প্রাসঙ্গিকতা দিতে গিয়ে কেন অন্যদের অপমান করা হল সে প্রসঙ্গ নিয়েও। যদিও তা নিয়ে সেভাবে মুখ খোলেনি শীর্ষ নেতৃত্ব।
শনিবারের বৈঠকে কর্মীদের নতুন কোন পথের দিশা দেখাতে পারেনি রাজ্য নেতৃত্ব। তবে সৃজন, মীনাক্ষী, ঐশী, প্রতিকুর বা শতরূপের মত নতুন প্রজন্মকে গুরুত্ব দেওয়া হবে ভবিষ্যতে তাঁর ইঙ্গিত মিলেছে। আপাতত সিদ্ধান্ত হয়েছে বিরোধী থেকে শুরু করে বুদ্ধিজীবী বা সাধারণ ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে জানতে চাওয়া হবে কেন তাঁরা সিপিআইএম প্রার্থীদের ভোট দিলেন না। সিপিআইএম কি করলে আবার ফিরে আসবে জনসমর্থন…!
বৈঠকের পর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রাজ্য কমিটির নেতা নজরবন্দিকে জানান, “বলে কোন লাভ নেই। মুখ খুললেই তো সাসপেন্ড করে দেবে। ক্ষমতা হারানোর ১০ বছর পরেও দাম্ভিকতা কেন কমেনি, বা সেটা কেন তথাকথিত কিছু হেভিওয়েট নেতা ঘেঁষা আধুনিক প্রজন্মের ছেলে মেয়েদের মধ্যে ছড়াচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন করতেই দিলনা।” দলীয় মিটিং-এ মুখ খুললে সাসপেন্ড করে দেবে? উত্তরে আর কিছু বলতে চাইলেন না নেতা।