অর্ক সানা, সম্পাদক(নজরবন্দি): চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনে ভাঙল বিজেপি বাড়ল বাম! ব্যাপক ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। কার্যত সবুজ ঝড়ে উড়ে গেছে বিরোধীদের যাবতীয় প্রতিরোধ। কিন্তু লাভবান হয়েছে বামেরা। আরও সোজাসুজি বললে বলতে হয় লাভবান হয়েছে সিপিআইএম। হাতমুক্ত, আব্বাস মুক্ত সিপিআইএম ফলাফল? মাত্র কয়েকমাস আগে, গত বিধানসভা ভোটে ‘শূন্য হাতে’ ফিরতে হয়েছিল বামফ্রন্টকে। একটি আসনেও জয় মেলেনি। প্রায় সব আসনেই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছিল।
আরও পড়ুনঃ নজরবন্দির সম্পাদকীয় গুলিতে চোখ রাখতে ক্লিক করুন এখানে।
পরম্পরা অব্যাহত ছিল গতমাসে ঘটা ভবানীপুর এবং দুই কেন্দ্রের উপনির্বাচনেও। কার্যত নোটার সাথে লড়াই চপ্লছিল লালঝাণ্ডার। তবে ৬ মাসের ব্যবধানে চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনে সিপিআইএম শরিকদের পরিস্থিতির তেমন কোনো বদল না ব্যাপক ভোট বাড়ল সিপিআইএমের। চারটি আসনের সার্বিক ফলাফলের দিকে তাকালেই ব্যাপারটা বোঝা যাবে। ৪ কেন্দ্রের উপনির্বাচনে তৃণমূল, বিজেপি এবং বামফ্রন্টের প্রাপ্ত ভোটের হার যথাক্রমে ৭৪.৯৯, ১৪.৫০ এবং ৮.৪৯ শতাংশ। যা গত বিধানসভা নির্বাচনে ছিল ৪৭.৯৪, ৩৮.১০ এবং ৪.৭০ শতাংশ।
অর্থাৎ তৃণমূলের ভোট বেড়েছে প্রায় ২৭ শতাংশ, বামেদের ভোট বেড়েছে প্রায় ৪ শতাংশ। অন্যদিকে বিজেপির ভোট কমেছে প্রায় ২৪ শতাংশ। কিছুদি আগেই ঘটে যাওয়া বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস এবং আইএসএফ-কে সঙ্গে নিয়ে সংযুক্ত মোর্চা গড়েছিল বামফ্রন্ট। সে বার দিনহাটার ফরোয়ার্ড ব্লক প্রার্থী, খড়দহের সিপিএম প্রার্থী এবং গোসাবার আরএসপি প্রার্থী এবং শান্তিপুরে জোটের কংগ্রেস প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোটের হার ছিল যথাক্রমে ২.৪৯, ১৪.৭০, ২.৪৯ এবং ৪.৪৮ শতাংশ। এ বার কোন জোট না করে একতরফা প্রার্থী ঘোষণা করে বামফ্রন্ট। বলা বাহুল্য প্রায় প্রত্যেকটি কেন্দ্রেই ভোট বেড়েছে বামেদের। সব থেকে ভাল ফল করেছে সিপিআইএম।

সিপিআইএম কে সব থেকে শান্তি দিয়েছে শান্তিপুর। গতবার সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী হিসেবে এই কেন্দ্র থেকে ভোটে লড়েছিলেন টিভি ডিবেটের পরিচিত মুখ, কংগ্রেসের ঋজু ঘোষাল। বাম আইএসএফ সমর্থনে দাঁড়িয়ে তিনি পেয়েছিলেন, ৯,৮৪৮ টি ভোট। এবার বামেরা সরাসরি প্রার্থী দিয়েছিল। বামফ্রন্টের সৌমেন মাহাতো কোন জোট ছাড়াই পেয়েছেন ৩৯,৯৫৮ টি ভোট। অর্থাৎ কংগ্রেস প্রার্থীর থেকে ৫ মাসের ব্যাবধানে ভোট বেড়েছে প্রায় ৩০ হাজার! এদিকে প্রার্থী দিয়েছিল কংগ্রেসও। সংযুক্ত মোর্চার ব্যানার ছাড়া তিনি পেয়েছেন মাত্র ২ হাজার ৮৭৭ ভোট। শতাংশের হিসেবে মাত্র ১.৪১ শতাংশ।
ভাঙল বিজেপি বাড়ল বাম

যদিও ভোট বাড়লেও দ্বিতীয় হতে পারেনি সিপিআইএম, তবে লক্ষণীয় এটাই বিজেপির ভোট কমে গিয়েছে এক লাফে প্রায় ৪৫ হাজার। আর সহজ পাটিগণিতের হিসেব বলছে এই ভোটের সিংহ ভাগই এসেছে সিপিআইএমের ঝুলিতে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল দেখলেই বোঝাযায় সিপিআইএম বা বামেদের ২০১৬ সালে প্রাপ্ত ভোটের প্রায় ৮০ শতাংশ চলে গিয়েছিল বিজেপিতে। সেই ধারা অব্যাহত ছিল ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনেও। উল্লেখযোগ্য বিষয় হয় দুবারই (‘১৬, ‘২১) কংগ্রেসের সাথে জোট ছিল বামফ্রন্টের। ২০১১তে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এই প্রথম একা লড়ল বামফ্রন্ট। বাকিটা আলিমুদ্দিনের ভোট কুশলীরা বুঝবেন…