নজরবন্দি ব্যুরোঃ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মুর্শিদাবাদের নওদার শিবনগর এলাকায় খুন হন নদিয়ার নারায়ণপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রিনা বিশ্বাসের স্বামী তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি মতিরুল। করিমপুর-২ ব্লকের দুষ্কৃতী-হামলার পর রাস্তাতেই গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়েছিলেন মতিরুল। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হলে সেখানেই মৃত্যু হয় নদিয়ার থানারপাড়া থানার সাদিপুরের বাসিন্দা মতিরুলের। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে থেকেই এইভাবে সন্ত্রাসের আবহ তৈরি হচ্ছে বাংলায়। কখনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তো কখনও তৃণমূল বিজেপি সংঘর্ষ এই নিয়ে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। এবার এ প্রসঙ্গে বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বললেন, “রোজই খুন হচ্ছে, রোজই বোম ফাটছে, রোজই গুলি চলছে। দুষ্কৃতীদের আড্ডা হয়ে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ।”
আরও পড়ুনঃ অনুব্রতর দিল্লি যাত্রার ভবিষ্যৎ কী? আজ নজর দিল্লি হাইকোর্টে
দিলীপ ঘোষের মতে বিজেপি কোন হাতাহাতিতেও যায়না। এখানে সব তৃণমূলরাই এক একজন দুর্নীতি গ্রস্থ নেতা। তারা এক অপরকে নিজেদের স্বার্থে মারে এবং মরে। এ প্রসঙ্গে তাঁর সংযোজন, “এখানকার যত দুষ্কৃতী, তারা টিএমসির দলের নেতা, আর অন্যান্য রাজ্যের যত দুষ্কৃতী আছে, তারাও পশ্চিমবঙ্গে চলে এসেছে, কেননা এখানে পুলিশ কারও গায়ে হাত দেয় না। তাই প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। আমার মনে হয় সরকারের ও ক্ষমতা নেই। তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়োজন রয়েছে”। বিরোধী দলের প্রতিনিধি হয়েও এদিন কোন হিংসার কথা বলেননি দিলীপ ঘোষ।

প্রসঙ্গত, মাত্র আট বছরের ছেলেকে ও আরও ছোট্ট মেয়েকে রেখেই মৃত্যু হল তৃণমূল নেতার। আচমকাই সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ তিন-তিনটে বোমা বর্ষণ হয়। পালানোরও চেষ্টা করেছিলেন মনিরুল। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে পর পর তিনটি গুলিতেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন নদিয়ার তৃণমূল নেতা মতিরুল বিশ্বাস (৪৫)। ছেলের সঙ্গে হোস্টেলে সাক্ষাৎ সেরে মেয়ের জন্য পুতুল আর স্ত্রীর জন্য কাঁচের বাটি কিনে বাড়ি ফিরছিলেন মনিরুল। কিন্তু ঘরে ফিরল তাঁর মৃতদেহ।
এখানকার যত দুষ্কৃতী, তারা টিএমসির দলের নেতা’, মতিরুল খুনের দায় তৃণমূলকেই দুষলেন দিলীপ
তৃণমূল নেতা খুনের খবরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে নওদা ও সাদিপুর দুই এলাকা। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছেন নদিয়া এবং মুর্শিদাবাদের উচ্চ পদস্থ পুলিশকর্তারা। কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত সুপার কৃশানু রায় বলেন, ‘‘তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে একটি সূত্র ধরে তদন্ত চলছে।’’ মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার সুরিন্দর সিংহও বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে খুন বলে মনে হচ্ছে। তিনটে সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে আততায়ীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা হচ্ছে”। তবে মনিরুল তৃণমূলের যথেষ্ট প্রভাবশালী নেতা ছিলেন ঐ এলাকায়। ছিল নিজস্ব ইটভাটা সহ আরও একাধিক সম্পত্তি। সম্পত্তি নাকি ভোট রাজনীতি কীসের বলি মনিরূল তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।