নজরবন্দি ব্যুরো: মঙ্গলবার দুপুর। শুরু হয় ধ্বংসের ছবি দিয়ে। পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় ঘটে ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে রাস্তায়-রাস্তায় কোথায় পড়ে ছিল পা,কোথাও পড়েছিল কারোর হাত। আর এই ঘটনায় অভিযুক্ত ভানু বাগ পলাতাক। বিজেপির দাবি এই কৃষ্ণপদ বাগ ওরফে ভানু বাগ তৃণমূল করেন।
আরও পড়ুন: দক্ষিণে শিলাবৃষ্টির পূর্বাভাস! সঙ্গে জারি তাপপ্রবাহের সতর্কতাও
স্থানীয়দের কাছে আতঙ্কের আরেক নাম কৃষ্ণপদ। কিন্তু কীসের জন্য এত ক্ষমতা কৃষ্ণের? শুধু কি বাড়তি লাভের আশায় বিপদকে পরোয়া না করেই চালিয়েছেন ব্যবসা? কে এই কৃষ্ণপদ? বাম জমানায় সিপিএম নেতা ছিলেন কৃষ্ণপদ বাগ। রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসতেই জোড়াফুল পতাকা ধরে। ২০১১সালের পর থেকে এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা নামে পরিচিত।
২০১৩ – ২০১৮ সাল পর্যন্ত পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন এই কৃষ্ণপদ। স্থানীয় সূত্রে খবর, ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাজি তৈরি করেন ভানু। তাঁর তৈরি বাজির চাহিদাও ছিল বিপুল। ভানুর সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল দূরদূরান্তে। ক্রমেই ভানু হয়ে ওঠেন এলাকার সম্ভ্রান্ত ব্যবসায়ীদের অন্যতম। জনশ্রুতি, রাজনীতির ছত্রছায়ায় থাকার সুযোগে পুনরায় বাড়ি ফিরে এসে নতুন বাজি কারখানা গড়ে তোলেন তিনি।
কারখানায় যাওয়ার জন্য তৈরি হয় প্রায় দেড়শো মিটার পাকা রাস্তা। ২৫ থেকে ৩০ জন কর্মী নিয়ে নতুন করে শুরু হয় কাজ। বাজি আর মশলা রাখতে কারখানার পাশেই তৈরি হয় গোপন কুঠুরি। এগরার তৃণমূল বিধায়ক তরুণ মাইতি বলেন, “এগরা খুবই শান্তিপূর্ণ জায়গা। সেখানে এমন ঘটনা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। ২০২২-এর ১৯ অক্টোবর ভানু গ্রেফতার হয়েছিলেন। পরে জামিনে ছাড়া পেয়ে আবার বাজি কারখানা তৈরি করেন।

রুজিরুটির কারণে কিছু মানুষ অবৈধ বাজি তৈরিতে ঝুঁকে পড়েন। মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটে। এ জন্য পুলিশকে সক্রিয় পদক্ষেপ করতে বলেছি।” ভানুর সঙ্গে বিধায়কের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে তরুণ বলেন, “ওই ব্যক্তিকে আমি চিনি না। ব্যক্তিগত ভাবে আমার মিটিং, মিছিলে কখনও দেখিনি। তিনি আগে সিপিএম করতেন বলে শুনেছি। তৃণমূল করেছেন বলে কোনও দিন শুনিনি।”
CPM ছেড়ে তৃণমূলে, অগ্নিদগ্ধ অবস্থাতেই ওড়িশায় পালিয়েছে বাজি কারখানার মালিক ভানু
স্থানীয় সূত্রে খবর, বিস্ফোরণের দিন ভানুর শরীরেও আঘাত লাগে। তবে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তিনি এবং তাঁর স্ত্রী চম্পট দেন এলাকা থেকে। গ্রামবাসীদের দাবি, বাইকে করে ওড়িশা পালিয়েছেন তিনি। বাইকের মাঝখানে বসেছিলেন ভানু। পিছনে আর একজন বাতাস করতে-করতে সাহারা গ্রাম থেকে ওড়িশার দিকের রাস্তা থেকে পালিয়ে গিয়েছেন