নজরবন্দি ব্যুরোঃ সলমন খানের(Salman Khan) প্রেমে পাগল, জীবনে নারীই অভাব ছিলোনা কখনই। তাঁদের অনেকের সঙ্গেই বলিউডের ‘ভাইজান’ সম্পর্কে জড়িয়েছেন বলেও শোনা গিয়েছে। তবে তাঁদের মধ্যে কেউ সলমনকে বিয়ে করতে এ দেশে চলে এসেছিলেন কি? নাহ্! এখনও পর্যন্ত তেমনটা শোনা যায়নি। তবে সলমনের প্রাক্তন ‘প্রেমিকা’ সোমি আলি(Somy Ali) নাকি তেমনই করছিলেন। অন্তত সংবাদমাধ্যমের কাছে তেমনই দাবি এককালে বলিউডের এই নায়িকার।
আরও পড়ুনঃ প্রয়াত পণ্ডিত বিরজু মহারাজ, বলিউডে শোকের ছায়া
নব্বইয়ের দশকে হাতেগোনা কয়েকটি ফিল্মে নায়িকার ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল আদতে পাকিস্তানের বাসিন্দা সোমিকে। তবে এককালের এই নায়িকা এখন নিজের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে নারী অধিকারের লড়াইতে শামিল। ধর্ষণ বা গার্হস্থ্য হিংসার মতো অপরাধের বিরুদ্ধে বার বার সরব হয়েছেন তিনি। তখনও স্কুলের গণ্ডি পার হননি। এমনকি সলমনকে সামনাসামনিও দেখেননি। সে সময় থেকেই নাকি তাঁর প্রেমে হাবুডুবু খেয়েছেন সোমি। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘পরিবার আর সকলের মতো আমিও হিন্দি ফিল্মের পোকা ছিলাম। স্কুলে পড়ার সময় সলমন খানের ‘ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া’ দেখেছিলাম।’
নায়ক হিসেবে ‘ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া’-ই সলমনের প্রথম ফিল্ম! এর মধ্যে বলিউডে তিনি নিজেই একটি ব্র্যান্ড— সলমন। তিরিশ বছরে নিজের ফিল্ম ছাড়াও একাধিক সম্পর্কে জড়িয়েছেন সেলিম খানের ছেলে।সোমি আলি ছাড়াও সলমন সঙ্গে নাম জড়িয়েছে সঙ্গীত বিজলানি, ফারিয়া আলম, ঐশ্বর্যা রাই, ক্যাটরিনা কইফ থেকে শুরু করে য়ুলিয়া ভান্টুরের সঙ্গে। তবে সলমনের কোনও ‘প্রেমিকা’ কি তাঁকে বিয়ে করার জন্য নিজের ঘরবাড়ি ছেড়ে এ দেশে এসেছেন?
ওই ঘটনার পর দীর্ঘ সময় কেটে গিয়েছে। এত দিন পর সে ঘটনার কথা খোলসা করেছেন সোমি। সংবাদমাধ্যমের কাছে তাঁর বক্তব্য, ‘ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া’ দেখার পর থেকেই সলমনের উপর গভীর টান জন্মেছিল। এক রাতে তো ওঁকে স্বপ্নেও দেখেছিলাম। তখনই ঠিক করি যে সলমনকে বিয়ে করতে হবে। সে জন্য ভারতে আসেন তিনি।
তখন সোমির বয়স মাত্র ১৬। করাচির বাড়িতে ১২ বয়স পর্যন্ত বসবাস ছিল সোমির। তার পর ফ্লোরিডায় থাকতে শুরু করেন তাঁরা। তবে সলমনের প্রেমে মজে সে বাড়ি ছাড়ার জন্য মায়ের কাছে কাকুতিমিনতি করতে থাকেন সোমি। শেষমেশ ভারতেও চলে আসেন তিনি। যাওয়ার আগে মা’কে বলেছিলেন, ‘‘সলমনকে বিয়ে করতে মুম্বই যাচ্ছি!’’ সলমনকে বিয়ের সিদ্ধান্তের পিছনে যে ওপরওয়ালার হাত রয়েছে, তেমনই মনে করতেন সোমি। তাঁর কথায়, ‘‘সলমনকে স্বপ্নে দেখার পর ওঁকে বিয়ের করব বলে স্থির করেছিলাম। মনে হয়েছিল, এ ঈশ্বরিক আদেশ।’’
এক সময় সব ছেড়ে এ দেশে চলে আসেন সোমি। সলমনের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর নিজের স্বপ্নের কথা তাঁকে জানিয়েও ছিলেন। তিনি বলেন, “আমরা নেপালের পথে রওনা দিয়েছিলাম। সে সময় আমার পাশেই বসেছিলেন সলমন। ওঁর একটা ছবি দেখিয়ে বলেছিলাম, ‘তোমাকে বিয়ে করতেই এত দূর থেকে এ দেশে এসেছি!’ এ কথায় সলমনের মন্তব্য ছিল, ‘আমার গার্লফ্রেন্ড রয়েছে।’ ” বান্ধবী থাকলেও যে তা পরোয়া করেন না, সে কথা সলমনকে জানিয়েছিলেন সোমি।
সোমি জানিয়েছেন, নেপালে তাঁদের ওই কথোপকথনের বছরখানেক পর সলমনের সঙ্গে সম্পর্কের সূত্রপাত। সালটা ১৯৯১। সে সময় সোমির বয়স মাত্র ১৭। নিজের থেকে প্রায় আট বছরের বড় সলমনের সঙ্গে সোমির ‘সম্পর্ক’ টিকেছিল ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত।সলমনই নাকি সোমির প্রতি তাঁর ভালবাসার কথা প্রথমে মুখ ফুটে স্বীকার করেন। সোমি বলেন, ‘আমাকে প্রথমে ‘আই লভ ইউ’ বলেছিল সলমনই। ব্যস্! তাতেই কাজ হয়েছিল। বিশেষ বোঝাতে হয়নি।’
সলমনের প্রেমে পাগল, বাড়ি ছাড়লেন ১৬ বছরের পাক নায়িকা
একটানা আট বছরের ‘সম্পর্ক’ সত্ত্বেও এক সময় বিচ্ছেদ আসে সোমির জীবনে। সোমির কথায়, ‘এখন মনে হয়, সলমনকে বিয়ে করার জন্য ঘরবাড়ি ছেড়ে ভারতে যাওয়াটা কী বোকামিই ছিল! তখন আমি মাত্র ১৬ বছরের…’ সলমনের সঙ্গে ‘সম্পর্ক’ ভেঙে গেলেও তাঁকে নিয়ে কুৎসা করেননি সোমি। বরং সলমন ও তাঁর পরিবারের থেকে অনেক কিছু শিখেছেন বলেই জানিয়েছেন। তাঁর মতে, কোনও সম্পর্কে সুখী না হলে তা ছেড়ে বেরিয়ে আসাই উচিত। আমাদের ক্ষেত্রেও তেমনই হয়েছিল।