যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক ঘটনার তদন্তে আরও এক ধাপ এগোল রাজ্য সরকার। নবান্ন সূত্রে খবর, সল্টলেক স্টেডিয়াম সংক্রান্ত কাণ্ডে গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT)-এর তদন্তের আওতায় এবার মন্ত্রীরাও আসছেন। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন পক্ষের কাছ থেকে পাওয়া শোকজের জবাব খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে।
প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে গঠিত মূল কমিটি—প্রাক্তন বিচারপতি অসীম রায়ের নেতৃত্বাধীন—আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তাদের দ্বিতীয় রিপোর্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে জমা দেবে। এই রিপোর্ট মূলত চারটি পৃথক কমিটির তদন্ত ও পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে তৈরি হবে।

তদন্ত প্রক্রিয়ায় প্রয়োজনে এসআইটি আরও আধিকারিক নিয়োগ করতে পারে বলেও ইঙ্গিত মিলেছে। যদিও তদন্ত শেষ করার জন্য কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা এখনও বেঁধে দেওয়া হয়নি। পাশাপাশি সল্টলেক স্টেডিয়ামে হওয়া ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখছে রাজ্যের পূর্ত দফতর। এসআইটির অনুমতি মিললেই পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু হতে পারে।
নবান্ন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, এ ধরনের বড় অনুষ্ঠানের জন্য রাজ্য সরকারের নির্দিষ্ট স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (SOP) রয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর সেই এসওপি আরও শক্ত ও আধুনিক করার দিকেও নজর দেওয়া হবে।
এর মধ্যেই বুধবার সকালে শীর্ষ পুলিশকর্তা পীযূষ পান্ডের নেতৃত্বে একটি বিশেষ দল সল্টলেক স্টেডিয়াম পরিদর্শন করে। সেই দলে ছিলেন জাভেদ শামিম, সুপ্রতীম সরকার এবং মুরলীধর শর্মা। প্রথমে তাঁরা বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটে যান, তার পর গোটা যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন ঘুরে দেখেন।


এই ঘটনায় রাজ্যের ডিজিপি রাজীব কুমারকে আগেই শোকজ করা হয়েছে। একই দিনে ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ছবি বিতর্কের প্রেক্ষিতে নিজের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেন। মুখ্যমন্ত্রী সেই আবেদন গ্রহণ করেছেন বলে নবান্ন সূত্রে জানা যায়।
শুরু থেকেই এই ঘটনায় অরূপ বিশ্বাস ও সুজিত বসুর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সামাজিক মাধ্যমে তাঁদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী প্রকাশ্যে তাঁদের গ্রেপ্তারের দাবিও তুলেছেন।

সব মিলিয়ে যুবভারতী কাণ্ডে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক স্তরে চাপ ক্রমেই বাড়ছে। এসআইটি ও বিচারপতি রায়ের কমিটির রিপোর্টই ঠিক করবে, এই ঘটনায় দায় কার এবং পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে।








